Ajker Patrika

ধর্মঘটের কারণে শত শত রোগীর মৃত্যুর দায় আপনাদের, চিকিৎসকদের আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ২০
ধর্মঘটের কারণে শত শত রোগীর মৃত্যুর দায় আপনাদের, চিকিৎসকদের আদালত

চিকিৎসকদের ধর্মঘটসহ নানা ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন ঢাকার আদালত। এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাহসিন হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলার শুনানির সময় আজ সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম রেজাউল করিম চৌধুরী এই প্রতিক্রিয়া জানান।  

এই মামলায় ল্যাবএইডের পাঁচ চিকিৎসকসহ ছয়জনকে জামিন দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন- স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের সার্জন মো. সাইফুল্লাহ, সহকারী সার্জন সিকদার আল আমিন মাকসুদ, ডা. সাব্বির আহমেদ, ডা. মোশারফ হোসেন, ডা. এস এম মাশরাফি ইনসান কনক ও ল্যাবএইডের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার (ধানমন্ডি) মো. শাহজাহান।  

বাদীপক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ সজীব জানান, জামিন শুনানির সময় বিচারক চিকিৎসকদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন, চিকিৎসকদের উদ্দেশে নানা প্রশ্ন করেন। বেশিরভাগ সময়ই তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। 

শুনানির একপর্যায়ে বিচারক বলেন, ‘একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হলে বা কোনো চিকিৎসককে কারাগারে নেওয়া হলে আপনারা আন্দোলন করেন, কারণ কি? ট্রেড ইউনিয়ন যেভাবে আন্দোলন করে, আপনারাও সেভাবে আন্দোলন শুরু করেন; ধর্মঘট করেন।’ 

চিকিৎসকদের নিশ্চুপ দেখে আদালত আবার বলেন, ‘যেখানে অনেক চিকিৎসক থাকেন তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ তো অপরাধ করতে পারে। এ বিষয়ে কী বলেন?’

একজন চিকিৎসক তখন বলে ওঠেন, ‘জি, করতে পারেন।’ আদালত তখন বলেন, ‘তাহলে সেই অপরাধী চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে আপনারা যখন ধর্মঘট করেন, তখন অনেক রোগীও মারা যান। ঠিক কি না?

এর উত্তরে চিকিৎসকদের মধ্য থেকে কেউ বলেন, ‘ঠিক।’ আদালত তখন বলেন, ‘শত শত রোগী মারা যাওয়ার সেই দায়-দায়িত্ব আপনাদের। এ জন্যই তো আপনারা হত্যার দায়ে দায়ী।’

চিকিৎসকেরা একথার জবাবে কোনো কথা বলেননি। 

ধানমন্ডির ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার এ এম শামীমসহ ছয় চিকিৎসক ও ল্যাবএইডের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার (ধানমন্ডি) মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে গত ২৬ জুন হত্যা মামলাটি করেন তাহসিনের বাবা মনির হোসেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ধানমন্ডি থানাকে মামলা করার নির্দেশ দেন। 

ধানমন্ডি থানা মামলা নিবন্ধন করার পর ল্যাবএইডের পাঁচ চিকিৎসকসহ ছয়জন গত ৩ জুলাই হাইকোর্টে আগাম জামিন পান। হাইকোর্ট একই সঙ্গে ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। 

হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ছয়জন আজ সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, মিজানুর রহমান মামুন ও গোলাম কিবরিয়া জোবায়ের। 

শুনানি শেষে আদালত আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। ওই তারিখে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে এ ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে নির্দেশ দেন আদালত। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী মনির হোসেনের ছেলে তাহসিন কিছুদিন থেকে অসুস্থ বোধ করায় গত ২৭ মার্চ তাকে ল্যাবএইডের চিকিৎসক সাইফুল্লাহকে দেখানো হয়। তিনি তাৎক্ষণিক তাঁর ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। চিকিৎসক তাঁকে বলেন, তাঁর ছেলের অবস্ট্রাকটিভ স্মল গাঁট বা নাড়ির প্যাঁচ রয়েছে। যার কারণে তার পেটে ব্যথা ও সে মলত্যাগ করতে পারছে না। দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরে গত ২৮ মার্চ অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাহসিনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মাকসুদ বাদীকে জানান অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। রোগীকে সুস্থ করতে হলে আবার অপারেশন করতে হবে। 

এরপর গত ৬ এপ্রিল দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাইফুল্লাহ। দ্বিতীয়বার অপারেশনের পরও রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা চলার পর গত ২৩ জুন তাহসিনের মৃত্যু হয়। 

বাদী মামলার অভিযোগে আরও বলেন, ছেলের কী রোগ হয়েছে, সেটাই ডাক্তাররা জানাতে পারেননি। অথচ তার দুবার অপারেশন করা হয়েছে। এ সময় ছেলেকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। খরচ হিসেবে বিল দিতে হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ টাকা। প্রথম অপারেশনের পর এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলেন বাদী। কিন্তু ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়পত্রও প্রদান করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

গাজীপুর প্রতিনিধি
পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম মুরাদ।
পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম মুরাদ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন গাজীপুরের পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম মুরাদ। এ মন্তব্যের জন্য তাঁর বিচারের দাবি জানিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে ২০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে দলটি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি একজন এডিসিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখছি, সত্যতা প্রমাণ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যমুনা টেলিভিশনের পেজ থেকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের বক্তব্যের একটি ফটোকার্ড শেয়ার করা হয়। বক্তব্যটি ছিল—‘সনদ স্বাক্ষরের দিনেও জুলাই যোদ্ধাদের আবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে, এটা লজ্জাজনক।’ ওই কার্ডের নিচে ওসি আমিরুল ইসলাম মুরাদ মন্তব্য করেন, ‘আগে গণভোট দরকার যে স্বাধীনতা বিরোধীরা এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না?’

এ মন্তব্যের জেরে পুবাইল থানার ওসির বিচারের দাবিতে পুলিশ কমিশনারের কাছে ২০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর আরও একটি অভিযোগ দেন গাজীপুর নগর জামায়াতের মজলিশে শুরার সদস্য অধ্যাপক মো. আমজাদ হোসেন খান।

এতে তিনি পুবাইল থানার ওসি বিধিবহির্ভূত পন্থায় রাজনৈতিক দলকে হেয় করার জন্য বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম মুরাদ পুবাইল থানায় যোগদানের পর থেকে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন এবং আমাদের রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। আমরা ব্যক্তিগতভাবে তার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে অনেকবার পরামর্শ দিয়েছি—রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করার এবং কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য না দেওয়ার জন্য।

শেয়ার করা ফটোকার্ড। ছবি: সংগৃহীত
শেয়ার করা ফটোকার্ড। ছবি: সংগৃহীত

‘তদুপরি তিনি নির্দিষ্ট একটি দলের কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানে নিজে যোগদান করে ও অপ্রয়োজনে নেতাদের পুলিশ প্রটোকল দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছেন—জামায়াতের লোকেরা স্বাধীনতাবিরোধী এবং তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার আছে কি না, সেটার জন্য গণভোটও হওয়া প্রয়োজন।

‘এ ধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ ও রাজনৈতিক বক্তব্য পুলিশ প্রশাসনের জন্য মারাত্মক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ। আমরা পুবাইলবাসীর পক্ষ থেকে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশা করছি। শুধু বর্তমান স্থান থেকে বদলি নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তার এই বক্তব্য পুবাইলবাসীকে মারাত্মকভাবে ক্ষুব্ধ ও আহত করেছে। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

জানতে চাইলে পুবাইল থানা জামায়াতের আমির আশরাফ আলী কাজল বলেন, ‘একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তিনি এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। এ জন্য আমরা কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুবাইল থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার আইডি থেকে এই মন্তব্য করিনি। এটি তদন্ত চলছে, তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে, আমার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই।’

আর একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে ওসি বলেন, ‘গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন সম্প্রতি কয়েকটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন, আমি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা দিতে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। সেটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ছিল না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইজারার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫

নাটোর প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নাটোর সদরের হালসা বাজারে ইজারার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বিকেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, হালসা বাজারের ইজারার টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে দুই ভাই হালসা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজেদ মণ্ডল ও হালসা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাফর মণ্ডলের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে জাফর, পাপ্পু, পলাশ, মাহি ও বেলজু নামের পাঁচজন আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান জানান, মাজেদ মণ্ডল ও জাফর মণ্ডলের লোকজন বাজারে টাকা তুলতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাঘায় পদ্মার চরে জমি দখল নিয়ে কুষ্টিয়ার ‘কাকন বাহিনীর হামলা’, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ২

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে স্থানীয় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার জন্য কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কথিত ‘কাকন বাহিনী’কে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

গুলিতে নিহত দুজন হলেন আমান মণ্ডল (৩৬) ও নাজমুল মণ্ডল (২৬)। আর আহত হয়েছেন মুনতাজ মণ্ডল (৩২) ও রাবিক হোসেন (১৮)। হতাহত ব্যক্তিরা সবাই বাঘা উপজেলার চরাঞ্চল নীচ খানপুর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সোমবার বেলা ১১টায় কাকন বাহিনীর লোকজন চরের জমিতে কাজ করার সময় নীচ খানপুর গ্রামের বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালান। তাঁদের এলোপাতাড়ি গুলিতে গুরুতর আহত হন এই চারজন।

গুলির তীব্রতার কারণে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে প্রথমে বেশ বেগ পেতে হয়, পরে আরও গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কাকন বাহিনী সরে যায়। তখন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে আমান মণ্ডল মারা যান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাজমুলও মারা যান।

আমান মণ্ডলের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে চিকিৎসক নিহার চন্দ্র মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, মুনতাজের শরীরের বিভিন স্থানে অন্তত শতাধিক, রাকিবের শরীরে প্রায় ৮০, নাজমুলের শরীরে প্রায় ৩৫ এবং আমানের মাথাসহ শরীরের পাঁচ জায়গায় গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। ক্ষতস্থান দেখে ধারণা করা যায়, পিস্তল ও রাবার বুলেটে হতাহত হতে পারেন।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস নাজমুল মণ্ডলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাত ৯টা পর্যন্ত লাশ মেডিকেল কলেজের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে রাখা ছিল। অন্য আহত দুজনের অস্ত্রোপচার চলছে। তাঁদের অবস্থা গুরুতর।

হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের দাবি, চরাঞ্চলে জমির দখল ঘিরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কথিত ‘কাকন বাহিনী’র লোকজন হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নীচ খানপুর গ্রামের বেলাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা লোকজন নিয়ে চর এলাকায় আগাছা পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় কাকন বাহিনীর লোকজন সেই জমি দখল নিতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন।

বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুপ্রভাত মণ্ডল জানান, হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আগামীকাল মঙ্গলবার রামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গৃহকর্মী নির্যাতন: গৃহকর্ত্রীর ৫ বছরের কারাদণ্ড

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০৮
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ১৪ বছরের এক কিশোরীকে নির্যাতনের মামলায় পারভীন চৌধুরী নামের এক গৃহকর্ত্রীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক মো. গোলাম কবীর এ রায় ঘোষণা করেন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাঁকে আরও চার মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।

১৫ বছর আগের ঘটনায় করা এ মামলার রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত পারভীন চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। তাঁকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৪ বছরের কিশোরী শিরিন শেওড়াপাড়ায় পারভীন চৌধুরীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত। কারণে-অকারণে পারভীন চৌধুরী ও তাঁর মেয়ে ইসমত জাহান জনি তাকে মারধর করতেন। গরম পানির ছ্যাঁকা দিতেন। ঘরে আটকে রাখতেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিতেন না। ২০১০ সালের ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর গৃহকর্মীকে মারধর করে তাকে জখম করেন মা ও মেয়ে। পরে ২৩ অক্টোবর পারভীন চৌধুরী তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন। বেলা ৩টার দিকে শেওড়াপাড়ায় শিরিনকে কান্নাকাটি করতে দেখেন তার মায়ের পূর্বপরিচিত প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ। তিনি শিরিনের শরীরে ক্ষত দেখতে পান। এ ঘটনায় ওই দিনই আব্দুর রশিদ মিরপুর মডেল থানায় পারভীন চৌধুরী ও ইসমত জাহান জনিকে আসামি দিয়ে মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে পারভীন চৌধুরীকে অভিযুক্ত করে মিরপুর মডেল থানার এসআই আবু বকর মিয়া অভিযোগপত্র জমা দেন। তবে ইসমত জাহান জনির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে অব্যাহতি দেন।

এরপর ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।

মামলার বিচার চলাকালে ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয়জনের সাক্ষ্য নেন ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে পারভীন চৌধুরী নিজে ও ইসমত জাহান মায়ের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত