Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও চবি প্রক্টরের অপসারণ দাবি

অনলাইন ডেস্ক
শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও চবি প্রক্টরের অপসারণ দাবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাঁরা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, নিরপেক্ষ তদন্ত ও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এদিকে একই দাবিতে আজ দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টরের অবমাননাকর বক্তব্য তাঁর দায়িত্বশীলতার সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে এমন মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এমন নারী অবমাননাকারী প্রক্টরের কাছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা কখনোই নিরাপদ নয়।

তাঁরা আরও জানান, ৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ছাত্রী হলের সামনে মব সৃষ্টি করে ‘নৌকা’ ভাঙাকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তাতে এক নারী শিক্ষার্থী উপস্থিত সহকারী প্রক্টরের গায়ে হাত তোলেন। এ ছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের অপ্রস্তুত অবস্থায় ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকেরাও হেনস্তার শিকার হন।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, দুদিনের মধ্যে কোনো শোকজ নোটিশ বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীকে আজীবন ও নয়জনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এটি অন্যায় ও অগ্রহণযোগ্য।

তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে এবং সহকারী প্রক্টর ছাত্রীদের ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ বলে গালি দিয়েছেন। এমনকি তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মত দেওয়ায় প্রক্টর অত্যন্ত ঘৃণ্য ভাষায় ‘হানি ট্র‍্যাপ’-এর উল্লেখ করে যৌন হয়রানিমূলক পোস্ট দিয়েছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা অভিযোগ করেন, ফেসবুকে ছাত্রীদের বিরুদ্ধে স্লাট শেমিং করা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, মধ্যরাতে ছাত্রী হল প্রাঙ্গণে উন্মত্ত মবের প্রবেশ ও সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান শিক্ষাঙ্গনে নারীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ধরে। প্রশাসন যদি সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিত, তাহলে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তাঁরা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারীবিদ্বেষ বৃদ্ধি করছে এবং এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে।

প্রসঙ্গত, ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের নৌকা প্রতীক ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল ভাঙাকে কেন্দ্র করে হলটির নারী শিক্ষার্থীদের বাধার সম্মুখীন হন বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন নারী শিক্ষার্থীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার এক পর্যায়ে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলেন এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া সম্প্রতি ধর্মীয় কটূক্তি করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। তাঁদেরও বহিষ্কার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত