Ajker Patrika

টেলিগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগের নামে ৫ কোটি টাকা হাতান তাঁরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গ্রেপ্তারকৃত ফারদিন আহমেদ ওরফে প্রতীক ও মো. সাগর আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তারকৃত ফারদিন আহমেদ ওরফে প্রতীক ও মো. সাগর আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া গ্রুপ খুলে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের হোতাসহ দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন চক্রের প্রধান ফারদিন আহমেদ ওরফে প্রতীক (২৫) এবং তাঁর সহযোগী মো. সাগর আহমেদ (২৪)। আজ শুক্রবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিআইডির ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি দল ৬ নভেম্বর ভোরে পঞ্চগড় সদরের ধাক্কামারা এলাকা থেকে মূল হোতা ফারদিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে অভিযান চালিয়ে সাগর আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টেলিগ্রামে ‘বিদেশি বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম’ নামে ভুয়া গ্রুপ খুলে অল্প সময়ে বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখাত। গ্রুপে আগে থেকেই সাজানো কিছু সদস্য রাখা হতো, যারা নিজেদের বিনিয়োগ করে লাভ পাওয়ার ভান করে নিয়মিত কৃতজ্ঞতার পোস্ট দিত। এসব দেখে সাধারণ বিনিয়োগপ্রত্যাশীরা প্রতারকদের আশ্বাসে অর্থ পাঠাতেন। পরে চক্রটি তৃতীয় ব্যক্তির নামে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করত। এভাবে বহু বিনিয়োগকারী সর্বস্ব হারিয়েছেন।

তদন্তে আরও জানা যায়, ফারদিন বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ৩০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, এমএফএস অ্যাকাউন্ট এবং সিমকার্ড নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রতারণা চালাতেন। অন্যদিকে সাগর আহমেদ ‘Rio’ নামে ফেইক পরিচয়ে ‘Alexa Wick’ নামের একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন। মাত্র সাত সদস্যবিশিষ্ট ওই গ্রুপে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী পোস্ট ও মন্তব্য করে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করা হতো।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারদিন প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে সিআইডি। তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রের অন্যান্য সদস্য ও অর্থপথ শনাক্তে গ্রেপ্তার দুজনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬ নেতা গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন (৪৪), চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান মো. খান জাহান আলী ওরফে কালু পাটোয়ারী (৫৫), ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. মশিউর রহমান (৩২), খুলনা জেলার খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ (৫২), ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপগ্রন্থাগার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক এবং মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক আলিম আল তারিফ (২৮) এবং আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. টিপু সুলতান (৪৫)।

ডিবি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি-তেজগাঁও বিভাগ তেজগাঁও থানাধীন মণিপুরিপাড়া এলাকা থেকে মো. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় খিলগাঁও থানাধীন নন্দীপাড়া ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে মো. খান জাহান আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন রাতে পশ্চিম আগারগাঁও এলাকা থেকে মো. মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগ।

ডিবি-সাইবার বিভাগের আরেকটি দল বৃহস্পতিবার রাতে বসুন্ধরা এলাকা থেকে কাজী ফয়েজ আহমেদকে এবং ডেমরা থানা এলাকা থেকে মো. টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার করে। একই দল ওই দিবাগত রাতে লালবাগ থানা এলাকা থেকে আলিম আল তারিফকে গ্রেপ্তার করে। ডিবি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, আটক ১

সিলেট প্রতিনিধি
সিলেটে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল। ছবি: সংগৃহীত
সিলেটে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। মিছিলে ১৫-২০ জন নেতা-কর্মীকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি দিলওয়ার হোসেন রাহী আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁর ফেসবুক আইডিতে প্রথম মিছিলের ভিডিও প্রকাশ করেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রাহী। মিছিলে অংশ নেওয়া দু-তিনজন ছাড়া অধিকাংশ নেতা-কর্মীর মুখে কালো মাস্ক ও মাথায় হেলমেট ছিল। মিছিলে এমসি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টেলেন্ট কান্তি দাশকে দেখা যায়। আর বাকিদের চেনা যায়নি। মিছিলের ব্যানারে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারের ছবি চোখে পড়ে। রাহী ও টেলেন্ট রনজিত সরকারের গ্রুপের নেতা ছিলেন।

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মিছিলের পরে আমরা একজনকে আটক করেছি। বাকিদের ধরতে অভিযানে রয়েছি আমরা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নুর না মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে বিএনপি–গণঅধিকার, আহত ৩১

গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
নুরুল হক নুর ও হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত
নুরুল হক নুর ও হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণ কপালবেড়া খলিফা বাড়ির সামনের চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার চরশিবা ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাঢ়ী, সদস্য সবুজ রাঢ়ী, নূরনবী রাঢ়ী, হাসান রাঢ়ী, কুদ্দুস ব্যাপারী, ইয়াকুব রাঢ়ী, ওমর রাঢ়ী, রাহান রাঢ়ী ও সলেমান রাঢ়ী; তাঁরা সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

অপর দিকে যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল খলিফা, আজমীর খলিফা, শাহাবুল খলিফা, আমেনা বেগম, নাঈম খলিফা ও নবীন খলিফা আহত হয়েছেন। তাঁরা গণঅধিকার পরিষদের কর্মী-সমর্থক। দুই পক্ষের অন্য আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি গঠন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় কপালবেড়া বাজারে গণঅধিকারের সভা ছিল। সভায় বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে অংশ নেন। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মিছিল বের করেন ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

কর্মসূচি শেষে উভয় দলের নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দক্ষিণ কপালবেড়া চৌরাস্তা বাজারে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সভায় লোক উপস্থিত হওয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় বিএনপির নমিনেশন হাসান মামুন পাবেন না গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর পাবেন—এ বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্ক হয়। একপর্যায়ে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

আহত যুবদল নেতা মো. ইলিয়াস রাঢ়ী বলেন, ‘শুক্রবার হাসান মামুন ভাইয়ের প্রোগ্রাম উপলক্ষে রাতে আমরা কপালবেড়া বাজারে শুভেচ্ছা মিছিল করি। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার সময় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’

ইলিয়াস রাঢ়ী আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, ৭ নভেম্বরের প্রোগ্রামে হাসান মামুন ভাই যে নির্দেশনা দেবেন, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। কিন্তু তারা বলে, হাসান মামুন নমিনেশন পাবেন না, গণঅধিকারের নুরুল হক নুরকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। এই কথা বলেই তারা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’

আহত আজমীরের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে মোটরসাইকেলচালক। কিছুদিন আগে বিএনপির সভায় গাড়ি নিয়ে যেতে বলেছিল, সে যায় নাই। কিন্তু আজ গণঅধিকার পরিষদের সভায় যায়। সভা শেষ করে বাসায় ফেরার পথে চৌরাস্তায় বিএনপির লোকজন তাকে ধরে মারধর করে। আমার বাসার সামনেই ঘটনা ঘটে। আমি ছেলেকে বাঁচাতে দৌড়ে গেলে আমাকেও মারধর করে।’

আজমীরের বাবা শাহাবুল খলিফা বলেন, ‘আমরা গণঅধিকার পরিষদ করি। এর আগে চরবিশ্বাসে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মারামারির ঘটনার পর চরশিবায় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে তারা। আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল তাদের এবং আজকে গণঅধিকারের সভায় লোকজন যাওয়ার কারণে মারধর করে।’

যুব অধিকার নেতা সোহেল খলিফা বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হলে বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হামলা করে। আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি, এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। তবে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা–দশমিনা) আসনে প্রার্থী ঘোষণা স্থগিত রাখে দলটি।

এ নিয়ে সাধারণ মানুষ, বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাগ্‌যুদ্ধ শুরু হয়। পৌর শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রতীকে হাসান মামুনের মনোনয়ন চেয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। তাঁরা দলীয় প্রার্থীর বাইরে বিকল্প কোনো প্রার্থীকে মেনে নিতে নারাজ।

এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের চর কপালবেড়া নামের স্থানে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এরপর সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষের পর চর কপালবেড়াসহ পুরো চর কাজল ইউনিয়নে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতেই ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে অবস্থান নেয়।

এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুরের ভাই ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম নুর বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে বিষয়টি হলো, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চর কপালবেড়ায় ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে গণঅধিকারের একটি সভা ছিল। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির লোকজন মিছিল করে। মিছিল শেষে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর তারা হামলা করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’

আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসান মামুন নমিনেশন না পাওয়ার কারণে বিএনপির লোকজন উচ্ছৃঙ্খলতা শুরু করেছে। এলাকায় একটা ভয়ভীতি ও ত্রাসের রাজনীতি করতে চায়, যাতে গণঅধিকারে কেউ যোগ না দেয়।

এদিকে ঘটনার পরে রাত ১২টার দিকে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। এ সময় উভয় দলের আহত ব্যক্তিদের তিনি চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। তিনি সবাইকে ধৈর্য ও শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানান।

এ সময় বিএনপি নেতা হাসান মামুন বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি, তবে এখনো বিস্তারিত জানতে পারিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখানে রয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। আমরাও প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।’

হাসান মামুন আরও বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের দলের একটি র‍্যালি রয়েছে, সে কারণেই নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হচ্ছিলেন। সেই প্রোগ্রাম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে হয়তো এ ধরনের তৎপরতা চালাতে পারে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করব, সঠিকভাবে তদন্ত করে সত্য উদ্‌ঘাটন করুন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’

মামুন বলেন, ‘একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এই পরিবেশ রক্ষায় সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করব।’

সংঘর্ষের বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দুই পরিবারের সদস্যরা দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাঁদের আগে প্রভাব বিস্তার নিয়ে পারিবারিক বিরোধ রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ নিয়ে সংঘর্ষ হতে পারে। সংঘর্ষে দুপক্ষই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিছিলে এক কাতারে সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতারা

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৫
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত র‍্যালিটি নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত র‍্যালিটি নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এক কাতারে দেখা গেল সিলেট বিএনপির শীর্ষ নেতাদের। আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে উপলক্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত র‍্যালি ও সমাবেশে এ দৃশ্য দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের হয়ে লড়াইয়ের জন্য দল মনোনীত চার প্রার্থীও রয়েছেন। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশাসহ নানা কারণে এর আগে এই শীর্ষ নেতাদের একসঙ্গে দেখা যায়নি।

এদিন দিবসটি উপলক্ষে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে র‍্যালিটি শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। র‍্যালি ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির; বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট-৪ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী; বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম এ মালেক; সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী; কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী; জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট-৬ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী; মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী; সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম; জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক এবং মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।

র‍্যালির আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘১৯৭৫ সালের এই দিনে নিদারুণ দুঃসময়ে দেশপ্রেমিক জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যেভাবে স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেভাবেই জাতীয় সংকটের মুহূর্তে তিনি জাতির রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। জিয়ার বাংলাদেশ কখনো পরাধীন হবে না। এ দেশ পার্শ্ববর্তী শক্তির সঙ্গে সম্মানের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলবে।’

এ সময় বক্তারা বলেন, ‘আঙুল বাঁকা করার ভয় দেখানো হচ্ছে—আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা সেই আঙুল ভেঙে দেব। অতীতেও এমন বহু ভয় দেখানো হয়েছিল, কিন্তু বিএনপি কখনো পিছু হটেনি, ভয় পায়নি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট জেলার ছয়টি আসনসহ বিভাগের ১৯টি আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বিজয়ের উপহার দেব, ইনশা আল্লাহ।’

দিবসটি উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপির আওতাধীন সব থানা, ওয়ার্ড, উপজেলা ও পৌর ইউনিটেও পৃথক র‍্যালি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়। পাশাপাশি দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ নিজেদের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

গাজায় শিগগির ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, থাকছে কোন কোন দেশ

‘জাহানারা মুখ খুলেছে, জুনিয়ররা অ্যাবিউজ হলে কি মুখ খুলতে পারবে’

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত