Ajker Patrika

মারা গেলেন রাস্তায় ফেলে যাওয়া হতভাগ্য বাবা 

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৮: ৪৭
মারা গেলেন রাস্তায় ফেলে যাওয়া হতভাগ্য বাবা 

চৌদ্দগ্রামে রাস্তার পাশে ফেলে যাওয়া হতভাগা বাবা মো. বাছা মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল রোববার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৯০ বছর। এর আগে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় চৌদ্দগ্রাম নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজরুল হক বাছা মিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। বাচা মিয়া পৌরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বীরচন্দ্রনগরের বাসিন্দা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাড়িসর্দার বাজারের পশ্চিমপাশে রাস্তার ওপরে বাছা মিয়াকে তাঁর ২য় সংসারের সন্তানরা ফেলে রেখে চলে যায়। শুভ নামে স্থানীয় এক যুবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোবাইলে খবর দিলে তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বাছা মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তিনি। 

স্থানীয়রা বলেন, বাছা মিয়া ব্যক্তিগত জীবনে ২ বিয়ে করেন। তিনি দ্বিতীয় ঘরের সন্তান মো. নুরুল ইসলামে সঙ্গে বসবাস করতেন। কিন্তু তাঁরা তাঁকে ভরণপোষণ না দিয়ে গতকাল মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। 

বাছা মিয়ার প্রথম সংসারের মেয়ের জামাই জুয়েল হাসান ফরায়েজী বলেন, আমার শ্বশুর দীর্ঘ বছর ধরে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানদের কাছে থাকত। স্থানীয়দের মাধ্যমে ওনার মৃত্যুও সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ গ্রহণ করেছি। 

প্রথম সংসারের বড় ছেলে মো. মামুন মিয়া বলেন, আমার বাবার সঙ্গে দীর্ঘ ৩০ বছর আমাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। প্রথম সংসারে আমরা ২ ভাই ও ৪ বোন রয়েছি। আমি ও আমার ছোট ভাই রুবেল চায়ের দোকানে চাকরি করি। আমার বাবা দ্বিতীয় সংসারের সন্তানদের সঙ্গে বসবাস করতেন বলে শুনেছি। আজ সোমবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়। 

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাসিবুর রহমান বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাছা মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাঁকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সময়মতো চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় এবং খাওয়া দাওয়া না করায় আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ ছাড়া তাঁর শ্বাসকষ্ট ছিল। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য। কিন্তু রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে মারা যান তিনি। 

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মনজুরুল হক বলেন, খবর পেয়ে বাছা মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। রাতেই তিনি মারা যান। সেলে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত