Ajker Patrika

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

শিমুল চৌধুরী, ভোলা 
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ১৪: ৫৩
সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত
সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত

ভোলা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ কর্ণফুলী-৪ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়া ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার মরদেহ চার দিন পর গত শনিবার (২১ জুন) রাতে লক্ষ্মীপুরসংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে ইপ্সিতার পরিবার মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়েছে গতকাল রোববার (২২ জুন) বিকেলে। ১৭ জুন ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ কর্ণফুলী-৪ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন ওই কলেজছাত্রী। এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর নৌ পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঝলক মোহন্ত।

কলেজছাত্রী ইপ্সিতার বাবা বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেছি। গত চার দিন ধরে পানিতে থাকার কারণে লাশটি অর্ধগলিত হয়ে গেছে। তাই বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানেই মেয়ের লাশ গতকাল সকালে দাফন করা হয়েছে।’

গত শনিবার রাতে লক্ষ্মীপুর থানার মেঘনা নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা নৌ পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে তা ভোলা সদর মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় জানানো হয়।

পরে লক্ষ্মীপুর নৌ থানা-পুলিশ মরদেহের পরিচয় পেতে বিলম্ব হওয়ায় পরদিন অর্থাৎ গতকাল সকালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে লক্ষ্মীপুর আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম কর্তৃক মরদেহটি দাফন করা হয়। লাশের বিভিন্ন অঙ্গে ক্ষতের চিহ্ন দেখা গেছে।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ভোলা সদর মডেল থানায় ইপ্সিতার বাবার করা সাধারণ ডায়েরির আলোকে থানা-পুলিশ ইপ্সিতার পরিবারকে লক্ষ্মীপুর নৌ থানায় এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে মর্মে খবর দেয়। তাৎক্ষণিক ইপ্সিতার বাবা মরদেহের ছবি দেখে নিশ্চিত হন তাঁর মেয়ে।

সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা ভোলা সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. জসিম উদ্দিন আজ সোমবার রাতে বলেন, ‘সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের একজন সক্রিয় সদস্য। গত রমজান মাসে যখন ছাত্রদলের একটি কেন্দ্রীয় টিম আসে, তখন সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা ছাত্রদলের সদস্য ফরম সংগ্রহ করেন। সেই থেকেই তিনি ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

নিহত ইপ্সিতার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৭ জুন সকালের দিকে বাসা থেকে প্রাইভেট পড়ানোর নাম বলে বের হন তিনি। পরে আর বাসায় ফেরেননি। পরদিন ইপ্সিতার বাবা ভোলা সদর মডেল থানায় নিখোঁজ দাবি করে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত
সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনায় ইপ্সিতার সহপাঠীদের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাঁরা অনেকে এ ঘটনাকে একটি হত্যা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশাসনের কাছে তদন্তের দাবি করে পোস্ট দেন। অনেকে ধর্ষণের শিকার হয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন বলেও মন্তব্য করেন।

তবে ইপ্সিতার বাবা বলেন, তাঁরা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন না।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার আলাউদ্দিন জানান, ১৭ জুন সকালে কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে মেহেন্দীগঞ্জের পরে ইলিশা থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে লঞ্চের তৃতীয় তলা থেকে এক তরুণী নদীতে ঝাঁপ দেন। লঞ্চের মাস্টার খবর পেয়ে এক ঘণ্টাব্যাপী তাঁকে উদ্ধারের জন্য লঞ্চ ব্যাক গিয়ার দিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। তাঁকে না পেয়ে পরে লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে চলে যায়। এ ঘটনায় লঞ্চে থাকা অন্য আরেক নারী ৯৯৯-এ কল দিয়ে ঝাঁপ দেওয়া তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ দেন।

পরে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পুলিশ ওই লঞ্চ থেকে দুজন স্টাফ ও অভিযোগকারীকে হেফাজতে নেয়। ঘটনার প্রাথমিক তথ্য জেনে পরে পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দেয়।

মুন্সিগঞ্জ থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, ১৭ জুন কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ৯৯৯-এ অভিযোগ আসে। পরে পুলিশ ওই লঞ্চের দুই স্টাফ ও অভিযোগকারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার তথ্যাদি সংগ্রহ করে তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত
সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত

লঞ্চের সুপারভাইজার নান্টু দে জানান, ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে কর্ণফুলী-৪। কালিগঞ্জ ঘাট পার হওয়ার কিছু সময় পর তিনি খবর পান, এক নারী তৃতীয় তলা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চটি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি গিয়ে লাইফবয়া ফেলা হয়। একবার ওই তরুণীকে নদীতে ভাসতে দেখা গেলেও কাছে পৌঁছানোর আগেই তিনি চোখের আড়াল হয়ে যান। পরে ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজির পর কোস্ট গার্ডকে জানিয়ে লঞ্চটি ঢাকার পথে রওনা দেয়। পরে কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের সদস্যরা ওই নারীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায়। কিন্তু নিখোঁজ তরুণীকে ওই দিন আর উদ্ধার করা যায়নি।

লঞ্চের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইলিশা ঘাট থেকে লঞ্চে ওঠার সময় ওই তরুণী কেবিন নেন। তবে কেবিন ভাড়ার টাকা না থাকায় কেবিনম্যান তাঁকে ওপরের তলায় অবস্থান করতে বলেন। পরে তাঁকে তৃতীয় তলায় মোবাইলে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন এবং হঠাৎ করেই নদীতে ঝাঁপ দেন। তাৎক্ষণিক যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে লঞ্চ থামিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। তবে পানিতে ডুবে যাওয়ায় তাঁকে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

লক্ষ্মীপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঝলক মোহন্ত আজ বিকেলে বলেন, ‘এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর নৌ পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে বলে জেনেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পীরগঞ্জে আরও ৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি  
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আরও ৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন রামনাথপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামের আশুরা বেগম (৬৫), রবিউল ইসলাম (৫৫), শাহিন মিয়া (২৩), শরীফ মিয়া (২২), খাসা মিয়া (৫২), চেরাগপুরের রওহাবুল মিয়া (৩২), দ্বারিয়াপুরের শিল্পী (২৮), মামুন (১৬) ও খোরশেদ ইসলাম (২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চেরাগপুর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে সাদেক আলী ৪ অক্টোবর অসুস্থ গরু জবাই করে ১৮টি পরিবারের মধ্যে মাংস বিতরণ করেন। পরে ১১ অক্টোবর দ্বারিয়াপুর গ্রামের টুটুল মিয়াও অসুস্থ গরু জবাই করে গ্রামবাসীর মধ্যে মাংস ভাগ করে দেন। ধারণা করা হচ্ছে, এসব গরুর মাংস খেয়ে বা কাটাকাটির সময় সংস্পর্শে এসে তাঁরা অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।

আক্রান্ত শিল্পী, মামুন ও খোরশেদ জানান, গরু জবাইয়ের পরপরই কয়েকজনের শরীরে ঘা দেখা দেয়। তাঁরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার পর্যন্ত রংপুরের পীরগাছায় ৩৮, কাউনিয়ায় ১৮, মিঠাপুকুরে ১২, গঙ্গাচড়ায় ৭, পীরগঞ্জে একজনসহ জেলায় ৭৮ জন সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পীরগঞ্জের নতুন ৯ জন আক্রান্তের তথ্য এখনো ওই হিসাবে যুক্ত হয়নি।

জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ১১। তবে সন্দেহজনক রোগীর সংখ্যা আরও বেশি। তিনি বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স রোগীর শরীরে কাঁচা ঘা না থাকলে নমুনা সংগ্রহ করা যায় না, তাই অনেক ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না।’ এদিকে গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে দুজনের মৃত্যু হয়। পরে গাইবান্ধায়ও একাধিক আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রোজিনা বেগম (৪৫) অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাড়াশে কীটনাশকের দোকান থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র চুরি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় রাতের আঁধারে সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র খোয়া গেছে মালিকের।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাস্তা বাজারে মেসার্স জিসা এন্টারপ্রাইজে এই ঘটনা ঘটে।

দোকানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম দাবি করে বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাই। সকালে এসে দেখি দোকানের পেছনের টিন কাটা। দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার কীটনাশক ও অন্য মালপত্র চুরি হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘চুরির বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আমি বিএনপি করে শ ম রেজাউলের আমলে মামলায় জেল খেটেছি। এমনকি আমাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করে এযাবৎ কাজ করেছি।’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এমন মন্তব্য করে আবারও আলোচনায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে ভাই ও চাচাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনি আগে থেকেই সমালোচিত। অভিযোগ উঠেছে, ওই মামলায় রেহাই পেতে তাঁর ভাই ও চাচা ৫০ হাজার টাকা দিলেও হয়রানি থেকে মুক্তি পাননি। তাঁরা এখনো ভুগছেন সেই ঘর পোড়ানোর মামলায়। বিতর্কিত মন্তব্য করে এখন তিনি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন।

সোহাগ মৃধার চাচা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়ারিশ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সোহাগ তার ভাইকে হয়রানি করত। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চুরির মামলায় ফাঁসায়। পরে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমি ও তার ভাই তৈমুর রেজার নামে মামলা দেয়। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েও রেহাই দেয়নি।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী আমলে সোহাগ মৃধা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছিলেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো, সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে তিনি জড়িত ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন তিনি বিএনপি পরিচয়ে সক্রিয় হয়েছেন।

জানতে চাইলে বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘সোহাগ মৃধা কেমন মানুষ, তা সবাই জানে। সে আমার বাবাকেও একসময় হয়রানি করেছে।’

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ফকরুল আলম বলেন, ‘শুনেছি সোহাগ মৃধা আওয়ামী লীগ করতেন। এখন কীভাবে বিএনপি করলেন জানি না। কেউ নিজেকে বিএনপি বললেই সে বিএনপি হয়ে যায় না। তিনি আমাদের দলের কেউ নন।’

এসব নিয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা বলেন, ‘আমি কাউকে মিথ্যা মামলা দিইনি। আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী। ইউপি সদস্যদের নির্দিষ্ট দল থাকে না—যে সরকার আসে, তার হয়ে কাজ করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাউয়াছড়া বন থেকে টহল দলের সদস্যের লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দায়িত্বরত মো. সিরাজ মিয়া (৭০) নামের এক বন টহল দলের (সিপিজি) সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের জানকিছড়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার ডলুছড়া এলাকার বাসিন্দা।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সিরাজ মিয়া মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে লাউয়াছড়া বনের জানকিছড়া এলাকায় বন পাহারায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। আজ সকালে খবর পাওয়া যায়, লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ প্রধান সড়কের পাশে সিপিজি ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বন বিভাগের সদস্যরা।

জানতে চাইলে লাউয়াছড়া বনের বনবিট কর্মকর্তা মারজুক হোসেন বলেন, ‘নিহত সিরাজ মিয়ার ডিউটি শেষ হয়েছিল ভোর ৫টার দিকে। সকাল ৬টার দিকে খবর পাই, তাঁর মরদেহ সড়কের পাশে পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে কোনো গাড়ির ধাক্কায় তিনি মারা গেছেন। মরদেহের পাশে গ্লাস ভাঙা টুকরো পাওয়া গেছে।’

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত