Ajker Patrika

মোকামতলা বাজার যেন মরণ ফাঁদ, পদচারী-সেতু নির্মাণের দাবি

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৯: ১৩
মোকামতলা বাজার যেন মরণ ফাঁদ, পদচারী-সেতু নির্মাণের দাবি

বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা বাজার অংশ যেন মরণ ফাঁদ হয়ে উঠেছে। চার লেনের এ সড়ক নির্মাণে মোকামতলা বাজারের জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে রাখা হয়নি পদচারী-সেতু। ফলে বাজারের পাকুড়তলা থেকে চকপাড়া পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারে প্রায়ই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি।

এসব জায়গার মধ্য রয়েছে মোকামতলা বাজারের চৌরাস্তা, মালাহার, আন্ডারপাস, কাগুইল ও দেউলির রাস্তা। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পদচারী-সেতুর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

জানা যায়, এশিয়ান হাইওয়ে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২-এর অধীনে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। 

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে বগুড়া দিয়ে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত এ সড়কের দৈর্ঘ্য ১৯০ দশমিক ৪ কিলোমিটার। এই প্রকল্পের বগুড়ার বনানী থেকে শিবগঞ্জের মোকামতলা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশের কাজ পেয়েছে কেএমসি-মনিকো জয়েন্ট ভেঞ্চার নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

স্থানীয়রা জানান, মোকামতলা বাজারের পশ্চিমে ইউনিয়ন পরিষদ, মোকামতলা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, মোকামতলা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মোকামতলা উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাস্টার মাইন্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জামে মসজিদ, কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, খেলার মাঠ ও বেসরকারি সংস্থার কার্যালয়সহ আবাসিক এলাকা রয়েছে। 

অপর দিকে রাস্তার পূর্ব পাশে মোকামতলা ইউনিয়নের বৃহৎ হাট, সরকারি ভূমি অফিস, বেশ কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক, গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। 

রাস্তার উভয় পাশে জনগুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠান থাকায় প্রতিদিন প্রায় কয়েক লাখ মানুষকে মহাসড়কের উভয় পাশে পারাপার হতে হয়। 

মোকামতলা বাজারের চৌরাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে পথচারী ও যানবাহনআজ শনিবার মোকামতলা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বন্দরের পাঁচ কিলোমিটারের মাঝে লোক পারাপারের কোনো জায়গা রাখা হয়নি। মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক এবং সোনাতলা-শিবগঞ্জ বন্দরগামী চৌরাস্তায় সড়ক বিভাজক আলগা করে ১০ ফুট জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে। এদিক দিয়ে মানুষ ও যানবাহন পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। তবে রাস্তা পারাপারের এ স্থানও কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিভিন্ন রুটের যানবাহন রাস্তা পরিবর্তনের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে বন্দরের চৌরাস্তা থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে। জায়গাটি দূরে হওয়ায় লোকজন ওই দিক দিয়ে পার হতে চায় না। ফলে শিবগঞ্জ ও সোনাতলা রোড থেকে আসা লোকজন চৌরাস্তা দিয়ে যানবাহন রাস্তা পরিবর্তন করতে গিয়ে উল্টো পথে চলাচল করছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। 

এদিকে গত ১৯ মার্চ আন্ডারপাস দিয়ে রাস্তা পরিবর্তন করার সময় মোকামতলার ভাগকোলা এলাকার অটোভ্যানচালক আবদুল বারী ট্রাকের চাপায় নিহত হন। 

১১ এপ্রিল মালাহারে মোকামতলা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী মানসুরা আক্তার পিকআপের চাপায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারায়। 

এ ছাড়া ১৪ এপ্রিল মোকামতলা চৌরাস্তা পারাপারের সময় বাসের চাপায় সুলতান মিয়া নামের এক পথচারী নিহত হন। 

মোকামতলা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাখাওত শামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি দ্রুত গতিতে চলাচল করে। বাজারে পদচারী-সেতু না থাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তা পার হচ্ছে। কিছুদিন আগেই আমাদের বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী চৌরাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে পদচারী-সেতুর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’ 

ব্যবসায়ী জাকিরুল ইসলাম জানান, মোকামতলা বন্দরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে সোনাতলাগামী চৌরাস্তার মোড় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান; যা বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। ব্যস্ততম এই স্থান দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। অথচ এখানে পদচারী-সেতু তো দূরের কথা জেব্রা ক্রসিংও দেওয়া হয়নি। 

মোকামতলা বাজারের চৌরাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে পথচারী ও যানবাহনকথা হয় শংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগমের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে আমি প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াত করি। চার লেন হওয়ার কারণে রাস্তা অনেক প্রশস্ত হয়েছে। হেঁটে এত বড় রাস্তা পার হতে হতে দ্রুত গতির যানবাহন প্রায়ই খুব কাছে চলে আসে। আমাদের প্রতিদিন এই ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। এখানে একটা পদচারী-সেতু থাকলে আমরা নিরাপদে পার হতে পারতাম।’ 

‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’-এর শিবগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি রশিদুর রহমান রানা মোকামতলায় পদচারী-সেতু নির্মাণের জরুরি উল্লেখ করে বলেন, ‘মোকামতলায় পথচারী-সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থী ও মানুষ রাস্তা পারাপার হচ্ছে।’

গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মোকামতলা অত্যন্ত জনবহুল একটি ব্যবসাকেন্দ্র। স্বাভাবিকভাবেই এখানে অগণিত মানুষকে রাস্তা পারাপার হতে হয়। আন্ডারপাস চৌরাস্তা থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে হওয়ায় লোকজন সেদিক দিয়ে পার হতে চায় না। এটি বন্ধ করা হলে আন্ডারপাস দিয়ে মানুষ পারাপারে অভ্যস্ত হবে, তাতে একটু কষ্ট হলেও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটবে না। মোকামতলা চৌরাস্তার মোড়ে সড়ক বিভাজকে কিছু অংশ ফাঁকা রাখায় সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে চৌরাস্তার মোড়ে একটা পদচারী-সেতু নির্মাণ হলে মানুষ পারাপারে উপকৃত হবে।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেএমসি-মনিকো জয়েন্ট ভেঞ্চারের অ্যাডমিন অফিসার শাহ্ জামান জানান, মোকামতলা বন্দর থেকে আন্ডারপাস কিছুটা দূরে হলেও সেদিক দিয়েই পারাপার হতে হবে। লোক পারাপারের জন্য চৌমাথায় কিছুটা ফাঁকা রাখা হয়েছিল। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটায় সেগুলোও বন্ধ করা হবে শিগগির। তবে চৌমাথাসহ ছয়টি পয়েন্টে পদচারী-সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে পরবর্তীকালে নির্মাণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘গরু চুরি করতে এসে’ গণপিটুনিতে একজন নিহত, ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে গণপিটুনির শিকার চোর চক্রের সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে গণপিটুনির শিকার চোর চক্রের সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ‘গরু চুরি করতে এসে’ গণপিটুনির শিকার হয়েছে চোর চক্রের চার সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার বলভদ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে চক্রের সদস্য মো. মতিয়ার রহমান (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত মতিয়ার রহমান বাগেরহাটের চরগ্রাম এলাকার মৃত রশিদ শেখের ছেলে। আহত ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ভাগাবাজার এলাকার মো. বজলু হাওলাদারের ছেলে মো. রমন হাওলাদার (৩৮), ফকিরহাটের চাকুলি গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ শেখের ছেলে মো. আসাদুল শেখ (৪০) ও ফকিরহাটের আরপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদের ছেলে মো. জনি (৩৮)।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মহিশপুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. তালেবুল্লাহ জানান, ভোররাতে একটি মিনি ট্রাক নিয়ে চোর চক্রের সদস্যরা বলভদ্রপুর গ্রামে গরু চুরি করতে আসে। বিষয়টি টের পেয়ে এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। পরে চারজনকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মতিয়ার রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুফতি কামাল হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই মতিয়ার রহমানের মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।’

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানার পরিদর্শক ভবতোশ চন্দ্র বলেন, গণপিটুনিতে একজন নিহত হয়েছেন এবং তিনজন আহত রয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আহত ব্যক্তিদের পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালিসের মধ্যে ১ জনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা, প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন

মাগুরা প্রতিনিধি 
সালিস চলাকালে প্রতিপক্ষের হাতুড়িপেটায় আহত ব্যক্তিকে আজ শুক্রবার দুপুরে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেন স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সালিস চলাকালে প্রতিপক্ষের হাতুড়িপেটায় আহত ব্যক্তিকে আজ শুক্রবার দুপুরে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেন স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাগুরা সদর উপজেলায় সালিস চলাকালে প্রতিপক্ষের হাতুড়িপেটায় বাদশা মোল্যা (৬০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের বলুকগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খেতের ধান কাটা নিয়ে বিরোধ মীমাংসার জন্য ওই সালিসের আয়োজন করা হয়েছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জমির ধান কাটাকে কেন্দ্র করে বর্গাচাষি আনোয়ার হোসেন ও শিউলি খাতুনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তাঁদের সে বিরোধ মীমাংসার জন্য আজ দুপুরে সালিসের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সালিসের মধ্যে আনোয়ার হোসেনের ছেলে আবির (২২) উত্তেজিত হয়ে শিউলি খাতুনের মামা বাদশা মোল্যাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান, বাদশা মারা গেছেন।

ঘটনার পর প্রতিপক্ষের লোকজন আনোয়ারের বাড়িতে আগুন দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সালিস বৈঠকে কথা-কাটাকাটির জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবৈধভাবে সার বিক্রির দায়ে ডিলারকে জরিমানা, ৩৬০ বস্তা সার জব্দ

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি 
পাটগ্রামে অবৈধভাবে আনা সার ট্রাক থেকে ভ্যানে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাটগ্রামে অবৈধভাবে আনা সার ট্রাক থেকে ভ্যানে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবৈধভাবে রাসায়নিক সার বিক্রির সময় অভিযান চালিয়ে ৩৬০ বস্তা সার জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আইন লঙ্ঘন করে বরাদ্দের বাইরে সার কিনে খুচরা বিক্রির অপরাধে ডিলারকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় উপজেলার বাইপাস মোড়ের করিম ট্রেডার্সের পাশে এই অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স অগ্রণী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ফারুক আহম্মেদ লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর সরকারি গোডাউন থেকে একটি ট্রাকে ইউরিয়া, ডিএপি, পটাশসহ মোট ৭০০ বস্তা সার কিনে আনেন। তিনি সেই সার বাইপাস মোড়ে আনলোড করে বিভিন্ন ইউনিয়নের খুচরা বিক্রেতা বা ভ্যান গাড়ি দিয়ে বিক্রি করতে শুরু করেন।

খবর পেয়ে পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানান। এরপর স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন ট্রাকটি জব্দ করে। ঘটনাস্থলেই পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার দাশ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

আইন লঙ্ঘন করে বরাদ্দের বাইরে লালমনিরহাট থেকে সার কিনে এনে খুচরা বিক্রির অপরাধে ডিলার ফারুক আহম্মেদকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং ৩৬০ বস্তা সার জব্দ করেন।

পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল বলেন, ‘আমরা গোপন সংবাদ পেয়েছিলাম যে, করিম ট্রেডার্সের সামনে সারের একটি ট্রাক খালাস করা হচ্ছে এবং ভ্যানে বিভিন্ন ইউনিয়নের খুচরা দোকানদারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। খবর পেয়ে ইউএনওকে জানাই। কর্তৃপক্ষ এসে কোনো বৈধতা না পাওয়ায় ডিলারকে জরিমানা ও সার জব্দ করে। কৃষকেরা যেন ন্যায্য মূল্যে সার পান, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উত্তম কুমার দাশ বলেন, অবৈধভাবে সার এনে মজুত ও খুচরা বিক্রির অপরাধে সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬ অনুযায়ী ডিলার ফারুক আহম্মেদকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা সারগুলো পরে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের কৃষকদের মধ্যে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা হবে। সারের কৃত্রিম সংকট নিরসনে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাবনায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২

পাবনা প্রতিনিধি
নিহত গাজ্জালী মুন্সীর বাড়িতে প্রতিবেশীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত গাজ্জালী মুন্সীর বাড়িতে প্রতিবেশীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদগাহ মাঠের দ্বন্দ্ব নিয়ে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার মধ্য পুংগলী গ্রামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে আহত একজন মারা গেছেন। শুক্রবার (২৪ অক্টেবর) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আহত গাজ্জালী মুন্সীকে (৫০) সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত গাজ্জালী মুন্সী মধ্য পুংগলী গ্রামের মৃত রমজান মুন্সীর ছেলে। তিনি হাজী গোষ্ঠীর লোক।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে মধ্য পুংগলী গ্রামের হাজী গোষ্ঠী ও বাদশাহ গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, গত বছর ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সেই পুরোনো বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে হাজী গোষ্ঠী ও বাদশাহ গোষ্ঠীর মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয় এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষে আহত ২০ জনকে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে গুরুতর কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গাজ্জালী মুন্সী নামের একজনকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

পাবনা-২
পাবনা-২

খবর পেয়ে ফরিদপুর থানা-পুলিশ শুক্রবার সকালে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে।

ফরিদপুর থানার ওসি শাকিউল আজম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার রাতে উভয় পক্ষ দুটি মামলা করেছে। পরে কুদরত এ খুদা (৪৫) ও ধলা (২৫) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত