Ajker Patrika

বেতাগীতে ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ, হুমকিতে পরিবেশ

হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী (বরগুনা) 
বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটার ভেতরে চেরা হচ্ছে কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটার ভেতরে চেরা হচ্ছে কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আইন লঙ্ঘন করে বরগুনার বেতাগী উপজেলার ইটভাটাগুলোয় জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এসব কাঠ সামাজিক বনায়ন থেকে সংগ্রহ করায় হুমকির মুখে পরিবেশ। জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানো ইটভাটাগুলো বেশির ভাগ জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে থাকায় কালো ধোঁয়া ও দূষণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। কাঠ চেরাইয়ের জন্য ইটভাটার মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে করাতকল।

বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ার দূষণে শিশুদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এতে একদিকে যেমন শ্বাসকষ্ট হয়, অন্যদিকে ফুসফুসে সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া হাঁপানি, চোখ দিয়ে পানি পড়া এমনকি ক্যানসার রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

বরগুনা ইটভাটা মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বেতাগী উপজেলায় ৬টি ইটভাটা সচল রয়েছে। এসব ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করছেন মালিকেরা। ভাটাগুলো হচ্ছে মেসার্স বিসমিল্লা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স হাওলাদার ব্রিকস, মেসার্স আরএমবি ব্রিকস, মেসার্স কেজেডএফ ব্রিকস, মেসার্স এমএইচকে ব্রিকস।

ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত আইন, ২০১৩-এর ধারা ৬-এ বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসাবে কোনো জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৬ বিধান লঙ্ঘন করে ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করেন, তাহলে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ (তিন) লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটায় কাঠ দিয়ে দেদার ইট পোড়ানো হচ্ছে। এই ভাটার অভ্যন্তরে কয়েক হাজার মণ কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কাঠ চেরাইয়ে জন্য ভাটার ভেতরে করাতকল বসিয়ে সেখানে শ্রমিকেরা কাঠ চেরাইয়ের কাজ করছেন।

বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটায় স্তূপ করে রাখা কয়েক হাজার মণ কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটায় স্তূপ করে রাখা কয়েক হাজার মণ কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আরএমবি ভাটার পরিচালক মো. জলিল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়লার সংকট থাকায় আমরা এ বছর কাঠ দিয়ে ইট পুড়ছি। টাকা দিলেও আমরা কয়লা পাই না। তা ছাড়া বাজারে গত বছরের কয়লা পাওয়া যায়। তাতে ইট ভালোভাবে পুড়ে না।’

উপজেলার বদনীখালী এলাকায় মেসার্স বিসমিল্লা এন্টারপ্রাইজ ইটভাটার ওপরে কাঠ স্তূপ করে রাখা। সেই কাঠ এক শ্রমিক ভাটার চুল্লিতে দিচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর কথা থাকলেও এই ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। প্রতিদিন ভাটায় ৩০০ থেকে ৪০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়।

উপজেলার বুড়ামজুমদার গ্রামের হাওলাদার ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, চারজন শ্রমিক ভাটার চুল্লিতে কাঠ দিচ্ছেন এবং ভাটার অভ্যন্তরে কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ভাটার শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, এই ভাটায় প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়।

হাওলাদার ইটভাটার ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, কয়লার অনেক দাম থাকায় ইট পোড়ানোর জন্য আমরা কাঠ ব্যবহার করছি। কারণ, কয়লার দাম বেশি এবং ইটের দাম কম।

বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটায় স্তূপ করে রাখা কয়েক হাজার মণ কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম কবিরের আরএমবি নামের ইটভাটায় স্তূপ করে রাখা কয়েক হাজার মণ কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বেতাগীর ঝোপখালী এলাকায় মেসার্স এমএইচকে ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, দুজন শ্রমিক চুল্লি জ্বালানোর জন্য ভাটার ওপরে কাঠ তুলছেন। কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর কারণ জানতে চাইলে ভাটার ম্যানেজার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

এই ভাটার মালিক আমিনুর ইসলাম বলেন, ‘কয়লা কেনার মতো আমার পুঁজি নেই। তাই ইট পোড়াতে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করছি। আমি এখন নিরুপায়।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিংকন বলেন, কোনো অবস্থাতেই ভাটায় কাঠ পোড়ানো উচিত নয়। এভাবে ইট পোড়ানোর জন্য গাছ কাটা অব্যাহত থাকলে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

বরগুনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হায়াত মাহমুদ রকিব বলেন, ‘কোনো ইটভাটায় যদি ইট পোড়ানোর জন্য কাঠের ব্যবহার হয়, তাহলে ভাটামালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইটভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো যাবে না। জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলে যেসব ভাটায় কাঠ পুড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাজারের কোলাহল ছাপিয়ে দোকানির সঙ্গে বকের বন্ধুত্ব

মো. আশিকুর রহমান তুষার, বাউফল (পটুয়াখালী)
বাউফল উপজেলার নুরাইনপুর বাজারে দোকানদার হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে বকের বন্ধুত্ব। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাউফল উপজেলার নুরাইনপুর বাজারে দোকানদার হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে বকের বন্ধুত্ব। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারের কোলাহল, মানুষের ভিড়—সবকিছু উপেক্ষা করে একটি সাদা বক নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে থাকে দোকানের সামনে। কিছুক্ষণ পর সে ঢুকে পড়ে দোকানের ভেতরে, গিয়ে বসে দোকানদারের পাশে—যেন বহুদিনের আপন সঙ্গী। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নুরাইনপুর বাজারে সম্প্রতি এমন অদ্ভুত, কিন্তু হৃদয়ছোঁয়া এক দৃশ্যের দেখা মিলছে।

নুরাইনপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. হেমায়েত উদ্দিন (৩৮) প্রায় চার বছর ধরে বাজারের মসজিদের পাশে একটি স্টেশনারির দোকান পরিচালনা করছেন। চার মাস ধরে তাঁর এই দোকানেই বসবাস করছে এই সাদা বকটি।

সরেজমিন দেখা গেছে, বকটি কখনো দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, কখনো ছাউনিতে গিয়ে বসে। আবার অনেক সময় দোকানদার হেমায়েত উদ্দিনের চেয়ারের হাতলে এসে নির্ভয়ে বসে পড়ে। বাজারে প্রচুর ভিড়ভাট্টা থাকলেও বকটির মধ্যে কোনো ভয়ের ছাপ নেই। শুধু তা-ই নয়, সে দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট করে না, এমনকি নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করে—যেন সে নিয়ম মেনে চলা পরিবারেরই একজন সদস্য।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. জলিল বলেন, ‘মানুষ ও বকের এমন বন্ধুত্ব আগে কখনো দেখিনি। প্রতিদিন বাজারে এলেই দেখা যায়, বকটি হেমায়েতের দোকানে বসে আছে। সে যেভাবে এর যত্ন নেয়, তা সত্যিই বিস্ময়কর।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরাইনপুর বাজারসংলগ্ন খানবাড়ির একটি বকের বাসা থেকে প্রায় চার মাস আগে ঝড়ে পড়ে গিয়েছিল বকটির একটি ছানা। তখন একটি গুইসাপ সেটিকে আক্রমণ করলে ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন এগিয়ে এসে ছানাটিকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধারের পর তিনি অত্যন্ত যত্নসহকারে ছানাটির পরিচর্যা করে নিজের সন্তানের মতো লালন করেন। সেই থেকেই বকটি দোকানদারের সঙ্গে এক অদ্ভুত মায়া ও বন্ধনে জড়িয়ে গেছে।

স্থানীয়দের মতে, হেমায়েত উদ্দিন ও বকের এই অনন্য সম্পর্ক শুধু নুরাইনপুর বাজারেই নয়, এখন পুরো বাউফল উপজেলাতেই আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১৪
সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

তুচ্ছ ঘটনায় মধ্যরাতে সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তবে তাঁদের মধ্যে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সিটি ইউনিভার্সিটির। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো প্রকার সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেলের সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে থুতু ফেললে তা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে। এ নিয়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে গেলে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়।

আগুনের ছাপ সিটি ইউনিভার্সিটির মূল ফটকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনের ছাপ সিটি ইউনিভার্সিটির মূল ফটকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

একপর্যায়ে রাত ১২টার পর ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ করে ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় তাঁরা প্রশাসনিক ভবন ভাঙচুরসহ লুট করে কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। পুড়িয়ে ফেলে তিনটি বাসসহ একটি প্রাইভেট কার। ভাঙচুর চালানো হয় আরও পাঁচ যানবাহনে। ভোররাতে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ফোটানো হয় ককটেল। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু জায়গায় আগুন দেখা গেছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উত্তেজনার একপর্যায়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

সিটি ইউনিভার্সিটির আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিটি ইউনিভার্সিটির আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে একজন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে ফোন দিলে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাউকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।

সাভার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টঙ্গিবাড়ীতে শিক্ষকসংকটে পাঠদান,বিদ্যালয়ে নেই টয়লেট ব্যবস্থা

মো. মাসুম, টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ)
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাসাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাসাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাসাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে শিক্ষকসংকট। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মাত্র তিনজন শিক্ষক দিয়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার মান নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষকসংকটের কারণে একাধিক শ্রেণির ক্লাস একত্রে নিতে হয়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েরই ভোগান্তি বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য পদে নতুন শিক্ষক না আসায় বিদ্যালয়ের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

এ ছাড়া বিদ্যালয়টিতে নেই কোনো টয়লেট সুবিধা। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন পার করছেন। বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য এ সমস্যা আরও বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জয়ন্ত মিত্র বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে জরুরি ভিত্তিতে টয়লেট স্থাপন করা প্রয়োজন। টয়লেট না থাকায় শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষক-কর্মচারীরাও প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়ছেন।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমত আরা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষকসংকটের মধ্যে আমরা পাঠদান করাচ্ছি। আমিসহ মাত্র তিনজন শিক্ষক দিয়ে পুরো বিদ্যালয়ের ক্লাস পরিচালনা করছি। পাশাপাশি টয়লেট না থাকায় সবাইকে চরম কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।’

স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, হাসাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্রুত নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও টয়লেট নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার পরিবেশ আরও উন্নত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির চেষ্টা: পিরোজপুরে মাংস ব্যবসায়ীকে দণ্ড

পিরোজপুর প্রতিনিধি
গতকাল রাতে মাংস ব্যবসায়ীকে জরিমানা, অনাদায়ে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে মাংস ব্যবসায়ীকে জরিমানা, অনাদায়ে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিরোজপুর সদর উপজেলার ভাইজোড়া এলাকায় অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগে আক্রান্ত একটি গরু জবাই করে মাংস বিক্রির চেষ্টা করার অভিযোগে মো. রাজা (৩৫) নামে এক মাংস ব্যবসায়ীকে জরিমানা, অনাদায়ে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রোববার (২৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আল আমীন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মো. রাজা সদর উপজেলার হরিণা গাজীপুর এলাকার মো. রুস্তম সেখের ছেলে। তিনি পিরোজপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার রয়েল বেঙ্গল মার্কেটে মাংস বিক্রি করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাংস ব্যবসায়ী রাজার নির্দেশে গভীর রাতে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুটি গোপনে জবাই করা হয় এবং মাংস বিক্রির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি যাচাই করে তাৎক্ষণিক প্রশাসনকে অবহিত করেন।

পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার অপরাধে ব্যবসায়ী রাজাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পশুচিকিৎসক ওলিউল্লাহ জানান, ভোররাতে রাজা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি গিয়ে গর্ভবতী গরুটি প্রসব করান। মৃত বাচ্চা প্রসবের পর দেখা যায় মা গরুর একটি পা সম্পূর্ণ পচে গেছে। তিনি নিশ্চিত করেন, গরুটি অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত ছিল এবং এই মাংস কোনোভাবেই মানুষের খাবার উপযোগী নয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আল আমীন বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় মাংস কেনাবেচায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। অসুস্থ বা মৃত পশুর মাংস বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশু জবাই ও মাংস বিক্রির চেষ্টা করলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’

তিনি আরও জানান, জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা রক্ষায় এ ধরনের অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে এবং এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে।

পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস আগুনে পুড়িয়ে সম্পূর্ণ বিনষ্ট করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত