Ajker Patrika

ঢাবির হল খালি, নীলক্ষেতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৪, ২২: ০৬
ঢাবির হল খালি, নীলক্ষেতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কোথাও শিক্ষার্থীদের দাঁড়াতে দিচ্ছে না পুলিশ। জমায়েত দেখলেই সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করছে। বাধ্য হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হল ছেড়েছেন। তাঁদের অনেকে নীলক্ষেত এলাকায় জড়ো হয়েছেন। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ চলছে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেলে আহত অন্তত ৪০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আজ বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই আহতদের হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে ৭ সাংবাদিক ও এক পুলিশ সদস্য রয়েছেন। ঢামেক জরুরি বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আজকের পত্রিকার ঢামেক প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যানুযায়ী, আহতদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ। তাঁরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশনস সায়েন্স বিভাগের আফসানা জুঁই (২২) ও ইংরেজি বিভাগের আব্দুল হান্নান মাসুদ (২৪)।

এছাড়া আহত হয়েছেন আজকের পত্রিকার সাংবাদিক আহমেদ শাবিব আব্দুল্লাহ, যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার ভাস্কর ভাদুড়ি, সময় টেলিভিশনের ভিডিও জানালিস্ট রতন মজুমদার, কালবেলা পত্রিকার আকরাম হোসেন ও জনি রায়হান, আলোকিত প্রতিদিনের ইমরান হোসেনসহ আরও কয়েকজন।

নীলক্ষেত মোড়ে আহত হয়েছেন আজিমপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) ইব্রাহিম খলিল। লালবাগ থানার এসআই নাজমুজ্জামান জানান, ইডেন কলেজের ১ নম্বর গেট থেকে রিকশায় করে আজিমপুর ফাঁড়িতে যাচ্ছিলেন ইব্রাহিম। পথে নীলক্ষেত কোয়ার্টারের গেটে আন্দোলনকারীরা তাঁকে ধাওয়া দেয়। ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে তাঁর মাথায় আঘাত লাগে।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ঢাবির ভিসি চত্বর, টিএসসি, শাহবাগ, নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আহত অন্তত ৪০ জন এসেছেন চিকিৎসা নিতে। আহতদের অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। বেশ কয়েকজন এখনও চিকিৎসাধীন।

বিকেল ৪টার পর ঢাবি ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের বাধায় দুপুরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে গায়েবানা জানাজা পড়তে ব্যর্থ হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা পড়েন। জানাজা শেষে ক্যাম্পাসে প্রতীকী কফিন মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের ওই মিছিলে একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা আবার সূর্য সেন হলের সামনে এসে জড়ো হন। সেখানেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মুখে শিক্ষার্থীরা ওই এলাকা ছেড়ে যান।

বিকেলে মল চত্বর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় শিক্ষার্থীদের। এরপর হল থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নীলক্ষেতেও শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করছে পুলিশ। জবাবে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন।

এদিকে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই দিন আগে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছিল, সেই কায়দায় তারা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আবার আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। হলে কোনো শিক্ষার্থী নেই। আমাদের কাছে তথ্য আছে, হলেও পুলিশ আজ আক্রমণ চালাতে পারে।’

আন্দোলনকারীদের মধ্যে কতজন হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহিন বলেন, ‘নির্দিষ্ট সংখ্যা জানি না। আমার চোখের সামনে অজস্র শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমরা বাহিরেও নিরাপদ বোধ করছি না। তাঁরা আমাদের মারার জন্য রেডি আছে। আমরা পুলিশের হাতে ধরা দিতে চাচ্ছি না।’

হল ছাড়লেও আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি জানিয়ে মাহিন বলেন, ‘আমরা ফেরত আসব। আমাদের সমন্বয়কদের অনেকে আহত হয়েছেন। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তাঁরা কোথায় আছেন, আগে খোঁজ নিতে হবে। হলে এখন খুবই কম শিক্ষার্থী আছে। আমাদের সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁরা যেন হল ত্যাগ করে। তবে ঢাকাতে যেন থাকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের চার পাটপণ্যে ভারতের বন্দর নিষেধাজ্ঞা

গোপনে ১৯০ মিলিয়ন ডলারের নজরদারি সরঞ্জাম কিনেছিল আওয়ামী লীগ সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত