Ajker Patrika

মানসিক সমস্যায় ২৫% স্বাস্থ্যকর্মী, বেশির ভাগ নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ২০: ৫২
মানসিক সমস্যায় ২৫% স্বাস্থ্যকর্মী, বেশির ভাগ নারী

করোনা মহামারির শুরু থেকেই সামনে থেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর এ সেবা দিতে গিয়ে মানসিক নানা সমস্যার শিকার হয়েছেন তাঁরা। গবেষণা বলছে, দেশে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে এক-চতুর্থাংশ বা ২৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারসহ (পিটিএসডি) নানা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী। 

জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশের ১ হাজার ৩৯৪ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন ফল পেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিপসম মিলনায়তনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরনে গবেষণা দলের প্রধান নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ। 

নিপসম জানায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চিকিৎসক ৫৯৬ জন, ৭১৩ জন নার্স এবং ৮৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। এসব স্বাস্থ্যকর্মী অন্তত এক মাস করোনা রোগীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। 

সেবা দিতে গিয়ে পুরোনো কথা মনে পড়া, দুঃস্বপ্ন, গুরুতর উদ্বেগ ও ঘটনা সম্পর্কে নিয়ন্ত্রণহীন চিন্তার কারণে এমনটা হতে পার বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী যারা করোনা রোগীদের নিয়মিত সেবা দিয়েছেন, তাঁদের ৬২ দশমিক ৯ শতাংশেরই পিটিএসডি ছিল। 

জরিপের গবেষণায় স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের মানসিক সুস্থতায় কাউন্সেলিং প্রোগ্রামের ব্যবস্থা জোরদার ও প্রবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত বিবাহিত স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও গবেষণায় দেখা গেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, চিকিৎসকদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়েছিল। এরপরই ছিলেন টেকনোলজিস্ট ও নার্সরা। মানসিক সমস্যায় আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, টেকনোলজিস্ট ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং নার্স ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ। এদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল বিবাহিত। স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের কাজের চাপ অনেক বেশি ছিল। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী (পিপিই) অপ্রতুল ছিল। সব মিলিয়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন তাঁরা। 

অনুষ্ঠানে গবেষক দলের প্রধান বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, পিটিএসডি আক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারেরা সবার থেকে দূরে সরে থাকতে পারেন বা চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন বা তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা থাকতে পারে। এ স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের করা উচিত। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত