রামপালে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন
এস. এস শোহান, বাগেরহাট

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। কৃষিজমির সংকটে কাজের সন্ধানে অনেক কৃষক পাড়ি জমিয়েছেন বড় শহরে। এভাবে শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণ চলতে থাকলে শহরে আসার হার বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে রামপালে সরকারি উন্নয়নকাজের জন্য জমি অধিগ্রহণের হার বেশি। গেল তিন দশকে এই উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৮৩৪ একর, খানজাহান আলী বিমানবন্দরের জন্য ৬৩০ একর, খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের জন্য ১৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া রামপাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফায়ার সার্ভিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানা, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সন্ন্যাসী এলাকায় প্রায় ২০০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে নৌ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
এর বাইরে পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে ও পরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার ফয়লা বিমানবন্দর থেকে গোনাইব্রিজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান জমি ক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে ৩৫০ একর জমি ক্রয় করে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে শিল্পগোষ্ঠী ওরিয়ন গ্রুপ। এ ছাড়া ফারুক জুটস মিলস লি., বে-ইস্টার্ন করপোরেশন, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা এলপিজি, পেট্রোম্যাক্স অফিসার্স রেসিডেন্স, ৫টি তেলপাম্প, কয়েকটি মাছ ক্রয়-বিক্রয় আড়ত গড়া হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কৃষিজমিতে বাড়ি ও ছোট ছোট দোকান নির্মাণ করেছেন জমির মালিকেরা। এ ছাড়া পশুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙনে গেল তিন দশকে এই উপজেলার অন্তত ৫০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
তবে রামপাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গেল ১৫ বছরে এই উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে ২ হাজার ৫০০ একর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রামপাল উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৬৬৩ একর। ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৬৫ একরে। তবে বাস্তবিক অর্থে এই পরিমাণ আরও বেশি। এভাবে দিনের পর দিন জমি কমার কারণে কৃষিকাজ ও ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল অনেকে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বড় শহরে।
উপজেলার রাজনগর এলাকার গুরুদাস মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় একসময় অনেক ধান উৎপাদন হতো, আবার মাছও পাওয়া যেত। কিন্তু ধানি জমি কমতে কমতে এখন অনেকের শুধু বাড়িটুকু আছে। কয়েক বছর আগে আমার প্রতিবেশী তারক দাস পরিবার নিয়ে কাজের আশায় ঢাকা চলে গেছে। মাত্র তিন কাঠা জমি আছে তার বাড়িতে, এতে কি আর সংসার চলে। শুনেছি, ঢাকায় নিজে রিকশা চালায়, বউ মানুষের বাসায় কাজ করে। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছে।’ শুধু তারক নন, আশপাশের অনেকে কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়েছে বলে জানান এই বৃদ্ধ।
গৌরম্ভা এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রামে গেছেন দিনমজুর হুমায়ুন কবির। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মানুষের ধানখেত ও বাড়িতে আমি কাজ করতাম। কিন্তু বছর দশেক হলো, এলাকায় কাজ খুব কম। কারণ, আগের মতো ধানি জমি নেই। যার কারণে চট্টগ্রামে চলে আসছি। রাজমিস্ত্রির জোগান দিই, ৩০ দিনই কাজ করা যায়। বেতনও ভালো।’
ওরিয়ন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে জমি বিক্রেতা অমৃত লাল সরকার নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘১০ লাখ টাকায় প্রতি বিঘা জমি বিক্রি করেছি। ওই জমিতে অন্তত ৩০০ জন কৃষক ধান চাষ করতেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ছিল বর্গাচাষি, আবার কেউ কেউ ধানচাষিদের দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। তাঁরা মূলত সমস্যায় পড়েছেন।’
কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। খুলনা পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আইনজীবী কুদরাত-ই-খুদা বলেন, ভূমি উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী কৃষিজমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না। রামপালে যেভাবে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার কৃষিজীবীরা জীবিকা সংকটে পড়বেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিদ, নগর-পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সরকারকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বনায়ন, মাছ চাষ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য আলাদা স্থান নির্বাচনের অনুরোধ করে আসছে। তারপরও সরকারের চোখের সামনে কৃষিজমিতে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এদিকে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এভাবে ফসলি জমি ক্রয় করলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কিছু করার নেই বলে জানান জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, শিল্প গ্রুপগুলো সরাসরি তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করে না। তারা প্রথমে স্থানীয় জমির দালালদের মাধ্যমে জমি ক্রয় চুক্তি করেন, পরে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা পরিচালকদের বিশ্বস্ত কারও নামে জমিটি দলিল করেন। পরে ওই জমিতে বালু ভরাট ও সাইনবোর্ড দিয়ে নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের চাইলেও কিছু করার নেই।
অন্যদিকে, শিল্প গ্রুপের ক্রয় করা জমিতে বালু ভরাটের জন্য দেদার ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। যার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, ‘১৫ বছরে এই উপজেলায় কিছু আবাদযোগ্য জমি কমেছে। তবে উৎপাদন যাতে না কমে, এ জন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের ধান চাষ এবং একই জমিতে বারবার চাষাবাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চাষের জমি কমলেও উৎপাদন কমেনি বলে দাবি এই কর্মকর্তার।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপপরিচালক আসাদুর রহমান বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠান করতে হলে দুই ধরনের ছাড়পত্র নিতে হয়। একটি শুরুতে অবস্থানগত ছাড়পত্র, আরেকটি পরিবেশগত ছাড়পত্র। রামপালে যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হচ্ছে, তারা যদি পরিবেশের ছাড়পত্র না নেয়, অথবা পরিবেশের ক্ষতি করে, সে ক্ষেত্রে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন ও খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌসী বলেন, ‘সম্প্রতি আমি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। বেশির ভাগ জমি আমি যোগদানের আগে হস্তান্তর ও বালু ভরাট হয়েছে। কৃষিজমি রক্ষার যে নীতিমালা রয়েছে, সেখানে উপজেলা প্রশাসনের যতটুকু দায়িত্ব রয়েছে, তা আমরা পালন করব।’ এ ক্ষেত্রে জমির মালিক এবং স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। কৃষিজমির সংকটে কাজের সন্ধানে অনেক কৃষক পাড়ি জমিয়েছেন বড় শহরে। এভাবে শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণ চলতে থাকলে শহরে আসার হার বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে রামপালে সরকারি উন্নয়নকাজের জন্য জমি অধিগ্রহণের হার বেশি। গেল তিন দশকে এই উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৮৩৪ একর, খানজাহান আলী বিমানবন্দরের জন্য ৬৩০ একর, খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের জন্য ১৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া রামপাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফায়ার সার্ভিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানা, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সন্ন্যাসী এলাকায় প্রায় ২০০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে নৌ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
এর বাইরে পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে ও পরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার ফয়লা বিমানবন্দর থেকে গোনাইব্রিজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান জমি ক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে ৩৫০ একর জমি ক্রয় করে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে শিল্পগোষ্ঠী ওরিয়ন গ্রুপ। এ ছাড়া ফারুক জুটস মিলস লি., বে-ইস্টার্ন করপোরেশন, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা এলপিজি, পেট্রোম্যাক্স অফিসার্স রেসিডেন্স, ৫টি তেলপাম্প, কয়েকটি মাছ ক্রয়-বিক্রয় আড়ত গড়া হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কৃষিজমিতে বাড়ি ও ছোট ছোট দোকান নির্মাণ করেছেন জমির মালিকেরা। এ ছাড়া পশুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙনে গেল তিন দশকে এই উপজেলার অন্তত ৫০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।
তবে রামপাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গেল ১৫ বছরে এই উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে ২ হাজার ৫০০ একর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রামপাল উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৬৬৩ একর। ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৬৫ একরে। তবে বাস্তবিক অর্থে এই পরিমাণ আরও বেশি। এভাবে দিনের পর দিন জমি কমার কারণে কৃষিকাজ ও ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল অনেকে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বড় শহরে।
উপজেলার রাজনগর এলাকার গুরুদাস মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় একসময় অনেক ধান উৎপাদন হতো, আবার মাছও পাওয়া যেত। কিন্তু ধানি জমি কমতে কমতে এখন অনেকের শুধু বাড়িটুকু আছে। কয়েক বছর আগে আমার প্রতিবেশী তারক দাস পরিবার নিয়ে কাজের আশায় ঢাকা চলে গেছে। মাত্র তিন কাঠা জমি আছে তার বাড়িতে, এতে কি আর সংসার চলে। শুনেছি, ঢাকায় নিজে রিকশা চালায়, বউ মানুষের বাসায় কাজ করে। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছে।’ শুধু তারক নন, আশপাশের অনেকে কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়েছে বলে জানান এই বৃদ্ধ।
গৌরম্ভা এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে চট্টগ্রামে গেছেন দিনমজুর হুমায়ুন কবির। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মানুষের ধানখেত ও বাড়িতে আমি কাজ করতাম। কিন্তু বছর দশেক হলো, এলাকায় কাজ খুব কম। কারণ, আগের মতো ধানি জমি নেই। যার কারণে চট্টগ্রামে চলে আসছি। রাজমিস্ত্রির জোগান দিই, ৩০ দিনই কাজ করা যায়। বেতনও ভালো।’
ওরিয়ন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে জমি বিক্রেতা অমৃত লাল সরকার নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘১০ লাখ টাকায় প্রতি বিঘা জমি বিক্রি করেছি। ওই জমিতে অন্তত ৩০০ জন কৃষক ধান চাষ করতেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে ছিল বর্গাচাষি, আবার কেউ কেউ ধানচাষিদের দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। তাঁরা মূলত সমস্যায় পড়েছেন।’
কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। খুলনা পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আইনজীবী কুদরাত-ই-খুদা বলেন, ভূমি উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী কৃষিজমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান করা যাবে না। রামপালে যেভাবে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার কৃষিজীবীরা জীবিকা সংকটে পড়বেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিদ, নগর-পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সরকারকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বনায়ন, মাছ চাষ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য আলাদা স্থান নির্বাচনের অনুরোধ করে আসছে। তারপরও সরকারের চোখের সামনে কৃষিজমিতে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এদিকে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এভাবে ফসলি জমি ক্রয় করলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কিছু করার নেই বলে জানান জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, শিল্প গ্রুপগুলো সরাসরি তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করে না। তারা প্রথমে স্থানীয় জমির দালালদের মাধ্যমে জমি ক্রয় চুক্তি করেন, পরে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক বা পরিচালকদের বিশ্বস্ত কারও নামে জমিটি দলিল করেন। পরে ওই জমিতে বালু ভরাট ও সাইনবোর্ড দিয়ে নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের চাইলেও কিছু করার নেই।
অন্যদিকে, শিল্প গ্রুপের ক্রয় করা জমিতে বালু ভরাটের জন্য দেদার ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। যার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্থানীয় প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, ‘১৫ বছরে এই উপজেলায় কিছু আবাদযোগ্য জমি কমেছে। তবে উৎপাদন যাতে না কমে, এ জন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের ধান চাষ এবং একই জমিতে বারবার চাষাবাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চাষের জমি কমলেও উৎপাদন কমেনি বলে দাবি এই কর্মকর্তার।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপপরিচালক আসাদুর রহমান বলেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠান করতে হলে দুই ধরনের ছাড়পত্র নিতে হয়। একটি শুরুতে অবস্থানগত ছাড়পত্র, আরেকটি পরিবেশগত ছাড়পত্র। রামপালে যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হচ্ছে, তারা যদি পরিবেশের ছাড়পত্র না নেয়, অথবা পরিবেশের ক্ষতি করে, সে ক্ষেত্রে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন ও খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌসী বলেন, ‘সম্প্রতি আমি এই উপজেলায় যোগদান করেছি। বেশির ভাগ জমি আমি যোগদানের আগে হস্তান্তর ও বালু ভরাট হয়েছে। কৃষিজমি রক্ষার যে নীতিমালা রয়েছে, সেখানে উপজেলা প্রশাসনের যতটুকু দায়িত্ব রয়েছে, তা আমরা পালন করব।’ এ ক্ষেত্রে জমির মালিক এবং স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
৩৫ মিনিট আগে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
৪২ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেগুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।
রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।
জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।
রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।
জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো।
০৬ জুলাই ২০২৫
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
৪২ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেমুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।
আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’
চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’
এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।
আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’
চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’
এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো।
০৬ জুলাই ২০২৫
নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
৩৫ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেবিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত শুক্রবার তাহিরপুরের শনির হাওর এবং জামালগঞ্জের হালি হাওর ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গা দিয়ে পানি নামছে নদীতে। অধিকাংশ বাঁধ এলাকায় কাজ শুরুর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। শনির হাওরের সাহেবনগর, জালালপুর, নয়ানগর, মারালা, ইগ্রামপুর, নিশ্চিন্তপুর, মুরাদনগর, শ্রীপুর হয়ে তাহিরপুর পর্যন্ত যেসব জায়গায় প্রতিবছর বাঁধের কাজ হয়, সেসব জায়গায় বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো আলামত চোখে পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, হালি হাওরের একাংশ ঘুরে একই রকম পরিস্থিতি দেখা গেছে।
হাওর-সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ওই বোরো ফসল হাতছাড়া হলে দুঃখের সীমা থাকে না এখানকার মানুষের। টেকসই ঝুঁকিমুক্ত বাঁধই পারে এক ফসলি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে। এর মধ্যে বাঁধের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে গোটা হাওরাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়বে।
কথা হয় তাহিরপুরের শনির হাওর পারের নয়ানগর গ্রামের কৃষক বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে। বাঁধের প্রাক্কলন-জরিপের কাজ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরার গেরামের আশপাশে প্রতিবছরই পিআইসিরা বাঁধের কাজ করে। এই বছর জরিপের কাজ এখনো হইছে না, কয়দিনের মধ্যে হয়তো করব। সময় তো চইল্যা যাইতাছে (চলে যাচ্ছে)। তাড়াতাড়ি (দ্রুত) কাজ না করলে তো পরে আমরার দৌড়াদৌড়ি করন (করা) লাগে।’
জানা যায়, ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ হাওর বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ওই বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। সেই দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কাবিটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বিলুপ্ত হয় আগের ঠিকাদারি প্রথা। হাওরপারের কৃষিজীবী মানুষের সমন্বয়ে পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয় নীতিমালায়। কিন্তু পুরোনো প্রথাই বলবৎ আছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে।
নীতিমালায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন; ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু পিআইসি গঠন দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রাক্কলন ও জরিপের কাজই শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষক ও হাওর-সচেতন মানুষের মাঝে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও মেরামতে এ বছর ৬৯০টি পিআইসি গঠন করা হতে পারে। এ কাজে প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে বাঁধের কাজ হবে ৫৩টি হাওরে। চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় সংস্কার ও মেরামতের কাজ হবে। ধর্মপাশা ও শাল্লায় বাঁধের কাজ সবচেয়ে বেশি।
শাল্লা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘২০১৭ সালের প্রলয়ংকরী হাওর বিপর্যয়ের পর বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আসেনি। যে কারণে বাঁধ হওয়া না হওয়া নিয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। যদি অকালবন্যা পেয়ে বসে, তাহলে কৃষকের সর্বনাশ হবে। এখনো প্রাক্কলন-জরিপের কাজই চলছে। কাজের এই মন্থরগতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে।’
পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৮৬টি ক্লোজার (বাঁধের বড় ভাঙা) শনাক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলনের কাজও ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত শুক্রবার তাহিরপুরের শনির হাওর এবং জামালগঞ্জের হালি হাওর ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গা দিয়ে পানি নামছে নদীতে। অধিকাংশ বাঁধ এলাকায় কাজ শুরুর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। শনির হাওরের সাহেবনগর, জালালপুর, নয়ানগর, মারালা, ইগ্রামপুর, নিশ্চিন্তপুর, মুরাদনগর, শ্রীপুর হয়ে তাহিরপুর পর্যন্ত যেসব জায়গায় প্রতিবছর বাঁধের কাজ হয়, সেসব জায়গায় বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো আলামত চোখে পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, হালি হাওরের একাংশ ঘুরে একই রকম পরিস্থিতি দেখা গেছে।
হাওর-সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ওই বোরো ফসল হাতছাড়া হলে দুঃখের সীমা থাকে না এখানকার মানুষের। টেকসই ঝুঁকিমুক্ত বাঁধই পারে এক ফসলি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে। এর মধ্যে বাঁধের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে গোটা হাওরাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়বে।
কথা হয় তাহিরপুরের শনির হাওর পারের নয়ানগর গ্রামের কৃষক বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে। বাঁধের প্রাক্কলন-জরিপের কাজ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরার গেরামের আশপাশে প্রতিবছরই পিআইসিরা বাঁধের কাজ করে। এই বছর জরিপের কাজ এখনো হইছে না, কয়দিনের মধ্যে হয়তো করব। সময় তো চইল্যা যাইতাছে (চলে যাচ্ছে)। তাড়াতাড়ি (দ্রুত) কাজ না করলে তো পরে আমরার দৌড়াদৌড়ি করন (করা) লাগে।’
জানা যায়, ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ হাওর বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ওই বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। সেই দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কাবিটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বিলুপ্ত হয় আগের ঠিকাদারি প্রথা। হাওরপারের কৃষিজীবী মানুষের সমন্বয়ে পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয় নীতিমালায়। কিন্তু পুরোনো প্রথাই বলবৎ আছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে।
নীতিমালায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন; ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু পিআইসি গঠন দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রাক্কলন ও জরিপের কাজই শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষক ও হাওর-সচেতন মানুষের মাঝে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও মেরামতে এ বছর ৬৯০টি পিআইসি গঠন করা হতে পারে। এ কাজে প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে বাঁধের কাজ হবে ৫৩টি হাওরে। চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় সংস্কার ও মেরামতের কাজ হবে। ধর্মপাশা ও শাল্লায় বাঁধের কাজ সবচেয়ে বেশি।
শাল্লা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘২০১৭ সালের প্রলয়ংকরী হাওর বিপর্যয়ের পর বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আসেনি। যে কারণে বাঁধ হওয়া না হওয়া নিয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। যদি অকালবন্যা পেয়ে বসে, তাহলে কৃষকের সর্বনাশ হবে। এখনো প্রাক্কলন-জরিপের কাজই চলছে। কাজের এই মন্থরগতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে।’
পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৮৬টি ক্লোজার (বাঁধের বড় ভাঙা) শনাক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলনের কাজও ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো।
০৬ জুলাই ২০২৫
নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
৩৫ মিনিট আগে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
৪২ মিনিট আগে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেকলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা এখনো নিশ্চিত করেননি।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া জেড এম কাওসার, মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফসহ মুফতি হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে পটুয়াখালী-১ ও ৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আমির পটুয়াখালী-১ আসনে নির্বাচন করার জন্য নির্ধারণ করে দেন। এ কারণে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্ট্রোক করে তিনি বুঝতে পারেন, এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ায় তাঁর হৃদয়ের রক্তনালি ছিঁড়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসেছেন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, তিনি এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার মানুষের পাশে থাকবেন এবং আগামী দিনে তিনি এই অঞ্চলের চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াবেন। বর্তমানে যেভাবে তিনি সাধারণ জীবন যাপন করছেন, এরচেয়ে বেশি বিলাসী জীবন যাপন করবেন না, গাড়ি হবে না, বাড়ি হবে না, তিনি যা আছেন, তা-ই থাকবেন।
এর আগে বিকেলে তিনি শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরে শোডাউন দেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তবে তিনি কোন রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচন করবেন, তা এখনো নিশ্চিত করেননি।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া জেড এম কাওসার, মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান ইউসুফসহ মুফতি হাবিবুর রহমানের অনুসারীরা।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে পটুয়াখালী-১ ও ৪ আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আমির পটুয়াখালী-১ আসনে নির্বাচন করার জন্য নির্ধারণ করে দেন। এ কারণে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্ট্রোক করে তিনি বুঝতে পারেন, এই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ায় তাঁর হৃদয়ের রক্তনালি ছিঁড়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসেছেন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, তিনি এমপি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার মানুষের পাশে থাকবেন এবং আগামী দিনে তিনি এই অঞ্চলের চাঁদাবাজ, দখলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াবেন। বর্তমানে যেভাবে তিনি সাধারণ জীবন যাপন করছেন, এরচেয়ে বেশি বিলাসী জীবন যাপন করবেন না, গাড়ি হবে না, বাড়ি হবে না, তিনি যা আছেন, তা-ই থাকবেন।
এর আগে বিকেলে তিনি শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরে শোডাউন দেন।

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো।
০৬ জুলাই ২০২৫
নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।
৩৫ মিনিট আগে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
৪২ মিনিট আগে
সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে