Ajker Patrika

চিকিৎসক-সংকটে ব্যাহত বার্ন ইউনিটের সেবা

খান রফিক, বরিশাল 
Thumbnail image
ফাইল ছবি

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। ইউনিটের স্থায়ী তিন চিকিৎসকের মধ্যে একজনকে রেখে বাকিদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। প্রেষণে সার্জারি বিভাগের একজন চিকিৎসক কোনোরকমে এর দেখভাল করছেন। এতে করে শীতের মৌসুমে হাসপাতালে আসা পোড়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

গতকাল সোমবার বার্ন ইউনিটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে রোগী ভর্তি অর্ধশত। ৩০ শয্যার এই ইউনিট শীতের সময় প্রতিদিন রোগীতে ভরে থাকে। কর্তব্যরত সেবিকারা জানান, স্থায়ী চিকিৎসক আজাদ সপ্তাহে দু-এক দিন রাউন্ডে আসেন। কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হওয়ায় তাঁকে পাঠদানসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।

ইউনিটের কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, গত রোববার একজন চিকিৎসক (ডা. আজাদ) এসেছিলেন। এ ছাড়া আর চিকিৎসকের দেখা মেলে না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগীরা।

ইউনিটের তথ্যমতে, ৩০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। অতিরিক্ত রোগীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। রোগীরা অভিযোগ করেন, দক্ষিণাঞ্চলের দূরদূরান্ত থেকে আসা পোড়া রোগীদের অনেকটা জোর করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঢাকায়।

চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর মা রহিমা বেগম বলেন, ‘গরম পানি পড়ে আমার বাচ্চার পা পুড়ে গেছে। বার্নের বাচ্চার ভর্তি দিয়েছে শিশুসার্জারি বিভাগে।’ অন্য এক রোগীর মামা আব্দুর রহিম বলেন, ‘বার্ন ইউনিটের রোগী এখন রাখা হচ্ছে শিশু সার্জারিতে। এই ইউনিটে সিট নেই, ডাক্তার নেই।’

হাসপাতালের তথ্যমতে, বার্ন ইউনিট চালু হয়েছিল ২০১৫ সালে। সে সময়ের একমাত্র চিকিৎসক জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট এম এ আজাদ ২০২০ সালের এপ্রিলে মারা যান। নতুন চিকিৎসক পদায়ন না হওয়ায় ওই বছরের ১৮ এপ্রিল ইউনিটটি বন্ধ করা হয়। তবে ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠিতে লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর তিনজন চিকিৎসক পদায়ন করে নতুন করে ইউনিটটি চালু করা হয়।

ইউনিটের জনবল কাঠামোয় একজন করে অধ্যাপক, রেজিস্ট্রার, দুজন সহকারী রেজিস্ট্রার, জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ আটজন চিকিৎসক, ২৩ জন নার্স ও ১০ জন কর্মচারী প্রয়োজন। কিন্তু এখানে থাকা তিন চিকিৎসকের মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক মো. মারুফুল ইসলাম গত ১৯ আগস্ট ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির যুগ্ম পরিচালক পদে যোগ দেন। এর আগে বদলি হন সহকারী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম সুমন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপপরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ইউনিটে তিনজন চিকিৎসক ছিলেন। দুজন সম্প্রতি বদলি হয়ে গেছেন। চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখতে সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট শাকিল খানকে ডেপুটেশনে এই ইউনিটে পদায়ন করা হয়েছে। তিনিই এখন ইউনিটের চিকিৎসায় একমাত্র ভরসা। উপপরিচালক স্বীকার করেন, এই হাসপাতালের জন্য যে মাপের বার্ন ইউনিট থাকা দরকার, তা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত