Ajker Patrika

রাজধানীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান, আটক অন্তত ৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক ও উত্তরা প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০: ৪৯
রাজধানীর বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান, আটক অন্তত ৩৬

আবাসিক ভবনে যথাযথ অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই অবৈধভাবে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করে আসছে এমন সব এলাকায় এক যোগে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। প্রথম দিনের অভিযানে কমপক্ষে ৩৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপির সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর উত্তরা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, মিরপুর, ধানমন্ডি, খিলগাঁও, রামপুরা, মতিঝিল ও পুরান ঢাকায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। আগামী তিন দিন এই অভিযান চলবে। গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে একসঙ্গে ৪৬ জন মারা যাওয়ার পর পুলিশ এই সাঁড়াশি অভিযান শুরু করল।

আটকদের বেশির ভাগই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার। তাঁদের কাছে রেস্টুরেন্ট পরিচালনার বৈধ সব ডকুমেন্টস চাওয়া হয়েছে। এসব ডকুমেন্টস দেখে যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর উত্তরার উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, বিমানবন্দর, দক্ষিণখান থানা এলাকায় গতকাল রাত ৮টা থেকে এ অভিযান শুরু হয়। অভিযানকালে উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকার একুশে রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখা যায়, একুশে রেস্তোরাঁয় লাইনের গ্যাসে চলে রান্নার কার্যক্রম। তবে তিতাস গ্যাসের কতটি চুলার অনুমোদন আছে, সেটি জানেন না তিনি। ম্যানেজার মহিউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগুন লাগলে যা করণীয় আমরা করব। আমাদের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা অন্য জায়গায় রয়েছে।’

পাশের সী শেল রেস্টুরেন্ট ও রেসিডেন্সের একই ভবনে রেস্টুরেন্ট ও হোটেল। ইতিপূর্বে সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কয়েকজন নিহতও হয়েছিলেন। সেখানকার লিফট নষ্ট থাকায় সিঁড়ি দিয়েই চলাচল করছেন কাস্টমাররা, নেই কোনো ইমারজেন্সি পথ। রেস্টুরেন্টটির ম্যানেজার ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিলিন্ডার গ্যাসে আমাদের কার্যক্রম চলে। আমাদের রেস্টুরেন্ট ও রেসিডেন্সের অনুমতি রয়েছে, তাই আমরা চালাচ্ছি।’

জসিমউদ্দিনের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় টার্কিস কাবাব রেস্টুরেন্ট। সেখানকার ম্যানেজার হারুনুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্না করা হয়। বিল্ডিংয়ে শুরু থেকে রেস্টুরেন্ট ছিল। পরে হাসপাতাল দিয়েছে।’

অভিযানে বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।বিএনএস সেন্টার সংলগ্ন জাফরান রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড কাবাবের প্রবেশ পথেই রাখা গ্যাস সিলিন্ডার। সেখানকার জরুরি পথটিও রেস্টুরেন্টের টেবিল দিয়ে আটকানো। কাবাবের ম্যানেজার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজকে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার ও খাবার টেবিল সরিয়ে ফেলব।’

এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশেষ কোনো অনিয়ম পাই নাই। সামান্য কিছু এলোমেলো ছিল, মালিকেরা বলছে ঠিক করে ফেলবে। সেই সঙ্গে এসব হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গ্যাস লাইনের কাগজপত্র ও ফায়ার সার্ভিসের কাগজপত্র থানায় নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। পরে আমরা যাচাই বাছাই করে দেখব।’

পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, যেসব রেস্টুরেন্ট যথাযথ নিয়মকানুন না মেনে ও আইন ভঙ্গ করে পরিচালিত হচ্ছে সেসব রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানো হচ্ছে। আইন অনুযায়ী এসব রেস্টুরেন্ট মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া নয়া পল্টনের ‘আদি কড়াই গোস্ত’ রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা যায়, রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জানতে চাইলে রেস্টুরেন্টের একজন কর্মী বলেন, পুলিশ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযান চালাচ্ছে বলে মালিকের নির্দেশনায় রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বন্ধ থাকবে।

পুলিশের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম বলেন, ‘ধানমন্ডির একাধিক রেস্টুরেন্টে আমরা অভিযান পরিচালিত করেছি। বেশ কিছু রেস্টুরেন্টে আমরা অনিয়ম পেয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত