Ajker Patrika

আদেশের পরও পাসপোর্ট না দেওয়ায় কর্মকর্তাকে দুই ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখলেন হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

আদেশের পরেও পাসপোর্ট ইস্যু না করায় সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানকে আদালত অবমাননার দায়ে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

আজ বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকার সাজা দেন। 

হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, ফৌজদারি মামলা থাকলে বা মামলার তদন্ত চলাকালে কাউকে পাসপোর্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা যাবে না। 

আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের রায় এর আগেও হয়েছে। তবে এ ধরনের মামলায় আদালত অবমাননা এটিই প্রথম। সারা দেশে মামলা থাকার কারণে যেসব পাসপোর্ট ঝুলে আছে তা দিয়ে দেওয়া উচিত। ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকলে পাসপোর্ট দেওয়া যাবে না, এই ধরনের কোনো আইন নেই। পাসপোর্ট ট্রাভেল ডকুমেন্ট। এটি বাংলাদেশের সকল নাগরিকের থাকতে পারে। 

জানা যায়, হুসাইন আহমেদ নামে এক ব্যক্তি পাসপোর্ট পেতে গত বছরের ২২ অক্টোবর অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে সুনামগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করেন। যাবতীয় কাজ শেষ হওয়ার পর তাঁকে ১৩ নভেম্বর পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য ডেলিভারি স্লিপ দেওয়া হয়। তবে পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় স্থানীয় থানা থেকে জানানো হয়, তাঁর নামে ৬টি ফৌজদারি মামলা আছে। হুসাইন আহমেদ জানান, পাঁচটিতে তিনি খালাস পেয়েছেন এবং একটি বিচারাধীন। তবে মামলা বিচারাধীন থাকায় তাঁর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রতিবেদন নেতিবাচক আসে। 

পাসপোর্ট না দেওয়ায় হুসাইন আহমেদ আঞ্চলিক অফিসে কারণ জানতে চেয়ে আবেদন করেন। এরপর ১৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠান। জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ মার্চ হাইকোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে হুসাইন আহমেদকে পাসপোর্ট সরবরাহের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন। 

তবে আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পরও সুনামগঞ্জের আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান গত ৩ এপ্রিল চিঠি দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু না করার কথা জানিয়ে দেন। এরপরই মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়। গত ২৬ মে হাইকোর্ট মনিরুজ্জামানকে সশরীরে হাজির হতে আদেশ দেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। 

মনিরুজ্জামান বিদেশে বাইরে থাকায় তাঁর পক্ষে সময়ের আবেদন করলে আদালত ৫ জুন দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি আজ আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন। তবে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় শাস্তি দেন হাইকোর্ট। 

এদিকে আদালত অবমাননার রুল জারির পর হুসাইন আহমেদের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয় এবং তিনি ৪ জুন তা হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী শিশির মনির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত