Ajker Patrika

কক্সবাজার-৪ আসনে ‘বৌদি’কে দ্বিতীয়বার জেতালেন বদি

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৪৯
কক্সবাজার-৪ আসনে ‘বৌদি’কে দ্বিতীয়বার জেতালেন বদি

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া, টেকনাফ) আসনে আইনি জটিলতায় এবারও মনোনয়ন পাননি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনে জয়ী আলোচিত সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। গতবারের মতো এবারও দলীয় মনোনয়ন পান তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরী।

২০১৮ সালে বদির স্ত্রী শাহিন আক্তারকে প্রথমবার মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। সেই নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়ে সংসদে গেলেও কার্যত এলাকায় সংসদ সদস্যের ভূমিকায় ছিলেন বদি নিজেই। এমন বিতর্ক ছাপিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে আবারও শাহীনকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়।

এবার নির্বাচনী প্রচারণাচলাকালে উখিয়ার এক পথসভায় বদি বলেছিলেন, ‘এবারও নৌকা চেয়েছিলাম, আমার কপাল পুড়েছে। বদি মনোনয়ন পায়নি, পেয়েছে বৌদি। বৌদিকে প্রথমে বুঝিনি। পরে বুঝেছি, আমার বউকে সবাই বৌদি ডাকে। তাকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে, কারণ সে টেকনাফের এজাহার কোম্পানির পুত্রবধূ; উখিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরীর কন্যা; তাঁর ছোট ভাই উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালংয়ের চেয়ারম্যান; বড় ভাই জেলা পরিষদের সদস্য এবং আমি তার স্বামী সাবেক এমপি ছিলাম।’

এই আসনে প্রার্থী ছিলেন সাতজন, তবে শাহীনের বিপরীতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল বশর। প্রথমে বাতিল হলেও প্রচারণা শুরুর চার দিন পর আদালতের রায়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি, ঈগল প্রতীক নিয়ে বদিবিরোধীদের সঙ্গে করে নামেন নির্বাচনের মাঠে। তাঁকে ৯০ হাজার ৩৭৩ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বদির স্ত্রী।

উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ১০৪ কেন্দ্রে শাহীনের প্রাপ্ত ভোট ১ লাখ ২২ হাজার ৮০ আর নুরুল বশর পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭০৭ ভোট। যদিও ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার মাত্র ৩০ মিনিট আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান নুরুল বশর। ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বশর বলেন, কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। কারচুপির অভিযোগ তুলে তিনি পুনর্নির্বাচন দাবি করেন।

বিজয়ী হয়ে পরদিন (৮ জানুয়ারি) প্রথমে নিজের পৈতৃক নিবাস উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ভোটার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শাহীন। তবে তিনি গণমাধ্যমকে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি।

উখিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে শাহীন সবচেয়ে বেশি ভোট (২২ হাজার ৩১৪) পেয়েছেন রাজাপালংয়ে। এই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহীন আক্তারের আপন ছোট ভাই উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী।

জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘আমার এলাকার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। যার ফল আমরা পেয়েছি এবং তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উৎসর্গ করলাম। এবার সবাই মিলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।’

অন্যদিকে ফলাফলে তৃতীয় স্থানে থাকা জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো ১ হাজার ৭৫৮ ভোট পেয়েছেন। ভোট গ্রহণ চলাকালীন দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচনকে প্রহসনমূলক আখ্যায়িত করে বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

এ ছাড়া ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত মিনার প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ওসমান গণি চৌধুরী ৮২৫ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী ফরিদ আলম (আম) ৩২৭ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাঈল (ডাব) ২৪৭ ভোট এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মুজিবুল হক মুজিব (সোনালী আঁশ) ২৪৬ ভোট পেয়েছেন। শাহীন ও বশর ছাড়া বাকি পাঁচ প্রার্থী তাঁদের জামানত হারিয়েছেন।

কক্সবাজারের চারটি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে এই আসনে, শতকরা হিসাবে যার হার ৪৮.৯৮ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাল্যবিবাহের অতিথি ইউএনও, জানতে পেরে খাবার না খেয়ে চলে গেলেন

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
মো. জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের নেছারাবাদে সপরিবারে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে জানতে পারেন কনের বয়স ১৮ বছরের নিচে; এরপর খাবার না খেয়ে ফিরে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম। পরে কাজিও বিয়ে না পড়িয়ে চলে যান।

ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার দৈহারী গ্রামে।

জানা যায়, বর শেখ মো. অনিক (২৩) জগন্নাথকাঠি গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে এবং কনে মোসাম্মৎ মুন্নি আখতার (১৬) দৈহারী গ্রামের বাবুল হাওলাদারের মেয়ে। শুক্রবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে উভয় পরিবার। বিয়ে অনুষ্ঠানে পরিবারসহ ইউএনও অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

জানতে চাইলে বিয়ে পড়াতে আসা কাজি মো. ইসহাক আলী বলেন, ‘প্রথমে আমাকে জানানো হয় মেয়ের বয়স ১৮ বছর। পরে কনের প্রকৃত বয়স ১৬ জেনে আমি বিয়ে পড়াইনি। ইউএনও সাহেবও বিষয়টি জানার পর সপরিবারে না খেয়েই চলে যান।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আল আমীন জানান, ‘বিয়েবাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। ইউএনও সাহেব সপরিবারে এসেছিলেন। কনের বয়স কম শুনেই তিনি এবং কাজি চলে গেলে আমি নিজেও ফিরে এসেছি। আমরা কোনো খাওয়াদাওয়া করিনি।’

এ বিষয়ে ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত অনুরোধে দাওয়াতে গিয়েছিলাম। কনের বয়স কম জেনে আইনগত ও নৈতিক দিক বিবেচনায় দাওয়াত না খেয়েই ফিরে এসেছি। পরে জানতে পেরেছি বিয়েটি আর হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কমলাপুর রেলস্টেশনে চাপাতি দেখিয়ে ভাইরাল যুবক গ্রেপ্তার

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৩৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রকাশ্যে চাপাতি বের করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া যুবক শাহ আলী শিকদারকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাঁর দেখানো স্থান থেকে ধারালো চাপাতিটি উদ্ধার করেছে।

ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন, আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে বিমানবন্দরের কাওলা রেলগেট এলাকা থেকে ধারালো চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

এসপি জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে ১৯ অক্টোবর রাতে শাহ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শাহ আলী জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। বিভিন্ন সময় তিনি জনমনে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন, যার কারণে জেলও খেটেছেন।

এসপি জানান, গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এসে শাহ আলী যে তথ্য দেন, তার ভিত্তিতেই কাওলা রেলগেট এলাকা থেকে চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর রাতে শাহ আলী শিকদার কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চাপাতি বের করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাইরাল হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দ, আসামি হলেন অটোরিকশাচালক

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি 
চালসহ জব্দ অটোরিকশা।
চালসহ জব্দ অটোরিকশা।

শেরপুরের নকলায় খাদ্য অধিদপ্তরের ২২ বস্তা সরকারি চাল জব্দের ঘটনায় অটোরিকশাচালক রানা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় খাদ্য বিভাগের খাদ্য পরিদর্শক মো. আফতাব উদ্দিন বাদী হয়ে আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

গ্রেপ্তার অটোরিকশাচালক রানার বাড়ি নকলা পৌর শহরের জালালপুর মহল্লায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন এ্যানির নেতৃত্বে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ ও থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে নকলা পৌর শহর থেকে চালসহ রানার অটোরিকশাটি জব্দ করে।

পুলিশ, মামলার আসামি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঠাকাটা ইউনিয়নের পাঁচকাহনীয়া গাদুর মোড় এলাকা থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের ২২ বস্তা সরকারি চাল কেনেন জালালপুর মহল্লার মিলমালিক আশরাফ মিয়া ওরফে বুড়া আশরাফ। বিকেলে তিনি ওই চাল তাঁর মিলে নেওয়ার জন্য অটোরিকশাচালক রানাকে ভাড়া করেন। চাল স্থানান্তরের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আফরিন এ্যানির নেতৃত্বে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ ও থানা-পুলিশ অভিযানে নামেন। পরে সন্ধ্যার দিকে নকলা পৌর শহর থেকে অটোরিকশাসহ ওই ২২ বস্তা চাল জব্দ করে পুলিশ। আটক করা হয় অটোচালক রানা মিয়াকে। এ ব্যাপারে মিলমালিক আশরাফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

নকলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কাশেম বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় নকলা থানায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৯ ভারতীয় জেলে জেলহাজতে

 মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
জব্দ ট্রলার। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ ট্রলার। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমুদ্রসীমা লঙ্ঘনের মামলায় ৯ ভারতীয় জেলেকে বাগেরহাটের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান এসব কথা নিশ্চিত করেন।

ওসি মো. আনিসুর রহমান জানান, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ফেয়ারওয়ে বয়াসংলগ্ন গভীর সাগর থেকে গত বুধবার বিকেলে এফবি এনি নামে একটি ভারতীয় ফিশিং ট্রলার আটক করে টহলরত নৌবাহিনী। ট্রলারটি সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন করে বেআইনিভাবে এ দেশীয় জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করছিল। ট্রলারটিতে থাকা ৯ জেলের বাড়ি ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ এলাকায়।

ওসি আরও জানান, ট্রলারটিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোংলার ফেরিঘাটে নিয়ে আসে নৌবাহিনী। এরপর জেলেদের থানায় হস্তান্তর করা হয়। জেলেদের বিরুদ্ধে সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন আইনে মামলার পর আজ দুপুরে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা জৈষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, আটক ট্রলারটিতে প্রায় দেড় টন (১৫০০ কেজি) টুনা ফিস রয়েছে। আদালতের নির্দেশেনা অনুযায়ী, এ মাছ নিলামে বিক্রি কিংবা অন্য যেকোনো প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত