Ajker Patrika

আমার পৃথিবীটাই নাই, ফল দিয়ে কী হবে: অনার্সের ফল প্রকাশের পর শহীদ ওয়াসিমের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ৪৯
আমার পৃথিবীটাই নাই, ফল দিয়ে কী হবে: অনার্সের ফল প্রকাশের পর শহীদ ওয়াসিমের মা

‘আমার পৃথিবীটাই নাই, ফলাফল দিয়ে কী হবে।’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ছেলের অনার্সের ফল শুনে তাঁর মা জ্যোৎস্না আক্তার এই প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় তিনি অঝোরে কাঁদতে থাকেন। গত ১৬ জুলাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় নিহত হন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম।

শহীদ ওয়াসিম আকরাম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী ছিলেন। অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে অন্য সব শিক্ষার্থীর মতো তিনিও তাতে অংশ নেন। গত ১৬ জুলাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার শিকার হয়ে নিহত হন ওয়াসিম। গতকাল বুধবার তাঁর পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে।

জ্যোৎস্না আক্তার বলেন, ‘কত দিন ছেলেকে দেখি না, কথা হয় না। পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটা হারিয়ে গেছে। কোনো কিছুর বিনিময়েই তাকে আর পাওয়া যাবে না।’

গতকাল শহীদ ওয়াসিম আকরাম দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত জিপিএ ২.৯৩। অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। ওয়াসিমের সেই রেজাল্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে তাঁকে স্মরণ করছেন সহপাঠী ও বন্ধুরা।

চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অত্যন্ত নম্র-ভদ্র স্বভাবের ছিল ওয়াসিম আকরাম। গতকাল তাদের ফলাফল বের হয়েছে। ভালো রেজাল্ট করেছে সে।’
 
শহীদ ওয়াসিম আকরাম। ছবি: সংগৃহীতওয়াসিম আকরামের ফলাফল ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তাঁর বন্ধু জাহেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওয়াসিম অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদ করত। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিল সে। স্বৈরাচারী সরকারের ঘাতকের বুলেট তার জীবন প্রদীপ কেড়ে নিয়েছে।’

গত ১৬ জুলাই বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর স্টেশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ আগেই স্টেশন চত্বর দখলে নেন। সংঘর্ষ এড়াতে শিক্ষার্থীরা এক কিলোমিটার দূরে মুরাদপুরে সমবেত হন।

বেলা পৌনে ৩টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের অন্তত আট সদস্যকে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। ওই দিন অস্ত্রধারীদের গুলিতে ওয়াসিমসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অন্তত দেড় শ ছাত্র-জনতা।

ওয়াসিম ছাড়া গুলিতে নিহত বাকি দুজন হলেন নগরের ওমর গনি এমইএইচ কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন শান্ত ও ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী ফারুক হোসেন।

নিহত ওয়াসিম আকরামের সৌদিপ্রবাসী বাবা শফিউল আলম ও মা জ্যোৎস্না আক্তার। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ওয়াসিম দ্বিতীয়। ২০১৭ সালে কক্সবাজারের পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৯ সালে বাকলিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। পরে চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন।

ওয়াসিম নিহতের ঘটনায় গত ১৮ আগস্ট তাঁর মা জ্যোৎস্না আক্তার নগরের পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলসহ ১০৮ জনকে আসামি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘চড়ুইভাতি’র বিনিময়ে আগাম ভুট্টা রোপণ করছে ফুলবাড়ীর খুদে কৃষকের দল

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও দাদপুর এলাকায় প্রস্তুতকৃত জমিতে খুদে কৃষকেরা ভুট্টা রোপণ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও দাদপুর এলাকায় প্রস্তুতকৃত জমিতে খুদে কৃষকেরা ভুট্টা রোপণ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের শস্যভান্ডার খ্যাত ফুলবাড়ীতে শুরু হয়েছে আগাম জাতের ভুট্টা রোপণ, তবে শ্রমিক-সংকটে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন চাষিরা। একদল উদ্যমী খুদে কৃষক চড়ুইভাতির বিনিময়ে ভুট্টা রোপণে এগিয়ে আসায় দূর হয়েছে শ্রমিক-সংকট।

নদীর তীর, ধঞ্চে ও পাট কাটার পর প্রস্তুত করা জমিতে এখন চলছে ভুট্টা রোপণের কাজ। ভুট্টা চাষ সাধারণত সারা বছর করা গেলেও ভালো দাম পেতে অনেক কৃষক অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আগাম জাতের ভুট্টা রোপণ করেন। কিন্তু এই আগাম রোপণে শ্রমিক-সংকট, বীজ ও সারের ঊর্ধ্বগতি এবং বৈরী আবহাওয়া—নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছিল চাষিদের।

ভুট্টা রোপণের কাজ সাধারণত সকাল ও বিকেল—নির্দিষ্ট এই দুই সময়ে করতে হয়। শুধু অল্প সময়ের কাজের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক পাওয়া কঠিন, আবার তাঁদের মজুরিও অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোরদের কয়েকটি দল।

জানা যায়, ১০-১৫ জনের এই খুদে কৃষকের দল স্কুল ছুটির দিন বা স্কুলে যাওয়ার আগে-পরে ভুট্টা রোপণ করে দিচ্ছে। এতে একদিকে কৃষকের শ্রমিক-সংকট দূর হচ্ছে, অন্যদিকে শিশু-কিশোরেরা কৃষিকাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। এই কাজের বিনিময়ে পুরো দলকে চড়ুইভাতির মাধ্যমে পিকনিক খাওয়ানো হয় এবং তাদের স্কুলের টিফিনের জন্য কিছু বাড়তি টাকাও দেওয়া হয়।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও দাদপুর এলাকায় দেখা যায়, প্রস্তুতকৃত জমিতে সারি সারি হয়ে একদল খুদে কৃষক ভুট্টা রোপণ করছে। তাদের দলে রয়েছে একজন সরদার। সরদার মূলত কার জমিতে ভুট্টা রোপণ করবে তা ঠিক করে। কোনো জমিতে ভুট্টা রোপণ করতে হলে আগে সরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পাটের সুতলিতে ১৫ ইঞ্চি পরপর লাল রং করে বীজ রোপণের দূরত্ব ঠিক করা হয়েছে। দেড় হাত পরপর সুতলি ধরে ভুট্টার লাইনের দূরত্ব ঠিক করছে সরদার। অন্য সদস্যরা পাশাপাশি সারবদ্ধ হয়ে সুতলিতে দেওয়া লাল দাগের নিচে বীজ রোপণ করছে। এভাবে এক বিঘা জমি মাত্র এক ঘণ্টায় রোপণ করছে। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভুট্টা রোপণ করে তারা। এই সময়ে ৪-৫ বিঘা জমি রোপণ করতে পারে। অন্যান্য দিন সকালে দুই ঘণ্টা ও বিকেলে দুই ঘণ্টা ভুট্টা রোপণ করে তারা।

খুদে কৃষক সিয়াম, আকাশ, মাহিম, রিফাতের ভাষ্য, ‘আমরা লেখাপড়ার পাশাপাশি ভুট্টা রোপণ করি। জমির মালিক আমাদেরকে সকালে হোটেলে খিচুড়ি খাওয়ান। এ ছাড়াও ৫০-১০০ টাকা করে দেন। যা দিয়ে আমাদের স্কুলের টিফিনের টাকা হয়ে যায়। ভুট্টা রোপণ শেষ হলে বড়সড় চড়ুইভাতির আয়োজন করেন। আমাদের মূল আকর্ষণ ওই চড়ুইভাতি। অল্প সময়ের কাজ বলে মা-বাবা কিছু বলে না। কোনো কাজই ছোট নয়, আমাদেরও অভিজ্ঞতা হলো।’

কথা হয় ভুট্টাচাষি মামুনুর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোট যমুনা নদীর তীরে প্রতিবছর ১৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। আগাম ভুট্টা ভালো দামে বিক্রি হয়। কিন্তু এ সময় শ্রমিক-সংকট থাকায় প্রতিবেশী খুদে কৃষকেরা ভুট্টা রোপণে সাহায্য করে। এতে শ্রমিক-সংকট দূর হয়, ভুট্টা রোপণে খরচ কমে। সবাই মিলেমিশে চড়ুইভাতি করি। চড়ুইভাতিতে অনেক ছেলেমেয়ের মা-বাবাও অংশগ্রহণ করে, এতে অনেক আনন্দ হয়। পাশাপাশি বাড়তি অল্প কিছু টাকা পায়, তা দিয়ে তাদের স্কুলের টিফিন খরচ হয়ে যায়।’

দাদপুর এলাকার শামিম হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সময়ে শ্রমিক পাওয়া অনেক কঠিন। তাই স্কুল ছুটির দিনে প্রতিবেশী ভাই-ভাতিজাদের দিয়ে ১ বিঘা জমির ভুট্টা লাগিয়েছি। এতে তারা ছোট থেকে কৃষিকাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা পেল। তাদেরকে পিকনিকের খরচ করে দিয়েছি। ওরা ওদের মতো করে চড়ুইভাতি করে আনন্দ করেছে।’

অভিভাবকেরা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে প্রায় ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেট আর মোবাইলে আসক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন ভুলে যাচ্ছে। এর কুফলে আনেকের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ছে। তার চেয়ে ছুটির দিনে অবসর সময়ে যে সময় খেলাধুলা করে, সে সময় কৃষিকাজে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া সকলে মিলে একসঙ্গে চড়ুইভাতি করে আনন্দ-উল্লাস করছে। এতে কৃষিকাজের বাস্তব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ফুলবাড়ী উপজেলায় এবার ৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভুট্টা মূলত সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে উপযুক্ত সময় হচ্ছে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত। ভুট্টা রোপণের যান্ত্রিকীকরণ এখনো সহজলভ্য না হওয়ায় শ্রমিক-সংকট থাকতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নীলফামারী জেলা সদরের রেললাইন থেকে মনিফা বেগম (৫০) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের ঢেলাপীর কাদিখোল নামক স্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মনিফা বেগম সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর গ্রামের মোজাফফর হোসেনের স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, আজ সকালে সৈয়দপুর-নীলফামারী রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী ঢেলাপীর-সংলগ্ন কাদিখোল থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ পথে চলাচল করা কোনো একটি ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে তিনি নিহত হয়েছেন। অজ্ঞাত অবস্থায় লাশ উদ্ধারের পর তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নিহত নারীর পারিবারিক সূত্র জানায়, মনিফা বেগম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছেন। প্রায় সময় কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর আজ সকালে তাঁর লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন নবী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত বিষয়সমূহ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টঙ্গীতে তুলার গুদামে আগুন, নিয়ন্ত্রণে সাত ইউনিট

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৬
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি তুলার গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের মোট সাতটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে কাজ করছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে মিলগেট এলাকার ’নিউ মন্নু ফাইনস কটন মিলস লিমিটেড’ নামক কারখানার ভেতরে থাকা একটি অস্থায়ী তুলার গুদামে আগুনের সূত্রপাত হয়। হঠাৎ গুদাম থেকে ঘন ধোঁয়া ও আগুনের লেলিহান শিখা বের হতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয় টঙ্গী ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট, গাজীপুর সদর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. শাহিন আলম বলেন, ‘গুদামে প্রচুর তুলা থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে আশপাশের অন্যান্য স্থাপনা ও গুদামে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।’

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের প্রাথমিক কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

‎স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ আগুন লাগার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তাপে আশপাশের দোকান ও বাড়ির মানুষ দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে শহীদ মিনারে প্রাথমিকের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। আজ শনিবার সকাল থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি চলছে।

শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো— চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে’ বলে জানিয়ে শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘২০ হাজারের বেশি শিক্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষকেরা আসছেন, অনেকে এখন পথে। আমি সরকারি প্রাথমিকের সব শিক্ষককে এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাকি সংগঠনগুলো হলো, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি ও সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকেরাও।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন।

গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকেরা।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই তিন দাবি মানা না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি বা ঘোষণা না আসলে পরীক্ষা বর্জন এবং ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দিয়েছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত