Ajker Patrika

কম সংক্রমণের জেলায় গণপরিবহন চালুর ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
কম সংক্রমণের জেলায় গণপরিবহন চালুর ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা: টানা লকডাউনে ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর দাবিতে আজ দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান এবং বাস-ট্রাক টার্মিনালগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকার ওএমএসের চাল দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ কম এমন জেলাতে গণপরিবহন চালুর ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিবহন শ্রমিকদের জন্য প্রণোদনা এবং আরও কিছু সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

আজ রোববার মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র অসহায় মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ভোলা, জয়পুরহাট এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত হয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

মহামারিতে বেকার পরিবহন শ্রমিকদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু আমরা আন্তঃজেলা যাতায়াত বন্ধ করেছি তাতে অনেক পরিবহন শ্রমিক তাদের অসুবিধা হচ্ছে। আমরা তাদের জন্য প্রণোদনা এবং তাদের কিছু সহযোগিতার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যেসব এলাকায় এখন করোনা নাই সেই জেলার ভেতরে যোগাযোগটা যেন করতে পারি সেই ব্যবস্থাটা থাকবে। করোনাভাইরাস যেসব জেলায় আছে সেখান থেকে আরেক জেলায় যেন যাতায়াতটা করতে না পারে, এটা যাতে ছড়াতে না পারে সারা বাংলাদেশে এ ব্যাপারে জনগণকেই সচেতন হতে হবে। আপনাদের দেখতে হবে, আপনারা নিজেরাই করবেন। সারা বাংলাদেশের মানুষকে আমি অনুরোধ করবো আপনারা এই ব্যবস্থাটা করবেন।

উল্লেখ্য, দরিদ্রদের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ৩৬ লাখ ৫০ হাজার অসহায় মানুষকে জীবন ও জীবিকার জন্য আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। এজন্য এরই মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নগদ, বিকাশ, রকেট এবং শিওরক্যাশের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এর মাধ্যমে জিটুপি (গভর্নমেন্ট টু পার্সন) ভিত্তিতে ২ হাজার ৫০০ টাকা পাবে প্রত্যেক পরিবার।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষকে একটা অনুরোধ করবো। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। অন্যকেও সুরক্ষিত করতে হবে। আমরা টিকা দিচ্ছি এবং আরো টিকা নিয়ে আসবো। যত টাকা লাগে এ দেশের মানুষকে টিকা পৌঁছে দেব। আপনাদের সকলকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার যে সকল নির্দেশনা আমরা দিচ্ছি সেটা কিন্তু আপনারা দয়া করে একটু মেনে চলবেন।

সরকারপ্রধান বলেন, সরকার এটা করে নাই, ওটা করে নাই, সরকারের সমালোচনা যারা করছেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, নিজে কয়টা লোককে সাহায্য করেছেন? এর একটা হিসাব পত্রিকায় দিয়ে দেন, তাহলে মানুষের আস্থা পাবেন, বিশ্বাস পাবেন। সেটা হচ্ছে বাস্তবতা। যারা বিত্তশালী আছেন তাদেরকে বলবো, জনগণের পাশে দাঁড়ান। জনগণকে সাহায্য দেন, জনগণের জন্য কাজ করেন।

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে গত ৫ এপ্রিল সারাদেশে সব গণপরিবহন বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর জনগণের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপের মুখে পড়ে সরকার গত ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকাসহ ১১টি সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চালু করে। ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস চলেছে ৭ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত।

এরপর থেকে কয়েক ধাপে বেড়েছে লকডাউন। এসময় গণপরিবহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ১৪ এপ্রিল থেকে করোনার বিস্তার রোধে দেশে 'সর্বাত্মক লকডাউন' শুরু হয় যা পরে ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। যদিও শপিংমল ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত