Ajker Patrika

বদল হচ্ছে ঘরের নকশা

মো. আবু বকর ছিদ্দিক, পার্বত্য অঞ্চল থেকে
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ১১: ১৪
বদল হচ্ছে ঘরের নকশা

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য পার্বত্য এলাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্পের নকশার পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ঘর নির্মাণের মালামাল পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ বিবেচনায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উপযোগী করে ম্যাছাং ঘরের প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি।

প্রধানমন্ত্রীর জমিসহ ঘর নির্মাণ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বান্দরবান জেলায় প্রথম পর্যায়ে ২ হাজার ১০০টি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন জানান, প্রথম পর্যায়ের ঘরগুলো ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এই টাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় এ ঘর নির্মাণ কঠিন। তাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা যাতে ম্যাছাং ঘরের নিচে পশু-পাখি পালন করতে পারেন, এ জন্য প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।

খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে প্রথম পর্যায়ে ৩২টি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসিন আজকের পত্রিকাকে জানান, উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়ন একেবারে দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। সেখানে একটি ঘর নির্মাণের মালামাল বহনে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা চলে যায়। বরাদ্দের ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার থেকে এই খরচ চলে গেলে ঘর নির্মাণ কষ্ট হয়ে যায়।

একইভাবে রামগড়ের ইউএনও মু. মাহামুদ উল্ল্যাহ মারুফ বলেন, ‘দুর্গম এলাকায় আপাতত হতদরিদ্রদের জন্য জমিসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করছি না। কারণ, ঘর নির্মাণের সামগ্রী বহনে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ তৃতীয় দফায় প্রকল্প ব্যয় আরও ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেশি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা—রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ২৬টি উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নই দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। গৃহহীন হতদরিদ্রদের বেশির ভাগই ওই এলাকায় বাস করেন। এসব এলাকায় ঘর নির্মাণের ভারী মালামাল পরিবহনের উপযোগী রাস্তা নেই।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১০টি উপজেলার সদর ছাড়া বাকি ৯টি উপজেলাই দুর্গম এলাকা। এর বেশির ভাগ ইউনিয়নের সঙ্গে স্থলপথের যোগাযোগ নেই। বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বড়কল, লংগদু, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ির বেশির ভাগ এলাকায়ই যোগাযোগ অনেক কঠিন।

বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৮০টি ঘর তৈরি সম্পন্ন করে উপকারভোগী পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৮০টি ঘরের কাজ চলমান আছে। বাঘাইছড়ির ইউএনও মো. শরীফুল ইসলাম জানান, দেশের সবচেয়ে বড় এই উপজেলা ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ১৪৪ কিলোমিটার। এখানে কোনো ইটভাটা না থাকায় এত দূর থেকে ইট আনতে হয়।

শরীফুল ইসলাম জানান, উপজেলা সদর থেকে সাজেক ইউনিয়নের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। তাও আবার পাহাড়ি দুর্গম পথ। অন্য ইউনিয়নগুলোর দূরত্ব ১৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার। অধিকাংশ স্থানে যাওয়ার সড়কপথ নেই।

ইউএনও শরীফুল বলেন, সদর থেকে এসব ইউনিয়নে ঘর নির্মাণের সামগ্রী পরিবহনে খরচ প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। ফলে ঘর তৈরির বরাদ্দের ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার বিরাট অংশ পরিবহনেই শেষ। বাকি টাকায় একটি দুর্যোগ সহনীয় পাকা ঘর তৈরি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে পার্বত্য অঞ্চলে পানির সংকট তো আছেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত