Ajker Patrika

মাছ ধরার ‘বাইচ’ উৎসব

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
Thumbnail image
মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে কয়েক শ মানুষ। গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের মেদির হাওরের আটাউরি বিলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনেকে এসেছে ডিঙি নৌকা নিয়ে। বিভিন্নজনের হাতে বিভিন্ন জাল। কেউ পেয়েছে ছোট-বড় পাবদা, সরপুঁটি, ট্যাংরা, বাতাসি, বোয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ। কয়েক শ মানুষের এমন মাছ ধরার উৎসব চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার মেদির হাওরের আটাউরি বিলে। গতকাল বুধবার শুরু হওয়া এই উৎসবের নাম ‘বাইচ’। তিন দিনব্যাপী মাছ ধরার এ উৎসব চলবে আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক শ মানুষ মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে আটাউরি বিলে জড়ো হয়েছে। যে যেভাবে পারছে মাছ ধরছে। কেউ কম পেয়েছে, কেউবা বেশি। তবে কারও মুখে দুঃখের ছাপ নেই, আছে উৎসবের আনন্দ।

জানা গেছে, বছরের পর বছর মাছ ধরার উৎসব চলছে বিলটিতে। প্রতিবছরের মতো এবারও তিন দিনব্যাপী মাছ ধরার এ উৎসবে মেতেছেন বিলের আশপাশের বাসিন্দারা। মাছ ধরতে ছুটে এসেছে উপজেলা প্রান্তের মানুষও। পাশের জেলা থেকেও কেউ কেউ এসেছে।

মাছ ধরতে আসা হরিপদ, নিপেন্দ্র, হারাধনসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, ‘উৎসবমুখর পরিবেশে মাছ শিকার করছি। ছোট-বড় দেশীয় প্রজাতির পাবদা, সরপুঁটি, ট্যাংরা, বাতাসি, বোয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের বিপুল পরিমাণ মাছ পাওয়া যায় এই বিলে। তবে এ বছর মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। তারপরও এটি আমাদের মাছ ধরার উৎসব। তাই বেশ আনন্দিত।’

নাসিরনগর ভিটাডুবি ধীবর মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দাস বলেন, ‘বছরের এ সময়ে মেদির হাওরের আটাউরি বিল সমিতির সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বিলটি খনন না করলে ভরাট হয়ে ভবিষ্যতে হয়তো মাছ ধরার এ উৎসব হারিয়ে যাবে। আমরা চাই, দ্রুত যেন বিলটি খনন করা হয়।’

হবিগঞ্জের বাঘাসুরা থেকে মাছ ধরতে আসা লোকমান মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর এখানে মাছ ধরতে আসি। অন্যান্য বছর অনেক মাছ পেলেও এবার তুলনামূলক মাছের সংখ্যা কম।’

নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, ‘মাছ ধরা কেন্দ্র করে জেলেপল্লিতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতিবছর বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী বছরের মাঝামাঝি সময়ে জেলেরা আটাউরি বিলে মাছ ধরতে নামেন।’

উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মেদির হাওরের দৈর্ঘ্য ৫০০ একরের বেশি। এ হাওরের আটাউরি বিল থেকে প্রতি মৌসুমে অন্তত ১০ কোটি টাকার দেশীয় প্রজাতির মাছ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। এসব মাছ থেকে চ্যাপা শুঁটকি তৈরি করে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়ে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত