Ajker Patrika

মেরামতের অভাবে প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ চাঁদপুর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, চাঁদপুর
Thumbnail image
প্রায় ২ বছর ধরে বন্ধ চাঁদপুর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে যাওয়ায় শীত মৌসুমের শুরুতেও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে পড়েছে চাঁদপুরবাসী। অথচ সংকট সমাধানে দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। নিয়মিত মেরামতের জন্য বন্ধ হলেও প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। তবে চলতি বছরের শেষে কেন্দ্রটি চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের স্টিম টারবাইন ইউনিটের যন্ত্রগুলো ঢেকে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় এসব যন্ত্রাংশ অনেকটাই অবহেলায় পড়ে আছে। এভাবে পড়ে থাকায় যন্ত্রাংশগুলো অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান প্রকৌশলীরা।

শহরের গুনরাজদির বাসিন্দা মোস্তফা কামাল ও খান সড়কের বাসিন্দা সালাউদ্দিন বলেন, বিগত বছরগুলোতে শীতের আগে থেকেই লোডশেডিং কমেছে এবং শীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল। তবে এ বছর শীতের আগ থেকেই দিন ও রাতে লোডশেডিং অব্যাহত। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে শহরের উৎপাদনমুখী কারখানা ও গ্রামের সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে ১৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় ২০২৩ সালের মার্চে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বুস্টার যন্ত্রটিও বন্ধ হয়। দুই দফা মেরামত ও দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত মে মাসে ফের উৎপাদনে আসে ১০০ মেগাওয়াটের গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি। তবে গ্যাসের অভাবে শতভাগ উৎপাদনে যেতে পারছে না ইউনিটটি। আর দুই বছরেও মেরামত সম্পন্ন না হওয়ায় বন্ধ রয়েছে ৫০ মেগাওয়াটের স্টিম টারবাইন ইউনিট।

সেখানে কর্মরত কর্মকর্তারা বলেন, গ্যাস টারবাইনে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে ব্যয়, সেই একই ব্যয়ে স্টিম টারবাইন ইউনিটে বাড়তি ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হতো। বর্তমানে গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফুয়েল খরচ প্রায় ৪.২৫ পয়সা। দীর্ঘসময় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকায় এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, তবে চলতি বছরের শেষ দিকে স্টিম টারবাইন ইউনিটটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অবহেলায় পড়ে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবহেলায় পড়ে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কর্মকর্তারা আরও বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিটের যন্ত্রাংশ কেনা ও মেরামতের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার ডলার। এ ছাড়া স্টিম টারবাইনের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুরি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে কেন্দ্রের একটি টারবাইন ইউনিট কার্যকর আছে। স্টিম টারবাইন ওভার রোলিং এখন বন্ধ। এটির জন্য চায়নার একটি বিশেষজ্ঞ কোম্পানির সঙ্গে আমরা চুক্তিবদ্ধ আছি। তারা এসে এটি মেরামতের জন্য শিগগিরই কাজ শুরু করবে।’

অবহেলায় পড়ে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবহেলায় পড়ে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডের গুনরাজদি পাওয়ার হাউস এলাকায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করে চীনা কোম্পানি চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত