Ajker Patrika

পিরোজপুর-৩: পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় কলার ছড়ির সমর্থক নিহত

ঢামেক প্রতিবেদক ও পিরোজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৩৫
পিরোজপুর-৩: পারিবারিক বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় কলার ছড়ির সমর্থক নিহত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষ ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হামলায় কলার ছড়ির এক সমর্থক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। নিহতের নাম জাহাঙ্গীর পঞ্চাইত (৫৫)। পুলিশ বলছে, ফরাজি ও পঞ্চাইত পরিবারের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। তবে তারা দুই পরিবার দুই পক্ষকে সমর্থন করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মামলা দায়ের করেছেন। 

গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে পিরোজপুর মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন জাহাঙ্গীর। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে তাঁকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, সকালে মৃত অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে স্বজনেরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাঁর মাথায় কয়েক জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। শাহবাগ থানা-পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করবে। 

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাসুরা গ্রামে দুই পরিবার ফরাজি ও পঞ্চাইতের মধ্যে পূর্ববিরোধ ছিল। ফরাজির বাড়ির সামনে থেকে আসার সময় বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীরকে পিটিয়ে আহত করা হয়। আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। দুই পরিবার দুটি পক্ষকে সমর্থন করে। জাহাঙ্গীর কলার ছড়ি প্রতীকের সমর্থক ছিলেন।’ 

ওসি আরও বলেন, ‘মামলার এজাহারে বলা হয়েছে পূর্ব শত্রুতার জেরে জাহাঙ্গীরকে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষ। মারামারির মামলা দায়ের করা হলেও পরবর্তীতে এটি প্রেয়ার দিয়ে হত্যা মামলায় নেওয়া হবে। নিহতের স্ত্রী বুলু বেগম বাদী হয়ে ৭ জনকে নামীয় এবং আরও ৪ / ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ 

নিহত জাহাঙ্গীরের বড় ভাই মোজাম্মেল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামে। বাবার নাম তোতাম্বর মিয়া। মঠবাড়িয়ার মেরুখালী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাহাঙ্গীর। স্থানীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামীম শাহনেওয়াজের (কলার ছড়ি) সমর্থক ছিলেন জাহাঙ্গীর। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে বাজারে নির্বাচনী ক্যাম্পে যাচ্ছিলেন। তখন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. রুস্তুম আলী ফরাজির (ঈগল) সমর্থকেরা পেছন থেকে তাঁর মাথায় এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাঁকে মঠবাড়িয়া সদর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়। সকালে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’ 

নিহতের ছেলে ইমরান বলেন, ‘গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা করতে গিয়ে বাদুরা এলাকায় হামলার শিকার হন। প্রথমে তাঁকে উদ্ধার করে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই, পরে সেখান থেকে বরিশাল পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে আজ সকালে তিনি মারা যান। বাবার মাথায় কয়েকটি আঘাতের ক্ষত রয়েছে। শরীরেও পিটানোর দাগ রয়েছে। ফরাজি বাড়ির সবাই ঈগল মার্কার লোক, আমরা এই হত্যার বিচার দাবি করছি।’ 

নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী বুলু বেগম বলেন, ‘পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার স্বামীকে ধারালো অস্ত্র, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে কুপিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তাঁরা। একজন বয়স্ক লোককে নির্মমভাবে হত্যার উদ্দেশে হামলা করা হয়। তার মাথায় আঘাতের অনেক ক্ষত দেখেছি আমরা। আমরা তাঁকে অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারিনি। আসামিদের গ্রেপ্তার চাই, তাঁদের বিচার চাই।’ 

এ বিষয়ে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত