Ajker Patrika

শেবাচিম হাসপাতালে যন্ত্রপাতি অচল, সিন্ডিকেটে জিম্মি রোগী

  • আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স পড়ে আছে
  • ১৩টি এক্স-রে মেশিনের ৮টি বিকল
  • ইকোকার্ডিওগ্রাম মেশিন অচল
  • ৫টি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের ৩টি অচল
  • গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট, সব নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৩৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বৃহত্তর বরিশালের জনসাধারণের সেবা নেওয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল। তবে হাসপাতালের পাশে গড়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যেতে বাধ্য করা, নিম্নমানের খাবার, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সসেবা না পাওয়ায় ভুগছে রোগীরা। সিন্ডিকেট-বাণিজ্যের কারণে রোগীরা সেখানে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলাসহ সন্দ্বীপ-হাতিয়া, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ একাংশের জনসাধারণ শেবাচিমে চিকিৎসা নেয়। হাজার শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি থাকে গড়ে ১ হাজার ৭০০ রোগী। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয় হাজারের বেশি রোগী। হাসপাতালের প্রতিটি সেক্টর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, চিকিৎসকসহ নগরের অনেক প্রভাবশালী ঠিকাদার এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত।

এদিকে হাসপাতালের সার্বিক তদারকিতে গঠিত হয়েছিল ‘স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা কমিটি’। এই কমিটি এখন অকার্যকর। গত ১৫ জুন নতুন সভাপতি হয়েছেন তৎকালীন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। নানা আশা জোগালেও তিনি হাসপাতালে রোগীর সেবা ফেরাতে পারেননি।

নামে অ্যাম্বুলেন্স

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শেবাচিম হাসপাতালে ৩০টি আইসিইউ শয্যা আছে। কিন্তু নেই ডায়ালাইসিস সুবিধা। হৃদ্‌রোগীদের চিকিৎসায় এনজিওগ্রামের সব ব্যবস্থা আছে, নেই চিকিৎসক। কোটি টাকা মূল্যের রোগনির্ণয় সরঞ্জামগুলো বিকল। আইসিইউ সুবিধার অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে এই হাসপাতালে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকারকে ভারত সরকারের উপহারের ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্সের এটি একটি। হাসপাতাল সূত্র বলছে, এটি পড়ে আছে। এখন পর্যন্ত কোনো রোগী এই অ্যাম্বুলেন্সসেবা পায়নি। এ ছাড়া হাসপাতালে আরও চারটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেগুলোর সেবা থাকে নামমাত্র। এর বাইরে গড়ে উঠেছে অ্যাম্বুলেন্সের বিশাল বাণিজ্য। শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। শেবাচিম থেকে ১৫৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানীতে রোগী বহনে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট।

বিকল রোগনির্ণয় যন্ত্র

শেবাচিমের দুটি সিটি স্ক্যান মেশিনের একটি পরিত্যক্ত হয়েছে অনেক বছর আগে। হাসপাতালের ৫টি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের ৩টি অচল ২-৩ বছর ধরে। ১৩টি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে বিকল ৮টি। এগুলোর মধ্যে ৫টি এক্স-রে মেশিন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একমাত্র এমআরআই মেশিনটি বিকল ৭ বছর ধরে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে ইকোকার্ডিওগ্রাম মেশিন অচল থাকায় সেবা পাচ্ছেন না হৃদ্‌রোগীরা।

হাসপাতালের ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয় ২০১৪ সালে। সেটি বন্ধ থাকায় মাঝে টানা তিন বছর এনজিওগ্রাম বন্ধ ছিল। সেটি পরিচালনাকারী টেকনিশিয়ান গোলাম মোস্তফা বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ এই মেশিন বারবার সার্ভিসিং করে সচল রাখতে হচ্ছে। যেকোনো সময়ে আবার অচল হয়ে যেতে পারে। ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কোবাল্ট-৬০ মেশিনটি স্থায়ীভাবে অচল।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সিন্ডিকেট

হাসপাতালের সামনে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেখানে রোগী পাঠালে ৪০ শতাংশ হারে কমিশন পান চিকিৎসক। রোগী নেওয়া দালালেরা পান ১০ শতাংশ। হাসপাতাল থেকে প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার দালাল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন হাসপাতালের কর্মচারী শহীদ, কালাম মৃধা, মিলন ও ধলা জাফর। রোগীপ্রতি ৪০ শতাংশ কমিশন পান। ৫ ভাই রবিন, কবির, আজিজুল, হাসিব, মিলন এবং তাঁদের এক ভগ্নিপতি হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য রোগী ভাগিয়ে নেন। প্রতি হাজারে ৩০০ টাকা কমিশন পান তাঁরা।

খাবারের নিম্নমানের

হাসপাতালের খাবারের মান নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তালিকায় অনেক খাবার সরবরাহ করা হয় না। তারপরও নিয়মিত বিল ও যুগের পর যুগ একই ঠিকাদারের ওপরই ভরসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেবাচিম হাসপাতালে ৩ বেলা খাবারসহ সব ধরনের কাজের ঠিকদার হলেন চারজন। ৩০ বছরের বেশি সময় তাঁরাই ঠিকাদারি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন। চার ঠিকাদার হলেন হাসিব মল্লিক, মরন পিপলাই, আশরাফুল ইসলাম রেজা ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মজিবর রহমান। ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদারি করেন শাহীন নামের একজন।

এই হাসপাতালে চলতি বছর চিকিৎসা নিয়েছেন বরিশাল নগর উন্নয়ন ফোরামের সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু। তিনি বলেন, তিনি ২৭ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত শেবাচিমতে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালটির অব্যবস্থাপনা অবর্ণনীয়। হাসপাতালের সিন্ডিকেট ভাঙাই নতুন পরিচালকের বড় চ্যালেঞ্জ। এর ওপর নির্ভর করবে হাসপাতালে ভবিষ্যৎ সেবার মান।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যা হচ্ছে

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর হাসপাতালের পরিচালকসহ অনেক চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের হাসপাতাল ছাড়তে হয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর আন্দোলনের মুখে পরিচালক পদত্যাগ করেন। হাসপাতাল সূত্র বলছে, চিকিৎসকের সংখ্যা আগেও কম ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চিকিৎসকেরা চলে যাওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালটির পরিচালক নিযুক্ত হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর। তিনি এখনো দায়িত্ব নেননি।

তাই হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় উপপরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে। তাঁর মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। একই বিষয়ে জানতে কল করা হয় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রেজাউল আলম রায়হানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যস্ত আছেন। এ বিষয়ে কথা বলবেন না।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল নগর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, সরকারি হাসপাতালের দামি যন্ত্রপাতিগুলো কেন অচল থাকবে? আসলে কর্মচারীরাই এগুলো অচল করে রোগী বাইরে পাঠায়। তিনি আরও বলেন, যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ করা, ওয়ার্ডগুলোয় সেবা নিশ্চিত করা, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করাই হবে নতুন প্রশাসনের বড় চ্যালেঞ্জ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাগরে মাছ শিকার: ৬টি ট্রলার জব্দসহ ১০৪ জন আটক

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আটক জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আটক জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের অভিযোগে ছয়টি ফিশিং ট্রলার জব্দসহ ১০৪ জন জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। গত সোমবার গভীর সাগর থেকে আটক জেলেদের গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে নৌবাহিনীর মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ মাছ আহরণের সময় টহলরত নৌবাহিনী গত সোমবার বিকেলে ছয়টি ফিশিং ট্রলার জব্দ করে। জব্দ ট্রলারগুলোতে ১০৪ জন জেলে ছিলেন। এই জেলেরা মূলত বরগুনা, পাথরঘাটা, পটুয়াখালী, রাঙ্গাবালী ও মহিরপুর এলাকার বাসিন্দা।

এ ছাড়া ট্রলারগুলোতে আনুমানিক ৫ টন মাছ পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগই ইলিশ। মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, উদ্ধার হওয়া এসব মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হবে। আটক জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হবে, তবে ট্রলারমালিকদের আর্থিক জরিমানা করা হবে।

উল্লেখ্য, মা ইলিশ রক্ষা ও প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে সাগর-নদীতে মাছ শিকার না করতে ২২ দিনের (৪ থেকে ২৫ অক্টোবর) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ায় এ জেলেদের নৌবাহিনী আটক করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা, ১ নভেম্বর অনশনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিদেশিদের হাতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইজারার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ১ নভেম্বর অনশনের ঘোষণা দিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ বুধবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদ মোড়ে শ্রমিক সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ-মিছিল বন্দরের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

নগরীর আক্তারুজ্জামান সেন্টারের উত্তর গেটে বিশাল শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদুল ইসলাম, বিএলএফের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক শিমুল, বিএফটিইউসির সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক হুনি, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা ইব্রাহিম খোকন, ডকইয়ার্ড শ্রমিক দল নেতা তসলিম হোসেন সেলিম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, সঞ্চালনা করেন স্কপ নেতা জাহেদ উদ্দিন শাহিন।

সমাবেশে নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার এবং অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এখন দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। অথচ একে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী।

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বক্তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে একতরফাভাবে নেওয়া এই সিদ্ধান্তকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

নেতারা আগামী ১ নভেম্বর দিনব্যাপী অনশনে শ্রমিক, কর্মচারী ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে চট্টগ্রাম বন্দর ও এনসিটিকে দেশি-বিদেশি ইজারা ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করা যায়।

সমাবেশে সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত সব প্রকার সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্কপ নেতারা।

তাঁরা বলেন, পুলিশ দিয়ে কিংবা প্রশাসনিক বাধা সৃষ্টি করে কখনোই কোনো ন্যায্য আন্দোলন-সংগ্রামকে দমন করা যায়নি, এবারও তা সম্ভব হবে না। শ্রমিকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‘আমার একটাই ছেলে। আমার মাসুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল কারা! আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এভাবেই আহাজারি করছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস। ছেলে আমির হামজার নিহতের খবর শুনে শোকে পাগলপ্রায় তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমির হামজার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশ।

সে চান্দড়া তা’লিমুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল। গত রোববার আসরের নামাজের পর থেকে ওই মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নিখোঁজ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে পানিতে ভাসমান একটি বস্তা দেখতে পান। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি খুললে এক কিশোরের মরদেহ বেরিয়ে আসে। মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল এবং মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে বস্তার মধ্যে কিছু ইটও পাওয়া যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমির হামজার বাবা ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।

পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিকেলে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত দুই দিন ধরে পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিংও করেছিল।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাবন্দী মরদেহটি উদ্ধার করে রাতেই থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ঘটনা উদ্‌ঘাটন করতে পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় জরিমানা

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আ. সালামের বাড়ি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড লাহেড়িপাড়া মহল্লায় পলাশতলী গ্রামে।

চিনিতে ভেজাল মেশানোর খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় এক ড্রাম চিটাগুড় ও ভেজালমিশ্রিত ২ হাজার কেজি লাল চিনি জব্দ করা হয়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত