Ajker Patrika

চমেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম 
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ২৩: ৫৫
চমেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস আগামী ২৭ নভেম্বর (শনিবার) থেকে খুলছে। একই সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত থাকায় ৩১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৩ জন হলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী, বাকি ৮ জন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের অনুসারী। 

আজ মঙ্গলবার সকালে চমেকের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলর সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজ অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২৭ নভেম্বর থেকে চমেকে ক্লাশ-পরীক্ষা শিডিউল অনুযায়ী চলবে। ওই দিন থেকে ছাত্রী হোস্টেলও খোলা থাকবে। আগের দিন থেকে ছাত্রীরা হলে উঠতে পারবেন। তবে ছাত্র হোস্টেল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। একই সঙ্গে ৩১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। 
 
এক প্রশ্নের জবাবে সাহেনা আক্তার বলেন, ছাত্র হোস্টেলে নতুনভাবে বরাদ্দ দেওয়া হবে। বরাদ্দ পাওয়ার পর ছাত্ররা হোস্টেলে উঠতে পারবেন। 

এদিকে বহিষ্কার হওয়া ৩০ জনের মধ্যে ২৩ জন হলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী, বাকি ৮ জন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের অনুসারী। 

বহিষ্কার হওয়ার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮ জনকে ২৯ ও ৩০ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ছাড়াও আগের দুটি তদন্তে রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট থাকায় দুই বছরের জন্য সব শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, ৬২ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী এইচ এম আসহাব উদ্দিন, ৬০ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী অভিজিৎ দাশ, ৬২ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী সাদ মোহাম্মদ গালিব, ৩০ তম বিডিএসের সাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ৬২ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী সৌরভ বেপারী, ৩১ তম বিডিএসের জাহেদুল ইসলাম জিসান, ৩০ তম বিডিএসের ইমতিয়াজ আলম ও ৬১ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী সাইফ উল্লাহ। 

গত দুই বছরে বিভিন্ন ঘটনায় একাধিকবার জড়িত থাকার অভিযোগে ও ছাত্র সংসদের রুম ভাঙচুরে জড়িত থাকায় ৫৯ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম জয় ও ৬০ তম এমবিবিএসের শিক্ষার্থী অভিজিৎ দাশকে এক বছর ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়।  

২৯ ও ৩০ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তাঁরা হলেন, সাজু দাশ, রকিব উদ্দিন আহমেদ সিয়াম, জাকির হোসেন সায়েম, জুলকাফর মোহাম্মদ শোয়েব, মো. ইব্রাহিম খলিল, চয়ন দাশ অয়ন, ফারহান রহমান ফাহিম, মাহিন আহমেদ, শেখ ইমাম হাসান, সৌরভ দেবনাথ, মো. মইনুল হোসেন, মো. আরাফাত ইসলাম, মো. হাবিবুল্লাহ হাবিব, মো. আনিস, মো. এহসানুল কবির রুমন, মাহতাম উদ্দিন রাফি, মো. শামিম, মো. সাব্বির, মইন ভূইঁয়া, তৌফিকুল রহমান ইমন ও আল আমিন ইসলাম। 

এ ছাড়া অভিযুক্ত তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও মো. মাহাদি আকিব, উৎস দে রক্তিম ও এনামুল হাসান সিমান্তের ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলর সভায় বলা হয়। 

নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা ইমন সিকদার বলেন, ‘আমাদের ২৩ জন ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার ইচ্ছেকৃতভাবে তাঁদের বহিষ্কার করেছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’ 

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় তিন ছাত্র আহত হন। এর জের ধরে ৩০ অক্টোবর সকালে ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীদের সমর্থক মাহাদি আকিবের ওপর হামলা হয়। মাথায় আঘাত পেয়ে মাহাদি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ২১ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার বাড়িতে ফেরেন। ওই ঘটনার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত