Ajker Patrika

নন্দিতার কর্নিয়ায় পৃথিবী দেখলেন দুজন, দেহ দান করলেন দুই কন্যাও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০: ৫৩
নন্দিতার কর্নিয়ায় পৃথিবী দেখলেন দুজন, দেহ দান করলেন দুই কন্যাও

নন্দিতা বড়ুয়া (৬৯) ঢাকার বাসাবোর বাসিন্দা। তাঁর মরণোত্তর দানের কর্নিয়ায় চোখে আলো ফিরেছে কাউখালী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস (২৩) ও পটুয়াখালীর দলিল লেখক আব্দুল আজিজের (৫০)। 

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) নন্দিতা বড়ুয়ার দেহ গ্রহণকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

উপাচার্য জানান, গত এক মাসে মরণোত্তর চক্ষুদান প্রক্রিয়ায় ১২ জনের চোখে সফলভাবে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কর্নিয়া গ্রহীতার ভালো আছেন। 

বিএসএমএমইউর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নন্দিতা বড়ুয়া ৬৯ বছর বয়সে গত সোমবার মারা যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনির জটিল রোগে ভুগছিলেন। পাশাপাশি এসএলই ও ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত ছিলেন। 

নন্দিতা বড়ুয়া তাঁর জীবদ্দশাতেই মরণোত্তর দেহদানের ব্যাপারে সন্তানদের কাছে ইচ্ছার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর পরিবারের সম্মতিতে বিএসএমএমইউর কর্নিয়া বিশেষজ্ঞরা কর্নিয়া সংগ্রহ করেন। গত মঙ্গলবার একটি করে কর্নিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস ও আব্দুল আজিজের চোখে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। 

নন্দিতা বড়ুয়ার জন্ম ১৯৫৩ সালের ২ জুন চট্টগ্রামের পটিয়ার কোলাগাঁও গ্রামে। মা সন্ধ্যারাণী বড়ুয়া। বাবা রাজকৃষ্ণ বড়ুয়া। ছয় বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে নন্দিতা ছিলেন দ্বিতীয়। বাবা ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি কলকাতা আশুতোষ কলেজে পড়ার সময় কংগ্রেসের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে নন্দিতাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। স্বামী বাবুল প্রসাদ বড়ুয়া ছিলেন বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। 

আজ দেহ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নন্দিতা বড়ুয়ার দুই মেয়ে শাপলা বড়ুয়া ও সেঁজুতি বড়ুয়া মরণোত্তর দেহদানের ইচ্ছা পোষণ করেন। সেখানে নন্দিতা বড়ুয়ার কর্নিয়া গ্রহীতা জান্নাতুল ফেরদৌস ও আব্দুল আজিজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহ আলমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত