কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবার ও তিন সন্তানের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো রোকেয়া বেগমকে। চেষ্টা করতেন নিজে কিছু করতে। বাড়িতে হাঁস-মুরগি, শাকসবজির আবাদ করেও টাকা জোগাড় করতেন। এই টাকা দিয়েই সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ ও চাহিদা মেটাতেন। নিজে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তিন সন্তানকেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন রোকেয়া। সেই সন্তানেরা এখন আলো ছড়াচ্ছেন দেশের হয়ে। আর সেই সাফল্যের পেছনে থাকা মা রোকেয়া বেগমকে ‘সফল জননী নারী’ হিসেবে পুরস্কৃত করেছে এবার জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইনের স্ত্রী রোকেয়া। ‘সফল জননী নারী’ শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন। গত শনিবার আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং বেগম রোকেয়া দিবসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায় সফল জননী নারীর শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।
সফল জননী রোকেয়া বেগম বলেন, ‘যুদ্ধের সময় অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেয় আমাকে। বিয়ের কয়েক বছর পর জীবনে নেমে আসে ঝড়। অবুঝ সন্তানদের রেখে অল্প বয়সে মারা গেছেন স্বামী। বিগত বছরগুলো সংগ্রাম আর দুঃখের যা ভোলার মতো নয়। নিজে পড়াশোনা করতে পারিনি। তাই সব সময় চেয়েছি আমার সন্তানেরা যেন ঠিকমতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। কখনো সন্তানদের ভালো কাপড় আর প্রাইভেট পড়াতে পারিনি। তবে পড়াশোনায় ঘাটতি যেন না থাকে, সেটা খেয়াল করতাম। এখন সন্তানেরা দেশের কাজে লেগেছে, সেটাই আমার জন্য আনন্দের। তাদের জন্য আমি কোনো দিন এমন সম্মান পাব, সেটা ভাবিনি। খুবই ভালো লাগছে।’
১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া রোকেয়ার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। বাবাহারা মেয়েটার বিয়ে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইনের সঙ্গে। বিয়ের পাঁচ বছর পর তাঁদের ঘরে আসে প্রথম কন্যাসন্তান। বছর না যেতেই মারা যায় সেই শিশু। এর পরই আবারও তাদের সংসার আলোকিত করে আসে আরেক কন্যাশিশু। কিছু দিনপর সেই শিশুও টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। রোকেয়ার দুঃখ যেন তাকে পিছু ছাড়ছে না।
বিয়ের ঠিক ১৬ বছরের মধ্যে তাদের সংসারে জন্ম নেন এক ছেলে ও দুই কন্যা। এর কয়েক বছর পরই প্যারালাইজড রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইন। ছোট্ট তিন শিশুকে নিয়ে বিধবা রোকেয়া পড়েন বিপাকে। আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন জীবনযুদ্ধে। সংসারের অভাবের মধ্যে তিন সন্তানের মধ্যে দুজনকে গড়ে তুলেছেন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার হিসেবে।
বড় মেয়ে আইরিন আকতার রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রয়েছেন রাজস্ব শাখার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে। ছেলে মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন শাখা) সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ছোট মেয়ে নাসরিন সোলতানা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ৩৯তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে ওসমানী মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি বিভাগের এমডিএমএসে অধ্যয়নরত।
মায়ের এই সম্মাননা প্রাপ্তিতে তাঁদের কেমন লাগছে প্রশ্নের জবাবে বড় মেয়ে আইরিন আকতার ও ছেলে মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী জানান, মাকে গর্বিত করার চেয়ে আনন্দের পৃথিবীতে আর কী হতে পারে! তবে বাবার মৃত্যুর পর মা যেভাবে ম্যাজিকের মতো তাঁদের গড়ে তুলেছেন, সেটা ভাবলে এখন অসম্ভব মনে হয়। বাবা বেঁচে থাকলে আজ ভীষণ খুশি হতো। মায়ের কারণে একেকজন একেক জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
নারী জাগরণের অগ্রদূত ও নারী অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া। বাস্তবে তো অনেক দূরের কথা, যখন বাঙালি নারীর স্বপ্ন বা চিন্তার স্বাধীনতাও ছিল না, তেমনি একটা সময়ে অবরোধপ্রথার বিরুদ্ধে এবং নারীমুক্তি ও নারী স্বাধীনতার দাবি তুলে ধরেন মহীয়সী এই নারী। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রংপুরের পায়রাবন্দে জন্ম গ্রহণ করেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে অবদান রাখায় পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে প্রতিবছর বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।
স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবার ও তিন সন্তানের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো রোকেয়া বেগমকে। চেষ্টা করতেন নিজে কিছু করতে। বাড়িতে হাঁস-মুরগি, শাকসবজির আবাদ করেও টাকা জোগাড় করতেন। এই টাকা দিয়েই সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ ও চাহিদা মেটাতেন। নিজে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও তিন সন্তানকেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন রোকেয়া। সেই সন্তানেরা এখন আলো ছড়াচ্ছেন দেশের হয়ে। আর সেই সাফল্যের পেছনে থাকা মা রোকেয়া বেগমকে ‘সফল জননী নারী’ হিসেবে পুরস্কৃত করেছে এবার জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইনের স্ত্রী রোকেয়া। ‘সফল জননী নারী’ শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন। গত শনিবার আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং বেগম রোকেয়া দিবসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায় সফল জননী নারীর শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।
সফল জননী রোকেয়া বেগম বলেন, ‘যুদ্ধের সময় অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেয় আমাকে। বিয়ের কয়েক বছর পর জীবনে নেমে আসে ঝড়। অবুঝ সন্তানদের রেখে অল্প বয়সে মারা গেছেন স্বামী। বিগত বছরগুলো সংগ্রাম আর দুঃখের যা ভোলার মতো নয়। নিজে পড়াশোনা করতে পারিনি। তাই সব সময় চেয়েছি আমার সন্তানেরা যেন ঠিকমতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। কখনো সন্তানদের ভালো কাপড় আর প্রাইভেট পড়াতে পারিনি। তবে পড়াশোনায় ঘাটতি যেন না থাকে, সেটা খেয়াল করতাম। এখন সন্তানেরা দেশের কাজে লেগেছে, সেটাই আমার জন্য আনন্দের। তাদের জন্য আমি কোনো দিন এমন সম্মান পাব, সেটা ভাবিনি। খুবই ভালো লাগছে।’
১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া রোকেয়ার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। বাবাহারা মেয়েটার বিয়ে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইনের সঙ্গে। বিয়ের পাঁচ বছর পর তাঁদের ঘরে আসে প্রথম কন্যাসন্তান। বছর না যেতেই মারা যায় সেই শিশু। এর পরই আবারও তাদের সংসার আলোকিত করে আসে আরেক কন্যাশিশু। কিছু দিনপর সেই শিশুও টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। রোকেয়ার দুঃখ যেন তাকে পিছু ছাড়ছে না।
বিয়ের ঠিক ১৬ বছরের মধ্যে তাদের সংসারে জন্ম নেন এক ছেলে ও দুই কন্যা। এর কয়েক বছর পরই প্যারালাইজড রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইন। ছোট্ট তিন শিশুকে নিয়ে বিধবা রোকেয়া পড়েন বিপাকে। আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন জীবনযুদ্ধে। সংসারের অভাবের মধ্যে তিন সন্তানের মধ্যে দুজনকে গড়ে তুলেছেন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার হিসেবে।
বড় মেয়ে আইরিন আকতার রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রয়েছেন রাজস্ব শাখার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে। ছেলে মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন শাখা) সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ছোট মেয়ে নাসরিন সোলতানা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ৩৯তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে ওসমানী মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি বিভাগের এমডিএমএসে অধ্যয়নরত।
মায়ের এই সম্মাননা প্রাপ্তিতে তাঁদের কেমন লাগছে প্রশ্নের জবাবে বড় মেয়ে আইরিন আকতার ও ছেলে মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী জানান, মাকে গর্বিত করার চেয়ে আনন্দের পৃথিবীতে আর কী হতে পারে! তবে বাবার মৃত্যুর পর মা যেভাবে ম্যাজিকের মতো তাঁদের গড়ে তুলেছেন, সেটা ভাবলে এখন অসম্ভব মনে হয়। বাবা বেঁচে থাকলে আজ ভীষণ খুশি হতো। মায়ের কারণে একেকজন একেক জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
নারী জাগরণের অগ্রদূত ও নারী অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া। বাস্তবে তো অনেক দূরের কথা, যখন বাঙালি নারীর স্বপ্ন বা চিন্তার স্বাধীনতাও ছিল না, তেমনি একটা সময়ে অবরোধপ্রথার বিরুদ্ধে এবং নারীমুক্তি ও নারী স্বাধীনতার দাবি তুলে ধরেন মহীয়সী এই নারী। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রংপুরের পায়রাবন্দে জন্ম গ্রহণ করেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে অবদান রাখায় পাঁচজন বিশিষ্ট নারীকে প্রতিবছর বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাঁদের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
৭ মিনিট আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হোমনা উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লা জেলা কমিটির আহ্বায়ক মো. সাকিব ও সদস্যসচিব মো. ইয়াছিন এ দুই কমিটির অনুমোদন দেন।
১৫ মিনিট আগেপাবনার ঈশ্বরদীতে দুই শিশুসন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের আসনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২১ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি। মাকসুদ হোসেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আজ বুধবার বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন
৩৪ মিনিট আগে