Ajker Patrika

ফের বাংলাদেশি ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি

কক্সবাজার প্রতিনিধি
ফের বাংলাদেশি ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি

কক্সবাজারের টেকনাফ–সেন্ট মার্টিন নৌরুটে বাংলাদেশি ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি ছোড়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ২টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে যাত্রীবোঝাই করে ট্রলার দুটি টেকনাফে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের বদরমোকাম এলাকায় নাফ নদীর মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।

গত জুনের প্রথম সপ্তাহে নাফনদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ট্রলার লক্ষ্য করে কয়েক দফায় গুলি ছোড়া হয়। এরপর ১২ জুন থেকে টেকনাফ–সেন্ট মার্টিন নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন।

এরপর সম্প্রতি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে সেন্টমার্টিন যাতায়াত স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু আজ এ রুটেও গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটল।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে ৭৫ জন যাত্রী নিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে রওনা করে এফবি নাইম ও এফবি রাশেদ নামে দুটি ট্রলার। ট্রলার দুটি বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগর অতিক্রম করে নাফ নদীর মোহনায় প্রবেশ করছিল বেলা ২টার দিকে।

এ সময় মিয়ানমার থেকে একের পর এক গুলি বর্ষণ করা হয়। আধা ঘণ্টা ধরে ট্রলার দুটিকে লক্ষ্য করে থেমে থেমে গুলি ছোড়া হয়। এতে কোনো যাত্রী হতাহত না হলেও ট্রলারে গুলি লেগেছে। বেলা আড়াইটার দিকে ট্রলার দুটি শাহপরীর দ্বীপের জেটিতে ভিড়েছে।

আবদুর রশিদ বলেন, মিয়ানমার জলসীমা থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ট্রলার দুটি চলাচল করছিল। এরপরও মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণ করায় চালকসহ দ্বীপবাসীর মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

কারা গুলি করছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি জানিয়ে আবদুর রশিদ বলেন, মিয়ানমারের ওপারের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। মনে হচ্ছে তারাই গুলি করেছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার থেকে সেন্টমার্টিনের দুটি ট্রলারে আবারও গুলি বর্ষণের বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিয়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে সাড়ে ৫ মাস ধরে সংঘাত চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তের অধিকাংশ এলাকা বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কয়েক দিন ধরে মংডু টাউনশিপ ঘিরে তুমুল লড়াই চলছে।

এর জেরে ১ জুন বিকেলে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে পণ্য ও ১০ জন যাত্রী নিয়ে রওনা হওয়া একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে গুলি ছোড়া হয়।

৫ জুন সেন্টমার্টিনের স্থগিত হওয়া একটি কেন্দ্রে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদের ফলাফল নির্ধারণের জন্য ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচন শেষে ফেরার পথে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ট্রলার লক্ষ্য করে একই পয়েন্টে ফের গুলি করা হয়। ৮ জুন আরও এক ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় নাইক্ষ্যংদিয়ায়।

সবশেষ ১১ জুন একটি স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ হয়। প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ জলসীমায় ঘটেছে। গুলিবর্ষণের এসব ঘটনায় হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট ও জরুরি আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।

১২ জুন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে যাত্রীদের আসা-যাওয়া ও পণ্য নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ১৩ জুন থেকে টেকনাফের সাবরাং মুন্ডার ডেইল উপকূল ব্যবহার করে শুরু হয় যাত্রীদের আসা-যাওয়া।

১৪ জুন কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজে করে দ্বীপে খাদ্য ও নিত্যপণ্য পাঠানো হয়। পরে বিকল্প পথ হিসেবে শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিনে সীমিত পরিসরে কিছু নৌযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এ নৌপথ দিয়েই ৭ জুলাই থেকে সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল করছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত