Ajker Patrika

নাচোলে এনজিও খুলে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩: ৪৮
নাচোলে এনজিও খুলে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একটি এনজিওর মাঠকর্মীসহ প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নাচোল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়ার সুফিয়ান বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড প্রাইভেট হোমসংলগ্ন বিসিফের অফিসরুম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় কিছু ভুয়া পাসবই, সিল, বিভিন্ন ব্যাংকের ফাঁকা চেক জব্দ করেছে র‍্যাব। 

আজ বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—প্রতারক চক্রের মূল হোতা ও এনজিওর ম্যানেজার নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের খলসী গ্রামের হাজি মো. জাকারিয়ার ছেলে মো. ইব্রাহিম (৩৭), রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে শাখা ব্যবস্থাপক রায়হান উদ্দিন (৩০), নাচোল উপজেলার গাছপুকুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ক্যাশিয়ার আতিকুর রহমান (২৫), মুরাদপুর গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে মাঠকর্মী ফরহাদ হোসেন (৩১), মাধবপুর গ্রামের আব্দুল হানিফের ছেলে মাঠকর্মী শাহ আলম (২৪), খেসবা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে মাঠকর্মী রেজাউল করিম (২৪)। 

র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার গ্রামের সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত লাভ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল বাংলাদেশ আইডিয়াল সোসাইটি ইমপ্রুভমেন্ট ফাউন্ডেশন (বিসিফ) নামের একটি ভুয়া এনজিও। এমনকি ঋণ দেওয়ার সময় এর বিপরীতে গ্রাহকদের থেকে নেওয়া ফাঁকা চেকের মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে এনজিওটি আদায় করত অতিরিক্ত টাকা। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রুহ-ফি-তাহমিন তৌকির আজকের পত্রিকাকে জানান, এই চক্র সংঘবদ্ধভাবে গ্রামের সহজ-সরল সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ আইডিয়াল সোসাইটি ইমপ্রুভমেন্ট ফাউন্ডেশন (বিসিফ) নামের একটি ভুয়া এনজিও প্রতিষ্ঠা করে। এই এনজিওতে বিভিন্ন গ্রাহককে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে, গরিব-অসহায় লোকদের বিনিয়োগ করতে এবং টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য উসকানি দেয়। এমনকি ঋণ দেওয়ার বিপরীতে গ্রাহকদের থেকে ফাঁকা চেক নিয়ে পরে ব্ল্যাকমেইল করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতেন তাঁরা। পরে গ্রাহকের জমাকৃত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নাচোল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘র‍্যাবের দায়ের করা মামলায় আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোনো অগ্নিনির্বাপণ যানকে বাধা দেওয়া হয়নি, গুজব ছড়ানো হচ্ছে: বেবিচক চেয়ারম্যান

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
বেবিচক সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। ছবি: আজকে পত্রিকা
বেবিচক সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। ছবি: আজকে পত্রিকা

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে দাহ্য পদার্থই আগুনের তীব্রতা বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক। তিনি জানান, দাহ্য পদার্থের উপস্থিতির কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কোনো অগ্নিনির্বাপণ যানকে ঘটনাস্থলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়নি।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বেবিচক সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আগুন নেভাতে আসা কোনো ফায়ার ভেহিকেলকে বাধা দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন মহল থেকে কিছু গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে পরিহার করা উচিত।’

বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, আমদানি কুরিয়ার সেকশন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি এখনো নিশ্চিত নয়, তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো সংস্থা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, ‘দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে কার্গো টার্মিনালে প্রথম ধোঁয়া দেখা যায়। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দল যোগ দেয়। সব মিলিয়ে ৪০টির বেশি ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগুন লাগার সময় টার্মিনালের ভেতরে কয়েকটি উড়োজাহাজ ছিল। আমরা দ্রুত সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হই। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশে কাট-অফ মেকানিজম (দাহ্য পদার্থকে আগুন থেকে বিচ্ছিন্ন করা) ব্যবহার করে আগুনের বিস্তার রোধ করা হয়। আল্লাহর রহমতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।’

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আইকাও স্ট্যান্ডার্ড মেনেই আমাদের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আমাদের নিজস্ব ফায়ার ইউনিট নিয়মিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম। এবারও তাদের পেশাদারি বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো গেছে।’

তিনি জানান, আগুনের সময় বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় ১৫টি ফ্লাইট অন্য রুটে পাঠানো হয়। পরদিন বিকেল ৪টার মধ্যে আটকে পড়া যাত্রীদের নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএফআরআইতে মাছের খাদ্য প্রস্তুত ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সক্ষমতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ উদ্বোধন

বাকৃবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩৭
বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র আজ সকাল সাড়ে ৮টায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র আজ সকাল সাড়ে ৮টায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) সম্মেলনকক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়েছে। ‘প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সিবিও সদস্যদের সক্ষমতা উন্নয়ন’ শীর্ষক কর্মশালাটি আজ মঙ্গলবার সকালে শুরু হয়।

বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফএওর জাতীয় সক্ষমতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ কিংকর চন্দ্র সাহা, বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্রপ্রধান (ফ্রেশ ওয়াটার স্টেশন) ড. মো. হারুনুর রশিদ এবং প্রশিক্ষণ শাখার প্রধান ড. মো. শরীফুল ইসলাম।

প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি আয়োজিত হয়েছে বাংলাদেশে কমিউনিটিভিত্তিক জলবায়ু সহনশীল মৎস্য ও অ্যাকুয়াকালচার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়, যা যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর (ডিওএফ), বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। প্রকল্পটি অর্থায়ন করছে গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)।

প্রশিক্ষণে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনের (CBOs) ২১ জন সদস্য অংশগ্রহণ করছেন। প্রশিক্ষণ চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

প্রশিক্ষণার্থীরা মাছের খাবার তৈরি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত মেশিনের কার্যকর পরিচালনা, ত্রুটি শনাক্তকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে টেকসই মাছের খাদ্য প্রণয়ন সম্পর্কেও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), মৎস্য অধিদপ্তর এবং বেসরকারি মাছের খাদ্য শিল্পের বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণে তাত্ত্বিক সেশন ও ব্যবহারিক প্রদর্শন পরিচালনা করবেন।

আয়োজকেরা জানান, এই উদ্যোগ অংশগ্রহণকারীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্যোক্তা সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এর ফলে তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় কার্যকরভাবে ফিড মেশিন পরিচালনা করতে পারবেন এবং জলবায়ু সহনশীল, টেকসই মৎস্য চাষ সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মৌসুমি রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে ব্রাহ্মণপাড়ায়, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার জটিলতায় রোগীর ভিড়

মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) 
চিকিৎসা নেওয়ার অপেক্ষায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে রোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিকিৎসা নেওয়ার অপেক্ষায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে রোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মৌসুমি রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। উপজেলাজুড়ে শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ।

এই সময়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বিদ্যমান থাকায় চিকিৎসা বিভ্রান্তি ও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অনেকের উপসর্গ এক রকম হওয়ায় সঠিক ডায়াগনসিস না হলে রোগ নির্ণয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই রোগী ও স্বজনদের উপচে পড়া ভিড়। অধিকাংশ রোগী জ্বর, সর্দি-কাশি, শরীর ব্যথা, গিঁটে ব্যথা, পেটব্যথা ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। কেউ কেউ দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলেও কারও কারও সেরে উঠতে সময় লাগছে বেশি। চিকিৎসকদের মতে, এসব রোগীর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকায় সুস্থ হতে দেরি হচ্ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সময়ে মৌসুমি জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রভাব দেখা দিচ্ছে। এ জন্য রোগীদের সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। এতে অল্প সময়ে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা কামাল হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ছেড়ে ছেড়ে জ্বর আসছে। ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেয়েও কাজ হয়নি, তাই হাসপাতালে এসেছি।’

এক রোগীর মা শিরিনা বেগম জানান, তাঁর সাড়ে চার বছরের মেয়ে খাদিজা এক সপ্তাহ ধরে জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছে। স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের ওষুধে কাজ না হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।

লিপি আক্তার নামের এক রোগী বলেন, ‘দুই দিন ধরে জ্বর, মাথাব্যথা আর ডায়রিয়ায় ভুগছি। আজ খুব দুর্বল লাগছে। ডাক্তার ওষুধ লিখে দিয়ে বলেছেন, নিয়ম মেনে খেলেই সুস্থ হয়ে যাব।’

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শেখ হাসিবুর রেজা বলেন, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে মৌসুমি রোগের প্রকোপ স্বাভাবিকভাবে বাড়ে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বর, কাশি, সর্দি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তারা দ্রুত আক্রান্ত হচ্ছে।

শেখ হাসিবুর রেজা আরও বলেন, ‘এই সময়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রভাবও রয়েছে। তাই অসুস্থ হলে দেরি না করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অথবা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আমরা হাসপাতালে আসা রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছি এবং বিনা মূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে কম মুনাফায় ওষুধ বিক্রি করায় ফার্মেসিকে জরিমানা ও দোকান বন্ধ

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
পৌর শহরের নালিতাবাড়ী বাজার এলাকায় সততা ড্রাগ হাউস। ছবি: আজকের পত্রিকা
পৌর শহরের নালিতাবাড়ী বাজার এলাকায় সততা ড্রাগ হাউস। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে কম মুনাফায় ওষুধ বিক্রির অভিযোগে ‘সততা ড্রাগ হাউস’ নামে একটি ফার্মেসিকে ১ হাজার টাকা জরিমানা ও ৬ ঘণ্টার জন্য দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে পৌর শহরের নালিতাবাড়ী বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় রাতে উপজেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি আবু সিনা তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দোকান বন্ধের ছবি দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি লেখেন, ‘সমিতির আইন লঙ্ঘনের দায়ে সততা ড্রাগ হাউসকে ১ হাজার টাকা জরিমানা ও ৬ ঘণ্টা দোকান বন্ধ করে দিল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।’ পোস্টটি ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই দিন বিকেলে একজন ক্রেতার কাছে কম মুনাফায় পাইকারি দরে ওষুধ বিক্রি করেন দোকানের মালিক মিজানুর রহমান। পরে বিষয়টি সমিতির নেতাদের কানে গেলে তাঁরা দোকানে এসে জরিমানা করেন ও ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এ সময় কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন না।

সততা ড্রাগ হাউসের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, ‘একজন ব্যবসায়ীর কাছে একটু কম দামে ওষুধ বিক্রি করেছিলাম। এ জন্য সমিতি আমার দোকান বন্ধ ও জরিমানা করেছে। অথচ আমিও ওই সমিতির সদস্য।’

এ বিষয়ে উপজেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি আবু সিনা বলেন, ‘এটা আমাদের সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে জেলা কমিটির সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’

শেরপুরের ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওষুধ কম বা বেশি দামে বিক্রি করা ব্যবসায়ীর নিজস্ব বিষয়। এ জন্য কোনো সমিতি দোকান বন্ধ বা জরিমানা করতে পারে না। সরকার কোনো সমিতিকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, ‘বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত