Ajker Patrika

মাছের চালানের আড়ালে ইয়াবার কারবার, সাবেক ক্রিকেটার গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২, ১৬: ১৩
মাছের চালানের আড়ালে ইয়াবার কারবার, সাবেক ক্রিকেটার গ্রেপ্তার

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের ব্যবহার করে নৌপথে ইয়াবা এনে ঢাকার ডিলারদের কাছে অভিনব কায়দায় মাছসহ বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে পাঠানো হতো ঢাকায়। এই কার্যক্রমের নেপথ্যে ছিলেন কক্সবাজারের অন্যতম মাদক ডিলার এরশাদুল হক ওরফে রাজু (৩২)। দীর্ঘদিন ধরে মাছের ব্যবসা ও ক্রিকেটার পরিচয়ে ঢাকায় মাদক এনে কারবারিদের কাছে বিক্রি করে আসছিলেন তিনি। 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) হাতে গ্রেপ্তারের পর জানা গেছে, এরশাদুল হক কক্সবাজার জেলা ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক। তিনি স্থানীয়ভাবে রাজু নামে বেশি পরিচিত। 

কক্সবাজার সদরের নুরুল হকের ছেলে এরশাদুলের পৈতৃক সূত্রে মাছের ব্যবসা রয়েছে। তবে এর আড়ালে গত তিন বছর ধরে মিয়ানমারের ডিলারদের কাছ থেকে ইয়াবা এনে কারবার করছেন তিনি। এক মাস আগে এরশাদুলের সম্পর্কে তথ্য পায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। 

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানা অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের ৩৩ হাজার ইয়াবাসহ এরশাদুল হককে গ্রেপ্তার করে ডিএনসি ঢাকা মেট্রো উত্তরের একটি দল। অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসি ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান। 

বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসি ঢাকা মেট্রো (উত্তর) উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান। 

রাশেদুজ্জামান বলেন, প্রায় এক মাস আগে এরশাদুলের ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানতে পারেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। পরে ক্রেতা সেজে ইয়াবা কেনার দেনদরবার করার সময় এই চক্রের সহযোগী সদস্য হুমায়নকে তাঁর স্ত্রীসহ ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুমায়ন ও তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুলের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। 

জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ন কর্মকর্তাদের জানান, উখিয়া ও টেকনাফ এলাকার ইয়াবার মূল গডফাদার এরশাদুল। তিনি ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকায় আসার তথ্য রয়েছে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে এরশাদুলকে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উখিয়ায় তাঁদের একাধিক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। এই প্রজেক্টের আড়ালে তিনি ইয়াবার ব্যবসা করতেন। তাঁদের প্রজেক্টে মাছ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় ম্যাগনেট ব্যবহারে ঢাকায় ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আসতেন। এ কাজে তাঁর একাধিক সহযোগী সদস্য রয়েছে। 

নৌপথে অবৈধভাবে মিয়ানমারে যাতায়াত করা রোহিঙ্গা নাগরিকদের সহায়তায় এরশাদুল ইয়াবার চালান আনতেন টেকনাফে। এরপর তা নির্ভরযোগ্য সোর্স ও বাহকের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠাতেন কখনো বাসে কখনো ট্রাকে। তিনি নিজে কখনো ইয়াবা বহন করতেন না। 

ঢাকা ও মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করতেন। তাঁর মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। জব্দ চালানের ্আগে একাধিকবার ইয়াবার বড় চালান ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করেছেন তিনি। নিজে করতেন লেনদেন। 

পাইকারিতে মিয়ানমার থেকে সরাসরি ইয়াবা সংগ্রহ করতেন এরশাদুল। প্রতি পিস ৮০ টাকায় কিনে ঢাকায় বেচতেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। এরশাদুলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত