Ajker Patrika

প্রীতম দাশের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রীতম দাশের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতার মামলায় কারাগারে থাকা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা প্রীতম দাশের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ‘কথা, কলম ও বিবেককে দমিয়ে রাখতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হয়। যে কথা বলতে চায়, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কোনো বিষয় নয়, আসল বিষয় হলো সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তখন তাঁকে নানা বাহানায় গ্রেপ্তার করা হয়।’ 

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ‘প্রীতম দাশের বন্ধুদের’ আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট লীগের সদস্য ডা. হারুন-উর রশিদ, লেখক ও গবেষক রাখাল রাহা, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার প্রমুখ। 

ডা. হারুন-উর রশিদ বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী সরকারের ন্যূনতম বিরোধিতা করলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, আটক করা হয়; নির্যাতন করা হয়। প্রীতম দাশ মানুষের অধিকারের জন্য কাজ করেছে। চা শ্রমিকদের পাশে থেকে আন্দোলন করেছে। চা শ্রমিকদের পাশে থেকে সরকারের সমালোচনা করাই ছিল তাঁর অপরাধ। দমিয়ে রাখতে না পেরে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ দিয়ে আজ ৯৯ দিন তাঁকে কারাগারে রাখা হয়েছে। এই সমাবেশ থেকে আমরা তাঁর মুক্তি দাবি করছি। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে নিজেদের অধিকার বাস্তবায়ন করা হবে’ 

লেখক ও গবেষক রাখাল রাহা বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমাদের সঙ্গে অন্যান্য প্রাণীর পার্থক্য হলো কথা বলতে পারা। কিন্তু বাংলাদেশে কথা বলাটা অপরাধ। যে কথা বলে তাঁকে কথা বলা থেকে বিরত রাখার সমস্ত আয়োজন করা হয়। প্রীতম দাশকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা করতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ, কিন্তু শ্রীমঙ্গলের সচেতন নাগরিক তা ভেস্তে দিয়েছে।’ 
 
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সময়ে মানুষ কথা বলতে পারে না। বিরোধী দলের প্রোগ্রামে গেলে গুলি করা যায়, হত্যা করা যায়। বর্তমানে এ আওয়ামী সরকারের আমলে মানুষকে পেশির জোরে এবং আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে রাখা হয়েছে। মতপ্রকাশ করলে তাঁকে যেভাবেই হোক নিয়ন্ত্রণের জন্য সমস্ত আয়োজন সরকার করে রেখেছে।’ 

প্রীতম দাশের মুক্তির দাবিতে সমাবেশছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ‘দেশে এক ভয়াবহ শাসন করছে। সমাবেশে আসলে বিএনপি কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে, হামলা-মামলা দেওয়া হচ্ছে। মোবাইল, ফেসবুক চেক করে, মারধর করে বিএনপি কর্মীদের পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে স্বৈরতন্ত্রের পুঁজি করে সরকার দুঃশাসন চালাচ্ছে।’ 

সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর কর্মী মিজানুর রহমান সুমনের কবিতা আবৃত্তি এবং বিবর্তন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংগঠক মফিজুর রহমান লাল্টুর গানের মাধ্যমে এ প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে আরও সংহতি প্রকাশ করেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি ইকবাল কবীর, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাবি সংসদের আহ্বায়ক জাবির আহমেদ জুবেল প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, উর্দুভাষী লেখক সাদাত হোসেন মান্টোর একটি উক্তি গত ৮ জুলাই ফেসবুকে পোস্ট করেন প্রীতম দাশ। পরে প্রীতমের বিরুদ্ধে ‘ইসলাম অবমাননার’ অভিযোগ তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন শ্রীমঙ্গল পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবেদ হোসেন। স্ট্যাটাসে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসনকে আহ্বান জানানো হয়। পরে ৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ কর্মী মাহবুব আলম ভূঁইয়া মামলা করলে ৯ সেপ্টেম্বর প্রীতম দাশকে গ্রেপ্তার করে শ্রীমঙ্গল থানা-পুলিশ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পালানোর গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরলেন আবদুল হামিদ

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

এআই যুগে চাকরি পেতে যে দক্ষতা লাগবেই, জানালেন মাইক্রোসফটের সিইও

ঈদের ছুটির সুযোগে মাদ্রাসার গাছ বেচে দিলেন সুপার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত