Ajker Patrika

দুই মাসের ব্যবধানে একই স্টেশনে ফের বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নিহত ১

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ৩০
বুধবার ভোর ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার ভোর ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের একটি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নিতে গিয়ে বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন তিনজন। আহতদের ঢাকা ও নোয়াখালীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আজ বুধবার ভোর ৪টার দিকে শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুই মাস আগেও এই স্টেশনে অন্য একটি বাসের একই দুর্ঘটনা ঘটে। সে সময় তিনজন মারা যান। আহত হন ২০ জন।

নিহত শ্রমিক আবুল কালাম (২২) পৌরসভার সাহাপুর এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি ওই ফিলিং স্টেশনের পাশে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন।

আহত হয়েছেন—আবুল হোসেন (৫৫), নাইম উদ্দিন (২৪) ও হোসেন আহমেদ (৩৮)। তাঁদের মধ্যে নাইম ও আবুল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাঁদের একজন ওই ফিলিং স্টেশনের শ্রমিক, অপর দুজন সিএনজি চালক বলে জানিয়েছেন ম্যানেজার মো. আল আমিন।

ফিলিং স্টেশন ম্যানেজার, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার ভোররাত পৌনে ৪টার দিকে গ্রীনলিফ ফিলিং স্টেশনে আল মদিনা পরিবহন নামে একটি বাস গ্যাস নিতে আসে। এ সময় বাসের সিলিন্ডারে গ্যাস ঢোকানোর সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়। এতে চারদিকে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে গেলে স্টেশনে থাকা সিএনজি অটোচালকেরা ছোটাছুটি করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান ওয়ার্কশপ শ্রমিক আবুল কালাম। আহত হন তিনজন।

পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত তিনজনকে ঢাকা ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে নাইম ও আবুল হোসেনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন।

বুধবার ভোর ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার ভোর ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস নিচ্ছিলেন তাঁরা। হঠাৎ আল মদিনা পরিবহন নামে একটি বাস ফিলিং স্টেশনে এসে লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি গ্যাস নিতে চলে যায়। এ সময় পাম্পের অপারেটর বাসের গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস দিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে গ্যাস সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডারের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এর মধ্যে একজন মারা যায়। তিনজন আহত হয়। তবে বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’

সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আহতদের মধ্যে দুজনের পা ও একজনের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনো সড়কে যেন ফিটনেসবিহীন কোনো পরিবহন চলাচল করতে না পারে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর রাতে এই গ্যাস পাম্পে মেঘনা পরিবহন নামে একটি বাসে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে সদর উপজেলার চরমনসার বটু মিয়ার ছেলে সুমন হোসেন, বাঞ্ছানগর এলাকার সুজা মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ মিয়া ও হৃদয় হোসেনসহ তিনজন মারা যায়। এ সময় আহত হয় ২০ জন। এই নিয়ে গত দুই মাসে এই গ্যাস পাম্পে দুটি দুর্ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত