Ajker Patrika

ফ্লাইওভারটির নিচের অংশ যেন মাদকের আড্ডাখানা

জহিরুল আলম পিলু, ঢাকা
আপডেট : ১৮ মে ২০২৪, ১০: ৫০
Thumbnail image

রাজধানীর জুরাইন ফ্লাইওভারের নিচে মাঝ বরাবর চলে গেছে রেললাইন। জুরাইন ট্রাফিক পুলিশ বক্স ওই এলাকায়ই। তবে পুলিশের চোখের সামনেই দখল হয়ে গেছে ফ্লাইওভারের উত্তর ও দক্ষিণ পাশের অংশ। হকাররা দখল করেছে দক্ষিণের অংশ। গড়ে উঠেছে ভ্যানের গ্যারেজ। প্রসাবের দুর্গন্ধে টেকা দায় এই জায়গায়। সন্ধ্যা নামলেই চলে মাদক সেবনও। উত্তর অংশে গড়ে উঠেছে লেগুনাস্ট্যান্ড। সেখানেও হকারের দৌরাত্ম্য, দুর্গন্ধ আর মাদকসেবীদের আনাগোনা।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার পরিবহন পোস্তগোলা দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, পদ্মা সেতুর কারণে গাড়ির চাপ বেড়ে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু বা পোস্তগোলা সেতুর পোস্তগোলা অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। পোস্তগোলা থেকে দোলাইরপাড় চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়েছে ফ্লাইওভার। ২০২১ সালের শেষ দিকে নির্মাণকাজ শেষ হয়। এরপরই অনানুষ্ঠানিকভাবে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়ে যায়। যদিও সড়ক ও জনপথ বিভাগকে ফ্লাইওভারটি এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ফ্লাইওভারের নিচে দক্ষিণ পাশে বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে বসে যায় হকাররা। ফল, জুতা, পোশাক, শরবত ও চায়ের দোকান—সবই আছে এখানে। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় গড়ে উঠেছে টং দোকান ও ভ্যানের গ্যারেজ। দেয়ালের দুটি অংশ কে বা কারা ভেঙে ফেলেছে। প্রস্রাবের দুর্গন্ধ আর নোংরা আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

ফ্লাইওভারের নিচে ফলের দোকানি সজল বলেন, ‘রাস্তায় জায়গা না থাকায় আমরা এখানে বসছি।’ শরবত বিক্রেতা লিটুও বললেন, ‘রাস্তায় বসলে পুলিশ হেনস্তা করে। তাই এখানে বসছি।’

ফ্লাইওভারের নিচে নির্মিত পাবলিক টয়লেটের সামনের নিরিবিলি অংশে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করতে দেখা যায় কয়েকজন তরুণকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চা বিক্রেতা বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এখানে গাঁজা ও ইয়াবা সেবন চলে। পাশের রেললাইনেই চলে মাদক কেনাবেচা।

ফ্লাইওভারের নিচে উত্তর অংশে গড়ে উঠেছে লেগুনাস্ট্যান্ড। এখানেও প্রস্রাবের দুর্গন্ধ। দেদার চলে মাদক সেবনও। মধ্যরাত থেকে পতিতাদের আনাগোনারও অভিযোগ রয়েছে।

পথচারী জসিম বলেন, ফ্লাইওভারটি নির্মাণের পর এর নিচের অংশটুকু খুবই সুন্দর ও পরিষ্কার ছিল। কিন্তু এখন নোংরা আবর্জনা ও প্রস্রাবের দুর্গন্ধে নাক চেপে চলতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শাহালম বলেন, একসময় চলতি পথে এই জায়গায় বসে বিশ্রাম নেওয়া যেত; কিন্তু বসার বেঞ্চগুলো নোংরা হয়ে গেছে। ফ্লাইওভারের নিচের অংশ চলে গেছে হকারদের দখলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফ্লাইওভারটি আমরা এখনো বুঝে পাইনি। ফলে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও আপাতত আমাদের নয়।’
শ্যামপুর থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, ‘মাদক ব্যবসা ও সেবনের যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে আমরা অবগত নই। এ রকম কিছু হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত