Ajker Patrika

৭ দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশনে চবির ৯ শিক্ষার্থী

চবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৬
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশসহ ৭ দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশনে আছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৯ শিক্ষার্থী। অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে বাম সংগঠন ও কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এ কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে এ কর্মসূচিতে বসেন তাঁরা।

অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন—বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান, বাংলা বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।

বাকি পাঁচ দাবি হলো—নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, উদ্ভূত পরিস্থিতি ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীকে হয়রানি বন্ধ করা, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয় পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।

অনশনরত শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র বলেন, ’গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সাত দফা দাবি জানিয়েছিলাম। এ ছাড়া আমরা কয়েক দিন ধরে টানা আন্দোলন করছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের কোনো দাবি মেনে নিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে গতকাল থেকে অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম শাহ জাহান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে সাত দফা দাবি দিয়েছিলাম। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়। মূলত দাবির কিছুই পূরণ হয়নি। দাবি আদায়ে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে এখনো দেখা করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা আমাদের দাবিতে অটল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ ঠিক করার যথেষ্ট চেষ্টা করছি। তারা এখন এই পরিবেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে। যারা এসব বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়, তারা শিক্ষার্থীদের সমর্থন পাবে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের যে-কোনো যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করতেই পারে। আমরা তাদের দাবিগুলো পূরণের জন্য কাজ করছি। এটা চলমান আছে। তাদের এগুলো জানানোর পরও যদি তারা না বোঝে, তাহলে কী করা যেতে পারে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত