Ajker Patrika

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালেই মামলা চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২২, ১৪: ১৯
Thumbnail image

দুষ্কৃতকারীদের হাতে নিহত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা দায়রা আদালতে ফেরত পাঠাতে আসামিপক্ষের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক জাকির হোসেন আবেদন খারিজ করেন।

পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৮ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন। ওই দিন মামলার বাদী সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির থাকার নির্দেশ দেন।

গত ২২ আগস্ট তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়েছিলেন। এ সময় আসামি আশীষ রঞ্জন চৌধুরী ও সানজিদুল ইসলাম ইমনের আইনজীবী এম এ বাছেদ রাখী মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে দায়রা আদালতে ফেরত পাঠানোর আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইনে কোনো মামলা ১৩৫ কার্য দিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে বলে বলা আছে। এই ট্রাইব্যুনালে মামলাটি বদলি হয়ে আসার পর মামলার নিষ্পত্তির উক্ত সময়সীমা ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে বিধায় ট্রাইব্যুনাল এই মামলা নিয়ে আর অগ্রসর হতে পারবেন না। কাজেই মামলাটি দায়রা আদালতে ফেরত পাঠানো হোক।

ট্রাইব্যুনাল আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করে বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। আজ আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক রায়ে ইতিমধ্যে বলেছেন, ১৩৫ কার্য দিবসের মধ্যে কোনো মামলার বিচার শেষ করতে না পারলেও ট্রাইব্যুনালে এই মামলা চলতে কোনো বাধা নেই। কাজেই বিপক্ষের আবেদন খারিজ করা হলো।’

দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা নথি গায়েব ছিল। গত ২৩ জানুয়ারি দৈনিক আজকের পত্রিকায় ‘নায়ক খুনের নথি গুম’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। নথি খুঁজে বের করার দাবিতে রিট আবেদন হয়। পরে নথি পাওয়া যায়। মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এই মামলার কেস ডকেট (সিডি) খুঁজে না পাওয়ায় কয়েক মাস অতিবাহিত হয়। শেষ পর্যন্ত কেস ডকেট ছাড়াই সাক্ষ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাইব্যুনাল। পরে গত ২০ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। এরপর সাক্ষী হাজির না হওয়ায় ২২, ২৩ ও ২৪ আগস্ট পরপর তিন দিন ধার্য করা হয়। 

ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয় সূত্রমতে, ২০০৫ সালের ২ জুন তৎকালীন ডিবির এসআই ফরিদ উদ্দিন কেস ডকেট গ্রহণ করেন। গত ১১ এপ্রিল ফরিদ উদ্দিনকে কেস ডকেটের বিষয়ে অবহিত করার জন্য ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দেন। গত ২৭ এপ্রিল চকবাজার থানার সাবেক পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন সশরীরে হাজির হয়ে ট্রাইব্যুনালকে জানান, তিনি যেদিন কেস ডকেট গ্রহণ করেছেন, সেদিনই তৎকালীন ডিবির ডিসি শহিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। শহিদুল ইসলাম উক্ত কেস ডকেট কী করেছেন এরপর আর তিনি জানেন না।

সর্বশেষ গত ১৫ জুন মামলার কেস ডকেট সমন্বয় করে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সরকারি কৌঁসুলিদের।

এর আগে কয়েকবার কেস ডকেট খুঁজে বের করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করার জন্য চকবাজার থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফরিদ উদ্দিন তা পারেননি।

এই মামলায় আসামি আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী জামিনে আছেন। আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, সাজিদুল ইসলাম ও তারিক সাঈদ মামুন কারাগারে আছেন। আসামি হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান পলাতক রয়েছেন।

১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। ঘটনার পর সোহেলের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে বাদানুবাদই এই হত্যার নেপথ্য কারণ বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত