Ajker Patrika

চট্টগ্রাম-১৫ আসন

বিএনপির প্রার্থীকে জামায়াত মনোনীত উল্লেখ নির্বাচন কর্মকর্তার ছকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
বিএনপির প্রার্থীকে জামায়াত মনোনীত উল্লেখ নির্বাচন কর্মকর্তার ছকে

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। এ ঘটনায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে নাজমুল মোস্তাফা আমীন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও পরে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো তথ্যে তাঁকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

জেলা রিটার্নিং অফিসারের তথ্যমতে, বুধবার চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসন থেকে মোট ১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ৭ জন, জামায়াতে ইসলামীর ১ জন, এলডিপির ১ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১ জন এবং স্বতন্ত্র ২ জন রয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে পাঠানো তথ্যে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে দুজন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের এবং নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে দেখানো হয়।

তবে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা থেকে নাজমুল মোস্তাফা আমীনকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেই রিটার্নিং অফিসারের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তাফা আমীন বলেন, যথাযথভাবে মনোনয়ন ফরম পূরণ ও জমা দেওয়ার পরও তাঁকে অন্য দলের প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা দুঃখজনক ও মানহানিকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার ২

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার সাগর আহম্মেদ রয়েল (৩২) ও ওমর সানি রাব্বি (৩৫)। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার সাগর আহম্মেদ রয়েল (৩২) ও ওমর সানি রাব্বি (৩৫)। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বাড্ডা থেকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রিয়াজ শিকদার (৩৩) নামের এক যুবককে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সাগর আহম্মেদ রয়েল (৩২) ও ওমর সানি রাব্বি (৩৫)।

উত্তর বাড্ডার পূর্বাচলের ৬ নম্বর লেন থেকে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব ও পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উত্তর বাড্ডার পূর্বাচলের ৬ নম্বর লেনের স্বপনের ছেলে সাগর আহম্মেদ রয়েল ও একই এলাকার ওমর সানি রাব্বি।

অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মিরাজ শিকদার বাদী হয়ে গতকাল মধ্যরাতে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুজনসহ চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে মিরাজ জানান, অপহরণকারীদের একজনের সঙ্গে কিছু দিন আগে তাঁর ছোট ভাইয়ের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে পার্টটাইম চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১২ ডিসেম্বর বাড্ডায় যান। সেখান থেকে ওই অপহরণকারী পূর্বাচলের ২৬ নম্বর লেনে নিয়ে যান। অতঃপর চাকরির ভাইভার কথা বলে একটি টিনশেড রুমে আটকে রেখে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। অতঃপর মিরাজ শিকদার বিকাশের মাধ্যমে ১ হাজার ৯০০ টাকা দিলে অপহরণকারীরা রিয়াজকে মারধর করে ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর সিপিসি-২ কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের পরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী যুবকও তাঁদের অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে শনাক্ত করেছেন। পরে তাঁদের বাড্ডা থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপর দিকে ডিএমপির বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. নাসিরুল আমীন বলেন, ‘অপহরণের অভিযোগে র‍্যাব দুই আসামিকে ধরে থানায় হস্তান্তর করেছে। সেই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। পরে তাঁদের আজ আদালতে পাঠানো হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেয়ে দেখা মানে বিয়ে ফাইনাল না: মনোনয়ন প্রসঙ্গে হাজি ইয়াছিন

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৪
আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নে হাজি ইয়াছিনের গণসংযোগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নে হাজি ইয়াছিনের গণসংযোগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেলেও এখনো আশা ছাড়েননি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলেছি, অনেকে মেয়ে দেখতে যায়। মেয়ে দেখার পর অনেক কথা হয়, অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু মেয়ে দেখা মানেই তো বিয়ে ফাইনাল হয়ে যাওয়া নয়। তখন আলোচনা হয় আদৌ বিয়ে হবে কি না। দলের চেয়ারম্যানও বারবার বলেছেন, এটি ছিল প্রাথমিক সিলেকশন; ফাইনাল সিলেকশন হবে সামনে। তখনই সিদ্ধান্ত হবে বিয়ে হবে, নাকি হবে না। ’

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা এবং কুমিল্লা নিয়ে নিজের স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা-সংবলিত লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগকালে হাজি ইয়াছিন এসব কথা বলেন।

হাজি ইয়াছিন বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। সাবেক মন্ত্রী মরহুম কর্নেল আকবর হোসেন জীবদ্দশায় বলে গিয়েছিলেন, “আমার পরে ইয়াছিন আপনাদের পাশে থাকবে।” সেই কথা অনুযায়ী আমি তখন থেকে আজ পর্যন্ত আপনাদের পাশে ছিলাম কি না, আপনারাই তার সাক্ষী।’

হাজি ইয়াছিন বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের টানা ১৭ বছরের শাসনামলে আপনারা অসংখ্য মামলা, নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। অনেকেই বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি, ধানের জমিতে কিংবা পথেঘাটে রাত কাটিয়েছেন। সেই কঠিন সময়ে আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও ইনশা আল্লাহ আপনাদের পাশেই থাকব।’

সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘এত জুলুম-নির্যাতনের পরও কেউ কি আপনাদের আমাকে বা দল থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পেরেছে? পারে নাই। অতীতেও পারেনি, বর্তমানেও পারবে না, ভবিষ্যতেও ইনশা আল্লাহ পারবে না। আমার কথা একদম পরিষ্কার, আমি ছিলাম, আছি এবং থাকব ইনশা আল্লাহ।’

হাজি ইয়াছিন বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি কখনো “সিল মারো ভাই সিল মারো” রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। জনগণের ভোটেই বিএনপি সরকার গঠন করেছে। সুতরাং, এই ছয়টি নির্বাচনী এলাকার জনগণ যা চাইবে, সেটাই হবে। ইনশা আল্লাহ, জনতার জয় হবেই।’

গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ মেরাজ, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান সাঈদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আনোয়ার হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কাজী জোবায়ের আলম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক ধীমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন রবিন প্রমুখ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পাঁচথুবী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তরায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৩

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া মহাসড়কের ছাপরা মসজিস-সংলগ্ন এলাকা থেকে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. নাঈম (৩২), মিন্টু মিয়া (৩০) ও আল আমিন (২২)।

গ্রেপ্তারকালে তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি চাপাতি ও একটি লোহার রড জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

কারাগারের থাকা ওই ডাকাতেরা হলেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে নাঈম, শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার ভেলুয়া গ্রামের সাজু মণ্ডলের ছেলে মিন্টু মিয়া এবং গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন।

এ বিষয়ে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ আজ সন্ধ্যায় জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৯ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে মামলা করা হয়। পরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

অপর দিকে একই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক খান জানান, গ্রেপ্তারকালে তাঁদের কাছ থেকে একটি চাপাতি, একটি ছুরি ও একটি লোহার রড জব্দ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাবিতে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগের আলটিমেটাম রাকসুর জিএস আম্মারের

রাবি প্রতিনিধি  
সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: সংগৃহীত
সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগে এক কর্মদিবসের আলটিমেটাম দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আম্মার। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টে এই হুঁশিয়ারি দেন।

পোস্টে জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার লেখেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থি ডিনদের অপসারণ করা হয়নাই। নির্বাচিত বলে পুরো ১.৫ বছর স্টে করাইছে প্রশাসন। গতকাল ১৭ ডিসেম্বর ডিনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে, শুনেছি এই ডিনদের আবার সময় বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।’  

আম্মার আরও লেখেন, ‘আমার আল্টিমেটাম আমি ফিলাপ করে তারপর ছাড়ি এটা প্রশাসন ভালোমতন জানেন। আজ সময় দিলাম রিজাইনের জন্য সম্মানের সাথে। আগামীকাল অফিসে দেখলে বাকিটা বুঝিয়ে দেবো। সাথে সাথে রাবিয়ানদের অনুরোধ জানাবো, আগামীকাল সকাল ১০টায় রাকসু ভবনের সামনে চলে আসবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ডিন নির্বাচনে ১২টি অনুষদের মধ্যে ছয়টিতে জয়ী হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকসমাজ (হলুদ প্যানেল)। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে আইন, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, সামাজিক বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও ভূবিজ্ঞান অনুষদে ডিন নির্বাচিত হন। নির্বাচিত ডিনদের মধ্যে রয়েছেন আইন অনুষদে আইন বিভাগের আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদে গণিত বিভাগের ড. নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম একরাম উল্লাহ, প্রকৌশল অনুষদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এ এইচ এম সেলিম রেজা।  

মেয়াদোত্তীর্ণ আওয়ামীপন্থী ডিনদের সময় বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর যদি সত্যিকার অর্থে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার সদিচ্ছা থাকত, তাহলে প্রথম ও জরুরি পদক্ষেপ হওয়া উচিত ছিল আওয়ামীপন্থী ডিনদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া। ডিন পদটি শুধু প্রশাসনিক নয়; এটি একদিকে একাডেমিক নীতিনির্ধারণে প্রভাবশালী, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর নৈতিক ও আদর্শিক প্রভাব বিস্তারকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি তো দেওয়া হয়নি, বরং আইনগত মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কোনো স্বচ্ছ ব্যাখ্যা ছাড়াই সময় বাড়ানো হয়েছে। কোন যুক্তিতে এই মেয়াদ বাড়ানো হলো? জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিপক্ষের শক্তিকে কেন বারবার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখা হচ্ছে?’

তবে আওয়ামীপন্থী ডিনরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ডিনরা কিংবা উপাচার্য সেই দায়িত্ব পালন করেন। এটা নির্বাচিত পদ। এই পদ থেকে পদত্যাগের সুযোগ তাঁদের নেই। ফলে ইচ্ছা করলেই তাঁরা পদত্যাগ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে উপাচার্যকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম একরাম উল্লাহ বলেন, ‘উপাচার্য আমাদের পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে যেহেতু আমাদের মেয়াদ গতকাল শেষ হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে এই পদে থাকার ইচ্ছা নেই।’ হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার পদত্যাগের কোনো অধিকার নেই। উপাচার্য যেহেতু দায়িত্ব দিয়েছেন, উপাচার্যকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি চাইলে আরেকটি চিঠি ইস্যু করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।’

 

ডিনদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে কি না—জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, ‘তাঁরা নির্বাচিত ডিন হওয়ায় গত এক বছর ধরে আমরা তাঁদের রেখেছি। ১৭ তারিখ সমাবর্তন ছিল, সামনে ভর্তি পরীক্ষা। এই মুহূর্তে ডিন নির্বাচন দিলে ভর্তি পরীক্ষার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তাই এক মাস সময় বাড়ানো হয়েছে।’

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট অনুযায়ী পরিচালিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ডিনদের সরানোর এখতিয়ার কেবল উপাচার্যের। এর আগে করোনাকালেও ডিনদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।

ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন আরও বলেন, উপাচার্যের ওপর অতিরিক্ত দায়িত্বের চাপ না বাড়ানোর জন্য তাঁদের রুটিন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁরা সিন্ডিকেট সভাসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্তমূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত