Ajker Patrika

‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭: ২৮
Thumbnail image

সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন সঠিকভাবে না করা হলে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও দেশের খাদ্যনিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মো. মিজানুর রহমান। 

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বন্যা–উত্তর কৃষি ব্যবস্থাপনা নিয়ে গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকের আয়োজন করে সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার পলিসি স্টাডিজ (সিএপিএস)। 

সংগঠনটির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বন্যার পরবর্তী চ্যালেঞ্জের বিষয়ে বলেন, বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে আবার নতুন করে কৃষি উৎপাদন করতে কৃষক বীজ ও সার প্রাপ্তি এবং নগদ অর্থের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এখন পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না করা যায়, তাহলে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও দেশের খাদ্যনিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। নিম্নবিত্তরা সব হারিয়ে দরিদ্রদের কাতারে এসে দাঁড়াবে। 

আলোচকেরা বলেন, বন্যায় শত শত মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, মৎস্য খামারসহ অনেক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পোষাতে তালিকা প্রস্তুত করা জরুরি। আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলা করার জন্য বিমাপত্র বা শস্যবিমার প্রচলন করা উচিত। শুধু শস্যই নয়, কৃষির অন্যান্য উপখাত—গবাদিপশু ও মৎস্য খাতকেও কৃষিবিমার আওতায় আনা প্রয়োজন। 

গোলটেবিল বৈঠকে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বলা হয়, বন্যায় ফেনী, নোয়াখালীসহ ১১ জেলার ৭৩টি উপজেলা প্লাবিত হয়। ১০ লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত ৭১ জনের মৃত্যু হয়। ৫০ লাখ ২৪ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৪ লাখ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়। 

ধানের ক্ষতির বিষয়ে বলা হয়, ২ লাখ ৯১ হাজার ৩৩ হেক্টর ধানি জমি আক্রান্ত হয়েছে। ১৯ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমির আমনের বীজতলা পুরোপুরি আক্রান্ত হয়েছে। ২ হাজার ৫১৯ কোটি টাকার ধানের উৎপাদন নষ্ট হয়েছে। 

তাঁরা বলেন, ধানের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শাকসবজির। বিভিন্ন মসলা, ফলবাগান, সবজি, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও টমেটো, পান, আখসহ ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া বন্যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

সেন্টার ফর অ্যাগ্রিকালচার পলিসি স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. শেখ মো. রুহুল আমীন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অর্থনৈতিকভাবে বেকায়দায় ফেলতে ২১ আগস্ট ত্রিপুরার গোমতী নদীর ওপরে নির্মিত ডম্বুর বাঁধ বাংলাদেশকে না জানিয়ে খুলে দেয়। এতে দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অসময়ে অনেক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রবি মৌসুমের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। এর জন্য কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে। মৎস্য ও পশুসম্পদেও মনোযোগ বাড়াতে হবে। বন্যা অনেক উপকারও হয়। বিষাক্ত পদার্থ চলে যায়। আবার মাটি অনেক উর্বর হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত