Ajker Patrika

ছয় শিক্ষার্থীর চুল কাটা সেই শিক্ষক এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ২২: ৫২
ছয় শিক্ষার্থীর চুল কাটা সেই শিক্ষক এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ছয় মাদ্রাসা ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে তিনি রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। 

অভিভাবকের মামলায় হাজতবাসের পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সেই মাদ্রাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। তিনি বামনী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির এবং হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক। 

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে মঞ্জুরুল কবিরের পক্ষে স্থানীয় ৮/১০ জন জামায়াত নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। আগামী ২৮ নভেম্বর এই ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন। 

রিটার্নিং কর্মকর্তা কেএম মোস্তাক আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, কয়েক ব্যক্তি এসে মঞ্জুরুল কবির নামে এক প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তিনি বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। 

গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান মঞ্জুরুল কবির। এ সময় তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করেন স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। পরদিন ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানান তিনি। ছাত্রদের চুল কাটা ও জেলে যাওয়ার ঘটনাকে নির্বাচন কেন্দ্রীক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন এ শিক্ষক। অবশ্য কারও নাম তিনি উল্লেখ করেননি। 

বুধবার মঞ্জুরুল কবিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন জামায়াতের নেতারাভিডিও বার্তায় মঞ্জুরুল কবির বলেন, আমরা শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি প্রধান্য দিই। আমাদের এখানে নৈতিকতা সংরক্ষণ কমিটি আছে। আমি সেই কমিটির সদস্য। আমরা বাচ্চাদের চুল, নখ, ড্রেস, দাঁত এগুলো শিক্ষার পাশাপাশি দেখি। এগুলো আদবের একটি অংশ মনে করি। সে হিসেবে কিছু বাচ্চাকে এক সপ্তাহ ওয়ার্নিং দেওয়ার পরেও চুল বড় রাখায় কয়েকজনের চুল কেটে দিয়েছি। বিষয়টা আমরা খুব পজিটিভলি দেখেছি। 

তিনি বলেন, আইনের বিষয়টা আমাদের ওইভাবে মাথায় ছিল না। এটা যে আইনের প্রবলেম, বিষয়টা আমাদের ধারণায় ছিল না। বিষয়টা নিয়ে যারা কাদা ছোঁড়াছুড়ি করেছেন, তাঁদের প্রতি আমার রাগ নেই। আমি গ্রেপ্তার হয়েছি। আইনিভাবে আবার জামিনে মুক্তি পেয়েছি।’ 

৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তার এক পর্যায়ে মঞ্জুরুল কবির বলেন, ‘শিক্ষকেরা স্বাধীনভাবে এখন আর পাঠদান করাতে পারছে না।’ 

সম্প্রতি শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দশম শ্রেণির (দাখিল) ছয় ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে কাচি দিয়ে মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দেন। এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ৮ অক্টোবর সকাল থেকে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওই রাতেই শিক্ষক মঞ্জুরুলকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীর পাড় এলাকা থেকে আটক করে রায়পুর থানা পুলিশ। 

মধ্যরাতে ওই মাদরাসার ছাত্র শাহাদাত হোসেনের মা শাহেদা বেগম বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৯ অক্টোবর বিকেলে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২৫ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান শিক্ষক মঞ্জুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত