Ajker Patrika

চট্টগ্রামের আনোয়ারা: রাস্তা খুঁড়েই ২ বছর পার, জনভোগান্তি চরমে

মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) 
বৃষ্টি হলেই হেঁটে চলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা এলাকার এ সড়কটি। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা
বৃষ্টি হলেই হেঁটে চলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা এলাকার এ সড়কটি। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা ও ফকিরপাড়ার প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ এখন এলাকাবাসীর জন্য এক স্থায়ী দুর্ভোগে রূপ নিয়েছে। দুই বছর আগে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। তখন থেকেই রাস্তাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এতে বর্ষা-কাদায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

গত মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে ও স্থায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তর সরেঙ্গা হজরত আবদুস সমদ শাহ সড়ক খুঁড়ে ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে মাটির সড়কটি। কাদামাটি মিশে একাকার সড়কে যাতায়াত করছেন ওই এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে কাঁচা রাস্তাটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা ও ফকিরপাড়ার প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। ২০২৩ সালের দিকে ঠিকাদার সড়কটি খুঁড়ে আর কোনো কাজ করেননি। এরপর থেকে সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি হলে পানি আর কাদায় ভরে যায় সড়কটি। এতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসমুখী কর্মজীবী, কৃষকসহ রোগীদেরও যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

আনোয়ারা উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, রায়পুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সরেঙ্গা হজরত আবদুস সমদ শাহ সড়কটি সংস্কারের জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে ২০২৩ সালে টেন্ডার পেয়ে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ২ হাজার ৮৮ মিটার সড়কের মধ্যে ৮৫০ মিটারে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করলেও এখন বাকি রয়েছে ১ হাজার ২৩৮ মিটারের কাজ।

স্থানীয় পূর্ব বরৈয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিতিয়া আকতার (১৪) বলে, ‘হেঁটে স্কুলে যেতে হয় আমাদের। বৃষ্টি হলে কাদামাটির মধ্যে যাতায়াত করতে খুবই কষ্ট হয়। অনেক সময় পা পিছলে পড়ে গেলে সে দিন আর স্কুলে যেতে পারি না।’

ওই এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ আবদুল মোনাফ (৫৫) বলেন, ‘সড়কটি খুঁড়ে ফেলে না রাখলে মানুষ অন্তত হাঁটাচলা করতে পারত; রোগী ও বৃদ্ধদের এতদূর হেঁটে আসার কষ্টটা হতো না। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন দ্রুত সড়কটির সংস্কারকাজ শেষ করা হয়।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সড়কটি দিয়ে দুই গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়া হাজারো মানুষের যাতায়াত। ঠিকাদারের অবহেলায় দুই বছর ধরে কষ্টের শেষ নেই এলাকাবাসীর। ঠিকাদারকে কাজটি শেষ করতে বললে তিনি ক্ষমতার দাপট দেখান সবার সঙ্গে।’

তবে ঠিকাদার মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কাজ চলমান রয়েছে।’

আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, শিগগিরই কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আকতার বলেন, ‘সড়কটির বিষয়ে জেনেছি, বর্ষায় মানুষ জনদুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দ্রুত কাজ শেষ করতে উপজেলা প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত