আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
বয়স কম, স্বপ্নও কাঁচা—তবু গলায় মালা, কপালে সিঁদুর। দারিদ্র্য, অনিরাপত্তা আর সামাজিক চাপে বাল্যবিবাহ যেন থামছেই না। কিশোরী থাকতেই হচ্ছে শিশুর মা। বই-খাতা নয়, কোলে এখন শিশু। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামগঞ্জে এমন দৃশ্য এখনো সাধারণ বিষয়। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি, প্রশাসনের অভিযান— এত কিছুর পরও অল্প বয়সে মেয়েদের বিবাহের প্রবণতা কমছে না।
জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিপড়ুয়া অনেক কিশোরীকে জোর করে বা কৌশলে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের ভাষায়, ‘সম্মান রক্ষা’, অল্প বয়সে কন্যার বোঝা কমানো, কিংবা দারিদ্র্য থেকে মুক্তির আশায় এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন অভিভাবকেরা। তবে এর পেছনে রয়েছে সামাজিক অনীহা, দারিদ্র্য, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়া এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা।
জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, শুধু গত বছরই জেলায় ২০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় এনজিওগুলোর জরিপে দেখা গেছে, এর অন্তত তিন গুণ বিবাহ নিভৃতে সম্পন্ন হয়েছে, যেগুলো প্রশাসনের চোখে ধরা পড়েনি। তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলে এ হার সবচেয়ে বেশি। তবে নাচোল, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর উপজেলায়ও কম নয়।
শিক্ষা বিভাগের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালে জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করেছে ২০ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থী। তার মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৭ হাজার ১৫৭ জন। অর্থাৎ ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি—তাদের বেশির ভাগ ছাত্রী, যাদের অনেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৪১টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের ২০২৩ সালের ‘বর্ন টু বি আ ব্রাইড: চাইল্ড ম্যারেজ- ট্রেন্ডস অ্যান্ড কজেস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বাল্যবিবাহের দিক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দ্বিতীয় স্থানে। এ জেলায় বাল্যবিবাহের হার ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতিবেদনে বাল্যবিবাহের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতাকে। সঙ্গে রয়েছে দারিদ্র্য, ‘ভালো পাত্রের সন্ধান’, আর মেয়েদের শিক্ষাদানে অনীহা।
আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের আগে মেয়েদের ও ২১ বছরের আগে ছেলেদের বিবাহ সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু মাঠপর্যায়ে কাবিননামায় বয়স জালিয়াতি করে এই বিবাহ বৈধ করে ফেলার প্রবণতা বেশ সাধারণ। স্থানীয় কাজিরা অর্থের বিনিময়ে এ কাজে সহযোগিতা করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনেক সময় স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা প্রশাসনকে সহযোগিতা না করে উল্টো চাপ সৃষ্টি করেন। ভোটের রাজনীতি, আত্মীয়তার সম্পর্ক কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় পরিবারগুলোকে উৎসাহিত করেন বাল্যবিবাহে। ফলে প্রশাসনের একার পক্ষে প্রতিরোধ টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে অভিযান শেষে গোপনে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা শহরের এক অভিভাবক বলেন, ‘মেয়ের নিরাপত্তার অভাবে ১৮ বছরের আগেই বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের মতো অভিভাবকেরা একরকম অসহায়।’
জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পলশা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে জেলায় বাল্যবিবাহ বেশি। অধিকাংশ অভিভাবক তাঁদের কন্যাসন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। স্থানীয় নারী অধিকারকর্মী মোমেনা খাতুন বলেন, ‘শুধু অভিযান চালালে হবে না, পরিবারগুলোকে বিকল্প সমাধান দিতে হবে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, মেয়েদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হলে বাল্যবিবাহ রোধ করা যাবে না।’
এ বিষয়ে জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাহিদা আখতার বলেন, ‘বাল্যবিবাহ বন্ধ করা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়; অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি—সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
বয়স কম, স্বপ্নও কাঁচা—তবু গলায় মালা, কপালে সিঁদুর। দারিদ্র্য, অনিরাপত্তা আর সামাজিক চাপে বাল্যবিবাহ যেন থামছেই না। কিশোরী থাকতেই হচ্ছে শিশুর মা। বই-খাতা নয়, কোলে এখন শিশু। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামগঞ্জে এমন দৃশ্য এখনো সাধারণ বিষয়। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি, প্রশাসনের অভিযান— এত কিছুর পরও অল্প বয়সে মেয়েদের বিবাহের প্রবণতা কমছে না।
জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিপড়ুয়া অনেক কিশোরীকে জোর করে বা কৌশলে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের ভাষায়, ‘সম্মান রক্ষা’, অল্প বয়সে কন্যার বোঝা কমানো, কিংবা দারিদ্র্য থেকে মুক্তির আশায় এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন অভিভাবকেরা। তবে এর পেছনে রয়েছে সামাজিক অনীহা, দারিদ্র্য, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়া এবং প্রশাসনিক দুর্বলতা।
জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, শুধু গত বছরই জেলায় ২০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় এনজিওগুলোর জরিপে দেখা গেছে, এর অন্তত তিন গুণ বিবাহ নিভৃতে সম্পন্ন হয়েছে, যেগুলো প্রশাসনের চোখে ধরা পড়েনি। তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলে এ হার সবচেয়ে বেশি। তবে নাচোল, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর উপজেলায়ও কম নয়।
শিক্ষা বিভাগের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালে জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করেছে ২০ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থী। তার মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৭ হাজার ১৫৭ জন। অর্থাৎ ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি—তাদের বেশির ভাগ ছাত্রী, যাদের অনেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৪১টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের ২০২৩ সালের ‘বর্ন টু বি আ ব্রাইড: চাইল্ড ম্যারেজ- ট্রেন্ডস অ্যান্ড কজেস’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বাল্যবিবাহের দিক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দ্বিতীয় স্থানে। এ জেলায় বাল্যবিবাহের হার ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতিবেদনে বাল্যবিবাহের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তাহীনতাকে। সঙ্গে রয়েছে দারিদ্র্য, ‘ভালো পাত্রের সন্ধান’, আর মেয়েদের শিক্ষাদানে অনীহা।
আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের আগে মেয়েদের ও ২১ বছরের আগে ছেলেদের বিবাহ সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু মাঠপর্যায়ে কাবিননামায় বয়স জালিয়াতি করে এই বিবাহ বৈধ করে ফেলার প্রবণতা বেশ সাধারণ। স্থানীয় কাজিরা অর্থের বিনিময়ে এ কাজে সহযোগিতা করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনেক সময় স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা প্রশাসনকে সহযোগিতা না করে উল্টো চাপ সৃষ্টি করেন। ভোটের রাজনীতি, আত্মীয়তার সম্পর্ক কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় পরিবারগুলোকে উৎসাহিত করেন বাল্যবিবাহে। ফলে প্রশাসনের একার পক্ষে প্রতিরোধ টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে অভিযান শেষে গোপনে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা শহরের এক অভিভাবক বলেন, ‘মেয়ের নিরাপত্তার অভাবে ১৮ বছরের আগেই বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের মতো অভিভাবকেরা একরকম অসহায়।’
জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পলশা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে জেলায় বাল্যবিবাহ বেশি। অধিকাংশ অভিভাবক তাঁদের কন্যাসন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। স্থানীয় নারী অধিকারকর্মী মোমেনা খাতুন বলেন, ‘শুধু অভিযান চালালে হবে না, পরিবারগুলোকে বিকল্প সমাধান দিতে হবে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, মেয়েদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হলে বাল্যবিবাহ রোধ করা যাবে না।’
এ বিষয়ে জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাহিদা আখতার বলেন, ‘বাল্যবিবাহ বন্ধ করা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়; অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি—সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমদানি কার্গো ভিলেজ ঘিরে রেখেছেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। শুধু জরুরি সেবায় নিয়োজিত ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
১৬ মিনিট আগেনৌপথে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল প্যাডেলচালিত স্টিমার। ঐতিহ্যবাহী এ জলযানের চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তিন বছর আগে। এবার সেই ঐতিহ্য ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
২৩ মিনিট আগেহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বাতাস সবচেয়ে বড় বাধা ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। একই সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগেওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট বাংলাদেশির মরদেহ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। শনিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ওমানের মাস্কাট থেকে কফিনবন্দী মরদেহগুলো নিয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
২ ঘণ্টা আগে