Ajker Patrika

চট্টগ্রাম নগরী: সন্ত্রাসীরা খুনোখুনিতে, পুলিশ আছে হুংকারে

  • বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে।
  • রাজনৈতিক দলের কোন্দলের বলি কয়েকজন।
  • সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র ব্রাশফায়ারের নির্দেশ দিচ্ছেন সিএমপি কমিশনার।
  • খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জনমনে।
সবুর শুভ, চট্টগ্রাম    
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক নেতাদের বিরোধ এবং চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে একের পর এক লাশ পড়ছে চট্টগ্রামে। বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটছে আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে। রাজনৈতিক দলের কোন্দলের বলিও হয়েছেন কয়েকজন। এত খুনোখুনির পরেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা হুংকারেই সীমাবদ্ধ। সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র ব্রাশফায়ারের নির্দেশ দিচ্ছেন সিএমপি কমিশনার, খুনিরা আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জনমনে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের কাছে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবলীগ কর্মী মো. আনিস এবং মাসুদ কায়সারকে। এই দুই হত্যাকাণ্ডের জন্য নগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে প্রধান আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ আলী (বড় সাজ্জাদ) ভারতে বসে এই দুজনের লাশ ফেলার নির্দেশ দেন।

চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ থানার চালিতাতলী এলাকায় ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় গুলিতে নিহত হন শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে চট্টগ্রাম-৮ আসনের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে যাওয়া বাবলাকে সেদিন কয়েক শ মানুষের মধ্যেই ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের পরিচয় প্রকাশ কিংবা মূল হত্যাকারীদের ধরতে পারেনি পুলিশ।

বাবলা হত্যার পরদিন একই এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালককে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। ওই অটোরিকশাচালক মাদক বিক্রির বিরোধিতা করছিলেন বলে জানা গেছে। একই স্থানে পরপর দুবার গুলির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এক নারীকে দিয়ে হানিট্র্যাপে ফেলে গত ২৫ মে পতেঙ্গায় একসময়কার সন্ত্রাসী মো. আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবরকে প্রকাশ্যে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আকবর মারা যান। আকবর নগরের বায়েজিদ এলাকার পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, আকবরের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। আকবর সরোয়ার হোসেন বাবলার সহযোগী ছিলেন। আকবর হত্যার পর তাঁর পরিবার পতেঙ্গা থানায় ১১ জনকে আসামি করে মামলা করে। র‍্যাব এরই মধ্যে বড় সাজ্জাদের

ভাই ওসমান আলী ও ভাতিজা আলভিনকে গ্রেপ্তার করে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক অমিতাভ দাস জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি। মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও দুজন বর্তমানে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

এর আগে বাকলিয়া এক্সেস রোডে গত ২৯ মার্চ একটি প্রাইভেট কারে থাকা দুজনকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩২) সরোয়ার হোসেন বাবলার অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তখন একই গাড়িতে সরোয়ার হোসেন বাবলাও ছিলেন। সন্ত্রাসীদের টার্গেট বাবলা থাকলেও সেদিন তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় গত ২৭ অক্টোবর রাজনৈতিক ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত হন জিয়াউদ্দিন চৌধুরী কলেজের ছাত্রদল কর্মী মো. সাজ্জাদ (২২)। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, সেদিন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা ও সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নিহত সাজ্জাদ ছিলেন এমদাদুলের পক্ষের সমর্থক।

এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, ‘এই মামলায় আমরা এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছি এবং কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছি। মামলাটি এখন ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

গত বছরের ২১ অক্টোবর বিকেলে চান্দগাঁওয়ের অদূরপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন এক ব্যবসায়ীর পুত্র আফতাব উদ্দিন তাহসিন। ৭ নভেম্বর রাতে নগরের হালিশহর মাইজপাড়া এলাকায় মোটরসাইকেলে করে আসা কয়েকজন যুবকের ‘ছুরিকাঘাতে’ মো. আকবর (৩৫) এক যুবক খুন হন।

নগরের একের পর এক হত্যাকাণ্ড এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে মূল্যায়ন জানতে চাইলে সিএমপির মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার আমিনুর রশিদ বলেন, ‘প্রতিটি ঘটনাকে আমরা স্পর্শকাতর হিসেবে নিয়ে তদন্ত করছি। অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। যারা পলাতক, তাদের ধরার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিলের প্রস্তুতি, আটক ৪৪

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লায় আটক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় আটক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের মিছিলের প্রস্তুতির সময় পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪৪ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) ভোরে নগরীর টমছম ব্রিজ, ঝাউতলা ও বাদুড়তলা এলাকায় ছত্রভঙ্গ অবস্থায় ২৯ জনকে আটক করা হয়। একই দিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও স্থানে পৃথক অভিযানে আরও ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাশেদুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নগরীতে মিছিল বের করার চেষ্টা করছিলেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে পুলিশ তৎপর ছিল এবং তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, সকাল ৬টার দিকে টমছম ব্রিজ এলাকায় সংগঠনটির একটি দল মিছিলের প্রস্তুতি নিলে পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা ধাওয়া দিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে ২৯ জনকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ব্যানার, লাঠি ও লাইটার জব্দ করা হয়। পরে অভিযানে পুলিশের জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগও অংশ নেয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী আরও জানান, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, ভাঙ্গুরা, চান্দিনা থেকে একজন করে এবং নাঙ্গলকোট থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে। নগরীতে আটক ২৯ জনসহ মোট ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ: সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক

মাদারীপুর প্রতিনিধি
মহাসড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
মহাসড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের মস্তফাপুরে ককটেল বিস্ফোরণ এবং গাছ ফেলে সড়ক অবরোধের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) সকালের দিকে এই অবরোধের সৃষ্টি হয়। বেলা ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও পুলিশের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গা ব্রিজ ও কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ডসহ প্রায় আটটি স্থানে সড়কের পাশে থাকা গাছ কেটে ফেলে অবরোধ করা হয়। এতে মহাসড়কের উভয় দিকে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবি ও সোমবার (১৬ ও ১৭ নভেম্বর) শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য রোববার সকাল থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের আটটি স্থানে গাছ ফেলেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁরা ২০টির মতো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেন। পরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।

মহাসড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
মহাসড়কে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এই ঘটনায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক থেকে গাছগুলো অপসারণ করে পুলিশ ও মাদারীপুর জেলা সদর এবং কালকিনি উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাদের সঙ্গে গাছ সরানোর কাজে অংশ নেন স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বেলা ১১টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর শেখ আহাদুজ্জামান বলেন, ‘প্রথমে কালকিনি উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মহাসড়ক থেকে গাছ অপসারণের কাজ শুরু করে। পরে জেলা শহর থেকে আমরা যাই। গাছগুলো অপসারণ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।’

ডাসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. এহতেশামুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ডাসার ও কালকিনি থানার অংশে সাত-আট স্থানে সড়কের পাশে থাকা গাছগুলো কেটে ফেলে দিয়ে চলে গেছে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে আমি চারটি ককটেলের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। এখন যান চলাচল শুরু হয়েছে।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। যান চলাচল শুরু হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ক্ষতিগ্রস্ত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্ষতিগ্রস্ত বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের রাজেন্দ্রপুর বাজারের সার্ভিস লেনে দাঁড়িয়ে থাকা বলাকা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দিবাগত শেষরাতে এই ঘটনা ঘটে। আগুন দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে গাড়িটির আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তদের শনাক্তে তদন্ত চলছে। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতার বাড়িতে ভাঙচুর-ককটেল হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ভাঙচুর করা আসবাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভাঙচুর করা আসবাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ হাসান বিপ্লবের বাসায় ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া বাড়িটিতে ককটেল হামলাও চালানো হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ মিনিট বাড়িটিতে ভাঙচুর চলে।

খালেদ হাসান বিপ্লবের বাড়ি রাজশাহী নগরের মতিহার থানার কাজলা নতুন বউবাজার এলাকায়। হামলার সময় তাঁর বাবা হেলাল উদ্দিনকে (৬২) একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। আর মা খালেদা বেগমকে (৫৩) হাতুড়িপেটা করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

খালেদ হাসান বিপ্লব গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে বাড়িতে নেই। তাঁকে খুঁজতে গিয়ে চালানো এই হামলায় বাড়িতে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল, টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসিসহ বাড়ির সব আসবাব ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে ১০০ থেকে ১৫০ জন ব্যক্তি তাঁদের বাড়িতে আসে। তখন বাইরে মূল ফটকে তালা দেওয়া থাকায় তারা ঢুকতে পারছিল না। পরে ৩০-৪০ জন প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকে। এরপর ভবনের সিঁড়ির পাশের আরেকটি গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। দোতলায় উঠে তারা খালেদ হাসান বিপ্লবকে খুঁজতে থাকে।

খালেদকে না পেয়ে বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাধা দিতে গেলে খালেদের মা খালেদা বেগমকে হাতুড়িপেটা করা হয়। একপর্যায়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। খালেদের মায়ের অনুরোধে পরে আগুন না দিয়ে ওই ব্যক্তিরা ফিরে যায়। তবে নামার সময় নিচতলায় থাকা তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে যায় তারা। এ ছাড়া তখন বাড়িটি লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

পরিবারের সদস্যরা ঘটনার পর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশের টহল দলের তিনজন সদস্য রাতে বাড়িটি দেখে যান। তাঁরা খালেদা বেগমকে আগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে হাসপাতালে যেতে পারেননি খালেদা বেগম।

জানতে চাইলে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমি রাতে থানায় ছিলাম না। ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগও করেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত