Ajker Patrika

পটিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার নিয়ে শুরু হয়েছে ধূম্রজাল 

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ২২: ২১
পটিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার নিয়ে শুরু হয়েছে ধূম্রজাল 

চট্টগ্রামের পটিয়ায় শহীদুল ইসলাম (২৬) নামে ছাত্রলীগের এক নেতার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছিলেন বলে দাবি করে আসছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। কিন্তু শুক্রবার রাতে পটিয়া হাসপাতাল থেকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাত ১২টার দিকে তড়িঘড়ি করে দাফন করার জন্য অতি উৎসাহী হয়ে পড়ে। তখন নিহত ব্যক্তির সহকর্মীদের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় তাঁরা ব্যাপারটি পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদারকে জানান। পরে রাত ২টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সুরতহাল শেষে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। আজ শনিবার দুপুরে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়ি পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন ইউনিয়নে আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন করা হয়। 

শহীদুল ভাটিখাইন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি উপজেলার ভাটিখাইন ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল খালেক চেয়ারম্যানের বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। 

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিবারের সবার অগোচরে নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঝুলন্ত মরদেহটি জানালা দিয়ে এক শিশু দেখতে পায়। পরে পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা উদ্ধার করে। এরপর প্রথমে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত হওয়ায় চমেক হাসপাতালে পাঠান। পরে তাঁকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক শহীদকে মৃত ঘোষণা করেন। 

অপরদিকে নিহত শহীদুল ইসলামের সহপাঠী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য আজ শনিবার বিকেলে থানায় যান। পুলিশ তাঁদের অভিযোগটি গ্রহণ না করে অপমৃত্যুর মামলার অজুহাতে তাঁদের ফিরিয়ে দেন। 

এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। 

জানা গেছে, ভাটিখাইন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঙ্গে পরিবারের মনোমালিন্য ছিল। তাঁর বাবা দুইটি বিয়ে করেন। শহীদ দ্বিতীয় ঘরের সন্তান। প্রথম ঘরের তিন ছেলে ও চার মেয়ে এবং দ্বিতীয় ঘরে ছাত্রলীগ নেতা শহীদুল ইসলামসহ চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। 

পটিয়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সামিহা রওশন বলেন, রাত ৭টা ৫০ মিনিটে শহীদুল ইসলাম নামের একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ সময় আমরা তাঁর ইসিজি করে নিশ্চিত হই হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন। 

শহীদের বড় ভাই মো. শাহজাহান বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমি পটিয়া সদরে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলাম। আমার এক ভাইয়ের শ্যালিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল শহীদের। সে কারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।’ 

শহীদের সহপাঠী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, পরিকল্পিতভাবে মেধাবী ছাত্রনেতা শহীদকে হত্যা করা হয়েছে। শহীদ প্রায় সময় সহপাঠীদের কাছে তাঁর ভাইদের অত্যাচার ও বিভিন্ন সমস্যার কথা বলতেন। বড় ভাইয়ের শ্যালিকার সঙ্গে প্রেম থাকার ইস্যুতে মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তাঁর পরিবার। শহীদের সঙ্গে সহপাঠী কারও কোনো দিন ঝগড়া হয়নি।’ 

পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে রাতে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত