Ajker Patrika

‘গুলি কর’ বলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনায় ২ ভাড়াটে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) বদরুল আরেফিন ভূঁইয়ার গাড়িতে হামলার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (পশ্চিম) বিভাগ।

বান্দরবান সদর উপজেলার সিকদারপাড়া এলাকা থেকে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)। তাঁরা নগরের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পশ্চিম জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার দুজন এবং পলাতক একজনসহ মোট তিনজন হামলার ঘটনায় জড়িত। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলার জন্য তাঁদের ভাড়া করা হয়েছিল।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখানোর জন্য ‘এক ব্যক্তি’ টাকার বিনিময়ে ওই তিনজনকে ভাড়া করে এই ঘটনায় ঘটান। কী কারণে এবং কত টাকায় ওই ব্যক্তিদের ভাড়া করা হয়েছিল, সে বিষয়ে জানতে পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

পুলিশ ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, গত ৪ ডিসেম্বর সকালে প্রাইভেট কারে চড়ে অফিসে যাচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান খান ও বদরুল আরেফিন ভূঁইয়া। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা নগরের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় পৌঁছালে তিন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে হঠাৎ সামনে থেকে তাঁদের গতি রোধ করে। মুহূর্তের মধ্যে গাড়িতে হামলা ও কাচ ভাঙচুর শুরু করে তারা। তাদের একজনের হাতে চাপাতি ছিল। গাড়ির কাছে এসে প্রথমে চাপাতি দিয়ে গাড়িতে কোপ দেয় একজন। এ সময় তারা ‘গুলি কর, গুলি কর’ বলে চিৎকার করতে থাকে। হামলা ও গুলি করার হুমকির মুখে ওই দুই কর্মকর্তা কোনোমতে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পাশের একটি গলিতে আশ্রয় নেন।

হামলার পর কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ডবলমুরিং থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা হওয়ার পরই মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল ঘটনার সূত্র উদ্‌ঘাটন এবং হামলাকারীদের শনাক্তে কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে বান্দরবানের সিকদারপাড়া এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হামলার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরিকল্পনা করে এই হামলা চালানো হয়েছে।

ডিসি মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুজনের সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কোনো পূর্বশত্রুতা ছিল না। হামলাকারীদের কত টাকায় ভাড়া করা হয়েছিল, আমরা এখনো জানতে পারিনি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে যিনি ভাড়া করেছিলেন, তাঁর বিষয়ে তথ্য পেয়েছি। হামলার সময় যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি ওই (ভাড়া করা) ব্যক্তির। তদন্তের স্বার্থে তাঁর পরিচয় এই মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’

এদিকে হামলার পর কাস্টমস কর্মকর্তারা বলেছিলেন, অবৈধভাবে পণ্য খালাসে বাধা দেওয়ার কারণেই চট্টগ্রামে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁদের ধারণা। প্রায় ৪০ কোটি টাকা মূল্যের দুটি চালান জব্দ করার কারণে একটি সংঘবদ্ধ মহল তাঁদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...