Ajker Patrika

কুমিল্লায় সালিসি বৈঠকে যুবককে কুপিয়ে আহত, ৬ দিন পর মৃত্যু

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২২, ১৮: ৫৭
কুমিল্লায় সালিসি বৈঠকে যুবককে কুপিয়ে আহত, ৬ দিন পর মৃত্যু

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সালিসি বৈঠকে ওয়াসিম (২৮) নামের এক যুবককে কুপিয়ে আহত করা হয়। ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ওয়াসিম গতকাল সোমবার মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মৃত্যুর বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন ওয়াসিমের বড় বোন রিনা আক্তার। 

ওয়াসিম চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের খিরণশাল গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লনিশ্বর গ্রামের এছাক মিয়ার ছেলে সাদ্দাম হোসেন ঘরের মেঝে পাকা করতে স্থানীয় কালাম মজুমদার মার্কেটে অবস্থিত ওয়াসিমের বড় ভাই শহীদের রড-সিমেন্টের দোকান থেকে ১০ বস্তা সিমেন্ট, এক গাড়ি বালু ও ৫০০ ইট কেনেন। সাদ্দাম হোসেন গত ৩০ এপ্রিল সিমেন্ট, বালু ও ইট বাবদ ১৭ হাজার টাকা শহীদকে দেওয়ার জন্য রিপন নামে এক যুবকের কাছে দেন। কিন্তু রিপন টাকাগুলো শহীদকে না দিয়ে আত্মসাৎ করায় উভয় পক্ষের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। 

এ ঘটনায় ২৮ জুন রাতে লনিশ্বর গ্রামে একটি সালিসি বৈঠক হয়। সভায় টাকা দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ওয়াসিমসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ওয়াসিমকে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিলে পরিবারের সদস্যরা ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ওয়াসিমের পাঁচ ও আড়াই বছর বয়সী দুইটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন মজুমদার বলেন, লনিশ্বর গ্রামের সাদ্দাম গং পূর্বপরিকল্পনা করে সালিসি বৈঠকের আয়োজন করে। এর আগে তারা পার্শ্ববর্তী শুভপুরের পাশাকোট গ্রাম থেকে বেশ কিছু ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে জড়ো করে রাখে। বিষয়টি ওয়াসিমরা জানতেন না। সভাটি একটি নাটকমাত্র। এখানে গ্রাম্য কোনো সমাজপতি ছিলেন না। সভা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে ওয়াসিমকে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ছয় দিন চিকিৎসা অবস্থায় গতকাল সোমবার রাতে তিনি মারা যান।

ওয়াসিমের বড় বোন রিনা আক্তার বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আমার ভাইকে লনিশ্বর গ্রামের সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে এবং রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় সোমবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।’

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লনিশ্বর গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত যুবক ওয়াসিমের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। এখনো এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত