Ajker Patrika

শ্রমিক অসন্তোষ: আশুলিয়ায় ৭৯ কারখানা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা) 
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ৩৮
শ্রমিক অসন্তোষ: আশুলিয়ায় ৭৯ কারখানা বন্ধ

আশুলিয়ায় থামানো যাচ্ছে না শ্রমিক অসন্তোষ। আজ সোমবারও অনেক পোশাক কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অন্য সব কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। তবে এ প্রতিবেদন (বিকেল ৪টা) লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। 

তবে গতকাল রোববার বিকেল থেকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকার ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় র‍্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও উপস্থিত ছিল। সেখানে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা র‍্যাবের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতেও ইট-পাটকেল ছোড়ে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, গতকাল কারখানাটির শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার কথা ছিল। ওই দিন বিকেলে বেতন না পেলে কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে সেখানে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে রাতে পরিস্থিতি শান্ত হলেও আজও এর রেশ রয়ে গেছে। এ কারণে সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে আজ বেশ কিছু কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

গতকাল ঘটনার পর থেকে আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। আজ পুরো শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়ে। 

জানা যায়, গতকাল সহিংস ঘটনার পরে রাতেই বিজিএমইতে সভা হয়। ওই সভায় আজ কিছু কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ কিছু কারখানা বন্ধ রাখা হয়।

পুলিশ জানায়, আজ সকালে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানা থেকে বের হয়ে আসেন। এমন পরিস্থিতিতে সেসব কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া কিছু কারখানা নানা কারণে আগে থেকেই বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে আজ ৭৯টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্য অধিকাংশই আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়। সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের বাকি সব কারখানা চালু রয়েছে। 

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে ১ হাজার ২০০টি পোশাক কারখানা রয়েছে। বেশির ভাগ কারখানার পরিবেশই শান্ত রয়েছে। যেসব কারখানার মালিকদের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে, সেসব কারখানায় সমস্যা হচ্ছে। 

খায়রুল মামুন মিন্টু আরও বলেন, ‘মালিকেরা শ্রমিকদের সঙ্গে বসে সমন্বয় করে টিফিন ও হাজিরা বোনাসের টাকা কিছুটা বাড়াতে পারেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের বাকি দাবি তো শ্রম আইন অনুযায়ী। শ্রম আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’ 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি কারখানার মালিক বলেন, ‘শ্রম আইন ও সরকারি সিদ্ধান্ত মেনেই শ্রমিকদের বেতন, ভাতাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। শ্রমিকেরা তা মেনেই কাজ করছিলেন। কিন্তু দেশের চলমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কারখানার শ্রমিকেরা নানা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। দিন দিন তা বাড়ছে।’ 

তিনি বলেন, মূলত সহিংসতা এড়াতে কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, শ্রমিকেরা সহিংস হয়ে উঠলে সহসাই তাঁদের নিবৃত্ত করা যায় না। 

শিল্প পুলিশ–১–এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, আগে থেকে বন্ধ ও আজ ছুটি দিয়েছে—এমন মিলিয়ে বন্ধ কারখানার সংখ্যা ৭৯। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত