Ajker Patrika

মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় দখল করে কাপড়ের দোকান, অভিযোগ দায়ের

মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় দখল করে কাপড়ের দোকান, অভিযোগ দায়ের

গাজীপুরের শ্রীপুরে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় দখল করেছে বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নূরুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত কার্যালয়টি হঠাৎ করে দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে কাপড়ের দোকান। এ বিষয়ে গতকাল শনিবার সকালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার কার্যালয়টি দখল করা হয়। 

অভিযুক্ত নূরুল আলম মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি গাজীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। 

জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় দখল করে নেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দিষ্ট কোনো বসার জায়গা নেই। এরই মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় দখল মুক্ত করতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের সামনে টিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নতুন একটি বারান্দা। ওই বারান্দায় বসানো হয়েছে একটি কাপড়ের দোকান। ফলে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় পুরোপুরি বন্ধ করে দখলে নিয়েছেন ইউপি সদস্য। 

গাজীপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলা উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের একমাত্র ঠিকানা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় দখল করে নিয়েছেন ইউপি সদস্য। এতে বাধা দিতে গেলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন তিনি। এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এরপরও প্রতিকার না পেলে সংবাদ সম্মেলন মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করব। প্রয়োজনে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের কার্যালয় দখলমুক্ত করব। 

শ্রীপুর উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মো. সিরাজুল হক বলেন, এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা কি পদক্ষেপ নেয় এটা দেখার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. নূরুল আলম বলেন, যে স্থানে মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় গড়ে উঠেছে সেই জমির মালিক আমার বাবা। আমি আমার জমিতে নতুন ঘর নির্মাণ করছি। 

এত বছর চলে গেল, হঠাৎ করে আজ কেন জমি দখলে নিচ্ছেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে ইউপি সদস্য বলেন, আগেও নিষেধ করেছি। কিন্তু তাঁরা নিষেধ মানেননি। 

তাহলে তখন কেন পারেনি, এখন মেম্বার হয়েছেন বলে ক্ষমতা হয়েছে? তাই দখল নিলেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবকিছুতেই একটু ক্ষমতা লাগে। তাই এখন একটু ক্ষমতা প্রয়োগ করলাম। আমি অপরাধ করলে আমার শাস্তি হবে। 

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ওই জমি দীর্ঘ সাত বছর আগে মাপজোখ করে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় কারও কোনো ধরনের আপত্তি ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে তিন দিন আগে ইউপি সদস্য জোরপূর্বক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের সামনে নতুন ঘর নির্মাণ করে দখলে নিয়েছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। 

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল হক মাতবর বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছে। আমি একটু অসুস্থ। সুস্থ হয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব। তবে কোনো ইউপি সদস্য মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস দখল নিলে তা মেনে নেওয়া হবে না। 

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইউএনওকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টির সঠিক সমাধান করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেত্রকোনার বারহাট্টা: নদের তীর দখল করে কারখানা নির্মাণ

  • উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল।
  • নিজের জায়গার পাশে নদের ৫৫ শতাংশ জায়গা দখল করে দেয়াল নির্মাণ।
সাইফুল আরিফ জুয়েল, নেত্রকোনা 
নেত্রকোনার বারহাট্টায় কারখানা নির্মাণের জন্য কংস নদ দখল করে প্রাচীর নির্মাণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নেত্রকোনার বারহাট্টায় কারখানা নির্মাণের জন্য কংস নদ দখল করে প্রাচীর নির্মাণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া কংস নদের তীর দখল করে কারখানা গড়ে তুলছেন বলে অভিযোগ কবির মোস্তাক আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামটির সেতুর পাশে কংস নদের জায়গায় মাটি ভরাট, দেয়াল ও পিলার স্থাপন করে শিল্পকারখানা নির্মাণ করছেন তিনি। এতে নদের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোস্তাক আহম্মেদ একজন শিল্পপতি। তিনি মল্লিকপুর গ্রামের মৃত রেহান উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। বর্তমানে সপরিবারে ঢাকায় থাকেন।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের (দক্ষিণ পাড়া) সেতুর পাশে নদের পাড়ঘেঁষে প্রায় দুই একরের বেশি জায়গাজুড়ে কারখানা স্থাপন করছেন কবির মোস্তাক আহমেদ। কয়েক মাস আগে নিজের জায়গার পাশে নদের ৫৫ শতাংশ জায়গা দখল করে দেয়াল তোলেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ জানালেও মোস্তাকের অনুসারীরা তাদের হুমকিধমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এ নদী শুধু কৃষির জন্যই নয়, বরং হাজারো মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কেউ মাছ ধরে, কেউ গোসল বা গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করে নদের পানি। পানির এই প্রবাহ রুদ্ধ হলে কংস একদিন মরে যাবে—এমন আশঙ্কা স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, ‘এ নদ ছাড়া আমাদের জীবন কল্পনা করা যায় না। এখন দেয়াল তুলছে, পিলার (প্রাচীর) বসাচ্ছে; আমরা ভয় পাচ্ছি, আর কিছুদিন পর হয়তো নদটাই থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে কথা বললেও কবির মোস্তাকের অনুসারীরা হুমকিধমকি দেন। আমরা চাই প্রশাসন যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়।’ আরেক বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, কারখানা করবে ভালো কথা, সেটা নিজের জায়গায় করুক। নদের অর্ধেক অংশ দখল করে দেয়াল তোলা হয়েছে। এতে চিরকালের জন্য কংস নদ হারিয়ে যাবে।

শফিক মিয়া বলেন, ‘দখল বন্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে কংস নদ হারিয়ে যাবে’এ বিষয়ে কথা বলতে পরপর তিন দিন একাধিকবার কল করা হলেও মোস্তাক আহম্মেদ রিসিভ করেননি।

অভিযোগ রয়েছে, চার মাস আগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীমা আফরোজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনেও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে।

সিংধা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীমা আফরোজ মহোদয়। সংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই জায়গার নকশাসহ প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জায়গাটি পরিমাপ করে নিশ্চিত হতে হবে। পরে উচ্ছেদ নোটিশ পাঠানো হবে। কাগজপত্র দেখে যতটুকু জেনেছি নদের বেশ অনেকটা অংশ ওই দেয়ালের ভেতর পড়েছে। ওখানে ৫৫ শতক জায়গা রয়েছে। সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলি হয়েছেন। নতুন একজন যোগদান করলে আবার এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে।’

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান বলেন, কংস নদের জায়গা দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ নথি তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেকোনো সময় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: স্ত্রীরোগের চিকিৎসক নেই সেবাবঞ্চিত রোগীরা

  • চিকিৎসক ও জনবলসংকটে চিকিৎসা দিতে হিমশিম।
  • ২৫ চিকিৎসকের জায়গায় আছেন মাত্র তিনজন।
মো. মাহমুদুল হক মানিক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভার এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র তিনজন চিকিৎসকের ওপর। চিকিৎসক ও জনবল স্বল্পতায় বেহাল অবস্থায় চলছে ৫০ শয্যার এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

জানা গেছে, জেলার বিরামপুর উপজেলাটি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত। ভালো যোগাযোগব্যবস্থার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিরামপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর উপজেলার অসংখ্য রোগী প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক ও জনবলসংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে, ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল কর্মকর্তা, কনসালট্যান্ট, সহকারী সার্জনসহ মোট ২৫ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছাড়া মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে প্রতিদিন রোগীদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম কর্তব্যরতরা।

এ দিকে গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে সিজারিয়ান অপারেশন। এ ছাড়া হাসপাতালের নার্স, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কয়েকটি পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।

চিকিৎসা নিতে আসা আতিকুর রহমানসহ কয়েকজন রোগী বলেন, সামর্থ্যবানরা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা করালেও গরিব রোগীদের ভরসা এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় ৫৬ কিলোমিটার দূরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘চিকিৎসক ও জনবলসংকটে দিনরাত রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিরামপুর উপজেলার একটি পৌরসভা, সাতটি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার ৫০০-৬০০ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোরে এবং প্রায় ৬০ জন ভর্তি রোগীকে ইনডোরে চিকিৎসা দিতে হয়। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে এত রোগীকে সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

মেডিকেল কর্মকর্তা আরও বলেন, চিকিৎসক ও জনবলসংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল সংযুক্ত করা হলে রোগীরা ভোগান্তিহীনভাবে চিকিৎসাসেবা পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাণ ফিরছে ঘাটের

নিষেধাজ্ঞা শেষে জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে জেলেরা

  • পর্যাপ্ত মাছ পেয়ে খুশি হাতিয়ার জেলেরা।
  • কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মেলেনি চাঁদপুরে।
  • লক্ষ্মীপুরে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০০-১,৬০০ টাকায়।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিচাঁদপুর প্রতিনিধিহাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২: ৪৮
ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ঘাটগুলোতে। শ্রমিকেরা টুকরিভর্তি মাছ মাথায় করে তুলছেন বাজারে, পাইকারেরা হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন। গতকাল বরিশালের পোর্ট রোড মোকামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ঘাটগুলোতে। শ্রমিকেরা টুকরিভর্তি মাছ মাথায় করে তুলছেন বাজারে, পাইকারেরা হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন। গতকাল বরিশালের পোর্ট রোড মোকামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও ইলিশ শিকারে নেমেছেন জেলেরা। গত শনিবার রাত থেকে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও হাতিয়ার ঘাটগুলোতে শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। দীর্ঘ বিরতির পর নদীতে নেমে আশানুরূপ মাছ পেয়ে খুশি অনেকে। আবার কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ কেউ কেউ। দাম কোথাও আগের মতোই, আবার কোথাও কিছুটা কমেছে।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় মধ্যরাতেই সাগরে নেমে পড়েন জেলেরা। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় অনেক মাছ পেয়েছেন কেউ কেউ। বুড়িরচর সূর্যমুখী ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটজুড়ে তীব্র ব্যস্ততা। শ্রমিকেরা টুকরিভর্তি মাছ মাথায় করে তুলছেন বাজারে, আর পাইকারেরা হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন। মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন বলেন, ‘খুব ভোর থেকে বাজারে মাছ বেচাকেনা শুরু হয়েছে। জেলেরা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নদী থেকে আশানুরূপ মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন। তাঁদের জালে ভালো মাছ ধরা পড়ছে।’

জেলে আবদুল কাদের বলেন, রাত ১২টার পর নদীতে গিয়ে সকালে ৩ মণ ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরেছেন। আকারে ছোট হলেও দাম ভালো। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ যদি এমন মাছ পাই, আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।’

চাঁদপুর সদরের হরিণা মাছঘাটে গতকাল সকাল থেকে শুরু হয় হাঁকডাক। কেউ নদী থেকে সদ্য ধরা ইলিশ নিয়ে ফিরছেন, কেউ আবার টাটকা মাছ কেনার অপেক্ষায়। ঘাটজুড়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। জেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘পেশা ইলিশ ধরা। ধার করে হলেও নদীতে নামতে হয়। কিন্তু যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে, তাতে খরচ বাদে তেমন থাকে না।’ একই ঘাটের জেলে হুমায়ুন ঢালি জানান, রাতভর জাল ফেলেও তেমন মাছ মেলেনি।

ঘাট থেকে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ কিনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন খুচরা মাছ ব্যবসায়ী আবদুর রহমান। তিনি বলেন, মাছের দাম কমেনি বা বাড়েনি। ওজনে এক কেজিতে ৪টা, এমন প্রতি হালি কিনেছেন ৮০০ টাকা দরে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। বড় সাইজের পাঙাশ কিনেছেন প্রতি কেজি সাড়ে ৮০০ টাকা দরে।

মাছ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম কালু হাওলাদার বলেন, ‘জেলেরা রাত থেকে নদীতে নামলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মেলেনি। কয়েক দিন পর বোঝা যাবে নদীতে মাছ আছে কি না।’

লক্ষ্মীপুরে গতকাল সকাল থেকেই সরগরম ছিল মজু চৌধুরীর হাট, মতিরহাট, লুধুয়া ও চর আলেকজান্ডার ঘাট। আকারের ওপর নির্ভর করে কেজিপ্রতি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। গড়পড়তা দাম নিষেধাজ্ঞার আগের সময়ের তুলনায় কিছুটা কম।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে, এবার অভিযান সফল হয়েছে। মা ইলিশ নির্ভয়ে ডিম ছাড়তে পেরেছে, ফলে উৎপাদন বাড়ার আশা করা হচ্ছে। জেলার নিবন্ধিত জেলেদের প্রত্যেকে ভিজিএফের চাল পেয়েছেন। অভিযানকালে দুই শতাধিক মোবাইল কোর্টে অর্ধশতাধিক জেলেকে জেল-জরিমানা করেছে। এ ছাড়া ১৬ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুরান ঢাকায় তরুণ খুন

হুমকির ১৫ দিন পর সজীবকে হত্যা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নিহত মো. সজীব হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. সজীব হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পুরান ঢাকার বংশালের আগামসিহ লেনে মো. সজীব হোসেনকে (২০) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর স্বজনেরা। সজীবের মায়ের অভিযোগ, মেয়েবন্ধুর মামা ১৫ দিন আগে সজীবকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁর ছেলেকে তাঁরাই খুন করেছেন।

এ ঘটনায় রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারেনি পুলিশ।

রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে নিহত সজীবের বড় বোন শান্তা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৫ বছর ধরে খাদিজা নামের এক মেয়ের সঙ্গে সজীবের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের দুই-তিন বছর পরে মেয়েটি অন্য একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। কিন্তু তাতেও সজীব তার চেষ্টা চালিয়ে যায়। শনিবার ওই মেয়ের বাসায় সজীবের মরদেহ পাওয়া যায়। নির্মমভাবে মেরে তার গলায়, পায়ে জিআই তার দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হয়।’

শান্তা আক্তার আরও বলেন, ‘শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে সজীব বাসা থেকে বের হয়। শুরুতে ফোনে কয়েকবার কথা হয়। এর পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বারবার ফোন দিলেও আর ধরে না। পরে শুনতে পাই, যেই মেয়েকে সজীব পছন্দ করত, সেই মেয়ের বাসায় তার মরদেহ পাওয়া গেছে।’

সজীবদের বাসাও বংশালের আগামসিহ লেনে। তিনি এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তবে কৃতকার্য হতে পারেননি।

রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, বংশালের আগামসিহ লেনের হক বেকারি গলিতে চারতলা একটি ভবন। ভবনটির নিচতলায় দোকান ও কারখানা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় জুতার গুদাম ও অফিস। বাবা-মা, এক ভাইসহ চারতলার বাসায় থাকেন খাদিজা।

বিকেলে বাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় তলার অফিস ও তৃতীয় তলার জুতার গুদামও তালাবদ্ধ ছিল।

ভবনটির এক ব্যক্তি জানান, নিহতের খবর সন্ধ্যায় জানতে পারেন। তার আগে কোনো ধরনের শব্দ বা গন্ডগোলের শব্দ বাসার ভেতর থেকে শোনা যায়নি। সন্ধ্যায় পুলিশ আসার পর ঘটনা জানতে পারেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, বাড়িটিতে কেউ একজন নিহত হয়েছে তা কেউ বুঝতে পারেননি। পুলিশ আসার পর ঘটনা জানাজানি হয়।

নিহত সজীবের মা নুরুন্নাহার বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শনিবার দুপুরে সজীব বাসা থেকে বের হয়। এরপর এক ঘণ্টার মধ্যে তিনবার তার সঙ্গে কথা হয়। পরে আর ফোন ধরে না, সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর দেয় পুলিশ।’

নুরুন্নাহার বলেন, ‘সজীব ঘটনার ১৫ দিন আগে খাদিজার বাসায় যায়। সে সময় সজীবের বাবাকে ফোন দেন খাদিজার মামা কামাল। তখন ফোনে সজীবের বাবাকে বলা হয়, “আপনার ছেলে এসে আমার ভাগনিকে বিরক্ত করতেছে। আপনার ছেলে এগুলো বন্ধ না করলে, তাকে বিরক্ত করলে মেরে ফেলে দিব।’”

নুরুন্নাহার আরও বলেন, ‘আমার ছেলে মনে হয় মেয়ের বাসায় গিয়েছিল। তখন তারা মিলে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে সুস্থ ছিল।’

রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সজীব হোসেনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাতে জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত না হলেও পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় রোববার নিহতের মামা মোরশেদ আহমেদ বলেন, ‘বংশাল থানার পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করতে বলে। তবে এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা হত্যা মামলা করব। তারা না নিলে কোর্টে মামলা করব।’

নিহত সজীবের পরিবারের অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বহুবার ফোন করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

ঘুষ হিসেবে পাকা কলা নেওয়ার কথা স্বীকার, দুদকের গণশুনানিতে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত