Ajker Patrika

সোহেল চৌধুরী হত্যা: আশীষ চৌধুরীর জামিন প্রশ্নে রুল জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সোহেল চৌধুরী হত্যা: আশীষ চৌধুরীর জামিন প্রশ্নে রুল জারি

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীর জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।

জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রুল দিয়ে এক মাস পর শুনানির জন্য ঠিক করে দিয়েছেন আদালত।’

উল্লেখ্য, ২৩ বছর আগে খুন হন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার প্রধান আসামি আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। তাকে গত ৫ এপ্রিল রাতে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তিনি একাধিক বেসরকারি এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন পদে ছিলেন। সর্বশেষ ছিলেন জিএমজি এয়ারলাইনসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও)।

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ২০০১ সালে অভিযোগ গঠন করা হয়। তবে ২০০৩ সালে এক আসামি হাইকোর্টে রিট করলে বিচারকাজ স্থগিত করে রুল জারি করা হয়। ২০১৫ সালে ওই রুল খারিজ করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে রায় দেন উচ্চ আদালত। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ওই নথি আর বিচারিক আদালতে যায়নি। শুরু হয়নি বিচারকাজ।

অনুসন্ধান শেষে আজকের পত্রিকায় চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ‘নায়ক খুনের মামলা গুম’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের পর সোহেল চৌধুরীর মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে ৩০ জানুয়ারি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হারুন ভুইয়া রাসেল। পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট করেন তিনি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট নথি খুঁজে বের করতে ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের পর সেই নথি পৌঁছে যায় মাত্র ১৩ দিনে। ১০ মার্চ আবারও শুরু হয় বিচারকাজ। ২০ মার্চ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপরই অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি আশীষ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এ সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বনানীর ক্লাব ট্রামসের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। ঘটনার পর তাঁর বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। শুরুতে ক্লাবের ১১ সদস্য-কর্মচারীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় আদনান সিদ্দিকি নামের এক ব্যক্তিকে।

ডিবি পুলিশ তদন্তে নেমে ১৯৯৯ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশান থেকে ক্লাব ট্রামসের মালিক বান্টি ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। এর তিন দিন পর ৬ জানুয়ারি গুলশান লেডিস পার্কের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আলোচিত শিল্পপতি আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আদনান সিদ্দিকি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের আগে এক শিল্পপতির ফোন পেয়ে তিনি ঢাকা ক্লাব থেকে ঘটনাস্থলে যান।

এক বছর তদন্তের পর ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়াও তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, ফারুক আব্বাসী, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর এই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত