ইসহাক খান

আগামীকাল ১৬ অক্টোবর, আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মদিন। জন্মদিনে বন্ধু তোকে আকাশের ঠিকানায় শুভেচ্ছা পাঠালাম।
তোর মৃত্যুর এত বছর পরও তোর চলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। আমি যখন তোকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম, তখন বিকেল। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দেয়ালজুড়ে পড়ন্ত বিকেলের রোদ মাখামাখি করে আছে। এই রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলেও মনটা অস্বস্তিতে ভরা। তিনতলার একটি কেবিনে সে আছে। ওর চিকিৎসা চলছে।
কী করে মনটা স্বস্তিতে থাকে?
আমি খবর পেয়েছি ওর হাসপাতালে ভর্তির তিন দিন পর। রুদ্র তিন দিন হলো হাসপাতালে আর আমি ওকে এখনো দেখতে যাইনি! বড় বেদনাবোধ নিয়ে ওর কেবিনে ঢুকলাম। চারপাশ ঘিরে আছে ওর স্বজনেরা। সবাই আমার চেনা। একপাশে বিষণ্ন মুখে দাঁড়িয়ে আছে বীথি। রুদ্রর ছোট বোন। ওরা পিঠাপিঠি ভাইবোন। দুজনের এমন মধুর সম্পর্ক আমি আগে কখনো কোনো ভাইবোনের মধ্যে দেখিনি। দাদার জন্য বীথির উদ্বেগ তার চেহারায় প্রকটভাবে লেপটে আছে। ওর পরের ছোট ভাই ডা. সাইফুল্লাহ দাদার চিকিৎসার ব্যাপারে ভীষণ ব্যস্ত। চোখে চোখে আমাদের কুশলবিনিময় হলো।
রুদ্রর দিকে তাকিয়ে আমি চমকে উঠলাম। ওকে দেখে আমার বুক ভেঙে আসছিল। ওর নাকে-মুখে অনেক নল ঢোকানো। কথা বলা বন্ধ। খাওয়াও নল দিয়ে। আমাকে দেখে চোখের ইশারায় কাছে ডাকল। আমি এগিয়ে কাছে যেতে ওর চোখজোড়া স্থির হয়ে গেল। তারপর সেই স্বপ্নবান চোখজোড়ায় অঝোরে জল গড়াতে লাগল। দেখে আমার বুক ফেটে কান্না উঠে আসতে থাকে। ওর মতো তেজি তরুণের চোখে জল—নিশ্চয়ই ওর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সেই কষ্ট যেন আমাকেও ছুঁয়ে যেতে লাগল। আমিও চোখের জল ধরে রাখতে পারলাম না। আমাদের নীরব কান্না পুরো কেবিনটাকে বেদনাময় করে তুলল। ওর কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। আমার মনে হচ্ছিল, আমি যেন কোথাও পালিয়ে যেতে পারলে বাঁচি।
ডা. সাইফুল্লাহর সঙ্গে কথা হলো। আমি জানতে চাইলাম, ‘ওর কী হয়েছে?’
‘দাদার আলসার। ঘা হয়ে গেছে। নল দিয়ে ঘায়ের লালা বের করা হচ্ছে।’
‘তাহলে তো ওর খুব কষ্ট হচ্ছে?’
সাইফুল্লাহ দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বলল, ‘তা তো একটু হচ্ছে।’
‘এভাবে আর কত দিন নল নাকে-মুখে থাকবে?’
‘সেটা তো চিকিৎসার ওপর নির্ভর করছে।’
হাসপাতালের ব্যালকনিতে আমাদের কথা হচ্ছিল। আমার চোখের সামনে দুর্দান্ত এক তেজি তরুণের মুখোচ্ছবি ভেসে উঠছিল বারবার। আমাদের সময়ে সবচেয়ে সাহসী বন্ধু, সবচেয়ে তেজি, প্রতিবাদী রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, তার এই অসহায় পরিণতি আমি মানতে পারছিলাম না।
ব্যালকনির এপাশে-ওপাশে ওর ভাইবোনেরা বিমর্ষ মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আহা! ওর ভাইবোনগুলো একেকটা যেন সোনার টুকরো। কী বিনয় সবার। আবীর আবদুল্লাহ, রুদ্রর ৩ নম্বর ভাই। ইদানীং এই ভাইটি ফটোগ্রাফিতে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। হাসপাতালের ব্যালকনিতে আমার পাশে উদাস তাকিয়ে ছিল। ওর বিষণ্ন চোখে আমি যেন রুদ্রর ছায়া দেখতে পাচ্ছিলাম। দুই ভাইয়ের চেহারায় অদ্ভুত মিল। আমার চোখে ভেসে ওঠে, তাগড়া এক যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঝাঁকড়া চুল উড়িয়ে দ্রোহের কবিতা পড়ছে, ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন...’।
১৯৭৮ সালে সাহিত্য পত্রিকা ‘সমকাল’-এ ওর একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। কবিতার নাম ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’। সেই শুরু উজান স্রোতে যাত্রা। কবিতাটি তাকে ব্যাপক খ্যাতি ও পরিচিতি এনে দেয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবিতাটি আবৃত্তি হতে থাকে। এ কথাটা বোধ হয় জোর দিয়েই বলা যায়, বাংলাদেশে যাঁরা আবৃত্তি চর্চা করেন, তাঁরা সবাই কোনো না কোনো দিন নিজের তাগিদে এ কবিতাটি কোনো অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছেন। রুদ্র নিজেও এ কবিতাটি অনেক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছে। বাংলাদেশের খ্যাতিমান সব আবৃত্তিকারের কণ্ঠে আমি এ কবিতাটির আবৃত্তি শুনেছি। এমনকি আমি নিজেও এ কবিতাটি দু-একটি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছি। কিন্তু রুদ্র যখন পড়ত, তখন যেন কবিতাটি অন্য মাত্রা পেত। ওর আবৃত্তি আমাকে বেশি টানত।
ওর সঙ্গে পরিচয়ের পর্বটা নাটকীয়। যদিও আমরা একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত ছিলাম। কিন্তু আমাদের পরিচয় হয়েছে পরে। আমি কিছুটা অন্তর্মুখী স্বভাবের। সোজা বাংলায় যাকে বলে পলায়নমুখী। তবে আমি ওকে চিনতাম। বাবরি চুল উড়িয়ে সে দল বেঁধে ক্যাম্পাসে আড্ডা দিয়ে বেড়াত। আমারও ইচ্ছা করত ওদের আড্ডায় অংশ নিই। কিন্তু আমি আমার স্বভাবের ঊর্ধ্বে উঠতে পারতাম না। আড়ালে থাকতেই আমার বেশি ভালো লাগত। একদিন হাকিম চত্বরে আমাদের আরেক বন্ধু কবি তুষার দাস আমার সঙ্গে রুদ্রর পরিচয় করায়। রুদ্র বিস্ময়ে বলে, ‘আপনি ইসহাক খান! আমি তো মনে করেছিলাম আপনার অনেক বয়স।’
‘আপনার এ রকম মনে হওয়ার কারণ?’
‘আপনার লেখা পড়ে। যাক বাদ দেন। আপনি তো প্রচুর লেখেন।’
কথার ফাঁকে কখন আমরা আপনি থেকে তুই হয়ে গেছি, তা নিজেরাও জানি না। কী পেল সে আমার মধ্যে—আমি জানি না। আমি নিজেও ওর মধ্যে এমন কী পেয়ে গেলাম—যা আজও আমার কাছে ব্যাখ্যাতীত। ক্রমে আমাদের ‘তুই’-এর ঘনত্ব বাড়তে লাগল। আমার নাকি বন্ধুভাগ্য ভালো। আমি স্বীকার করি। রুদ্রর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব কিংবা রুদ্র আমাকে বন্ধু বলে গ্রহণ করেছিল কিংবা একসময় আমার হলের ঠিকানা হয়ে উঠেছিল রুদ্রর স্থায়ী ঠিকানা। আমরা একসঙ্গে থাকি। একসঙ্গে চলি। একসঙ্গে খাই। একসঙ্গে ঘুমাই। মজার ব্যাপার হলো, রুদ্র আবাসিক ছাত্র ছিল না। বাসা ভাড়া করে থাকত। বাসাভাড়া ঠিকই দিত, থাকত আমার সঙ্গে হলে ডাবলিং করে। আমার হলের ঠিকানা হয়ে গেল ওর যোগাযোগের একমাত্র ঠিকানা। ওর চিঠি আসত আমার হলের ঠিকানায়। পত্রিকা আসত। চেক আসত। আর আসত ওর একসময়ের ভালোবাসার সঙ্গী তসলিমা নাসরিনের চিঠি। অসম্ভব সুন্দর তার হাতের লেখা। তসলিমা চিঠি লিখত নিয়মিত। প্রতি সপ্তাহে তার চিঠি আসত।
রুদ্র আমাকে অন্তর্মুখী স্বভাব থেকে টেনে বহির্মুখী করে। সাহিত্যের আড্ডায় ও-ই আমাকে ধরে ধরে নিয়ে যেত। ওর পরিচয়ের ব্যাপ্তি ছিল বিশাল। কোনো নতুন জায়গায় গিয়েও ঠিকই ওর চেনা মানুষের কমতি হয়নি। রুদ্র চেনার আগে তারাই চিৎকার করে জড়িয়ে ধরত রুদ্রকে।
১৯৯১ সালের ১৯ জুন। হাসপাতালে গিয়ে ওকে দেখে আমার মনটা ভালো হয়ে গেল। বেশ পরিপাটি লাগছিল ওকে। বেডে শুয়ে আছে। আমাকে দেখে উঠে বসল। ‘কেমন আছিস?’
বলল, ‘অনেকটা ভালো।’
আমি বললাম, ‘তোকে দেখেও তাই মনে হচ্ছে। দেখে ভালো লাগছে। নাকে-মুখে নল নেই।’ সেদিন আমরা অনেকক্ষণ কথা বললাম।
ফেরার সময় বললাম, ‘কাল আসতে পারব না। তারপর দিন আসব।’
পরদিন মানে ২১ জুন আসব। কিন্তু আমি তখনো জানি না ২১ জুন হবে আমার বন্ধুর
জীবনের শেষ দিন।
২০ জুন হাসপাতালে আসতে হলো বন্ধু মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে। রুদ্র আমাকে দেখে বলে, ‘তোর তো আজ আসার কথা না।’
বললাম, ‘মানস ধরে এনেছে। বলল, “রুদ্র অসুস্থ, আমি এখনো দেখতে যাইনি। এইটা কোনো কথা হলো?”’
রুদ্র বলল, ‘এসে ভালোই করেছিস। আজ আমাকে রিলিজ করে দিচ্ছে।’
সেদিন আমরা অনেক মজা করেছিলাম। হাসিঠাট্টা হয়েছিল বেশ। তারপর ট্রলি করে ওকে নিচে নামালাম। ওর হাতে অনেকগুলো রজনিগন্ধার ডাঁটি। গাড়িতে ওঠার পর রজনিগন্ধার একটি ডাঁটা আমার হাতে দিয়ে বলল, ‘শ্যামলীকে দিস। আর বলিস, এবার সত্যি-সত্যি বদলে যাব।’ শ্যামলীকে কথাটা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। পরদিনই তাকে ভয়াবহ দুঃসংবাদটি দিতে হলো। বললাম, ‘আমি একা হয়ে গেছি শ্যামলী। আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র আর নেই!’

আগামীকাল ১৬ অক্টোবর, আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মদিন। জন্মদিনে বন্ধু তোকে আকাশের ঠিকানায় শুভেচ্ছা পাঠালাম।
তোর মৃত্যুর এত বছর পরও তোর চলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। আমি যখন তোকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম, তখন বিকেল। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দেয়ালজুড়ে পড়ন্ত বিকেলের রোদ মাখামাখি করে আছে। এই রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলেও মনটা অস্বস্তিতে ভরা। তিনতলার একটি কেবিনে সে আছে। ওর চিকিৎসা চলছে।
কী করে মনটা স্বস্তিতে থাকে?
আমি খবর পেয়েছি ওর হাসপাতালে ভর্তির তিন দিন পর। রুদ্র তিন দিন হলো হাসপাতালে আর আমি ওকে এখনো দেখতে যাইনি! বড় বেদনাবোধ নিয়ে ওর কেবিনে ঢুকলাম। চারপাশ ঘিরে আছে ওর স্বজনেরা। সবাই আমার চেনা। একপাশে বিষণ্ন মুখে দাঁড়িয়ে আছে বীথি। রুদ্রর ছোট বোন। ওরা পিঠাপিঠি ভাইবোন। দুজনের এমন মধুর সম্পর্ক আমি আগে কখনো কোনো ভাইবোনের মধ্যে দেখিনি। দাদার জন্য বীথির উদ্বেগ তার চেহারায় প্রকটভাবে লেপটে আছে। ওর পরের ছোট ভাই ডা. সাইফুল্লাহ দাদার চিকিৎসার ব্যাপারে ভীষণ ব্যস্ত। চোখে চোখে আমাদের কুশলবিনিময় হলো।
রুদ্রর দিকে তাকিয়ে আমি চমকে উঠলাম। ওকে দেখে আমার বুক ভেঙে আসছিল। ওর নাকে-মুখে অনেক নল ঢোকানো। কথা বলা বন্ধ। খাওয়াও নল দিয়ে। আমাকে দেখে চোখের ইশারায় কাছে ডাকল। আমি এগিয়ে কাছে যেতে ওর চোখজোড়া স্থির হয়ে গেল। তারপর সেই স্বপ্নবান চোখজোড়ায় অঝোরে জল গড়াতে লাগল। দেখে আমার বুক ফেটে কান্না উঠে আসতে থাকে। ওর মতো তেজি তরুণের চোখে জল—নিশ্চয়ই ওর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সেই কষ্ট যেন আমাকেও ছুঁয়ে যেতে লাগল। আমিও চোখের জল ধরে রাখতে পারলাম না। আমাদের নীরব কান্না পুরো কেবিনটাকে বেদনাময় করে তুলল। ওর কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। আমার মনে হচ্ছিল, আমি যেন কোথাও পালিয়ে যেতে পারলে বাঁচি।
ডা. সাইফুল্লাহর সঙ্গে কথা হলো। আমি জানতে চাইলাম, ‘ওর কী হয়েছে?’
‘দাদার আলসার। ঘা হয়ে গেছে। নল দিয়ে ঘায়ের লালা বের করা হচ্ছে।’
‘তাহলে তো ওর খুব কষ্ট হচ্ছে?’
সাইফুল্লাহ দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বলল, ‘তা তো একটু হচ্ছে।’
‘এভাবে আর কত দিন নল নাকে-মুখে থাকবে?’
‘সেটা তো চিকিৎসার ওপর নির্ভর করছে।’
হাসপাতালের ব্যালকনিতে আমাদের কথা হচ্ছিল। আমার চোখের সামনে দুর্দান্ত এক তেজি তরুণের মুখোচ্ছবি ভেসে উঠছিল বারবার। আমাদের সময়ে সবচেয়ে সাহসী বন্ধু, সবচেয়ে তেজি, প্রতিবাদী রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, তার এই অসহায় পরিণতি আমি মানতে পারছিলাম না।
ব্যালকনির এপাশে-ওপাশে ওর ভাইবোনেরা বিমর্ষ মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আহা! ওর ভাইবোনগুলো একেকটা যেন সোনার টুকরো। কী বিনয় সবার। আবীর আবদুল্লাহ, রুদ্রর ৩ নম্বর ভাই। ইদানীং এই ভাইটি ফটোগ্রাফিতে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। হাসপাতালের ব্যালকনিতে আমার পাশে উদাস তাকিয়ে ছিল। ওর বিষণ্ন চোখে আমি যেন রুদ্রর ছায়া দেখতে পাচ্ছিলাম। দুই ভাইয়ের চেহারায় অদ্ভুত মিল। আমার চোখে ভেসে ওঠে, তাগড়া এক যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঝাঁকড়া চুল উড়িয়ে দ্রোহের কবিতা পড়ছে, ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন...’।
১৯৭৮ সালে সাহিত্য পত্রিকা ‘সমকাল’-এ ওর একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। কবিতার নাম ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’। সেই শুরু উজান স্রোতে যাত্রা। কবিতাটি তাকে ব্যাপক খ্যাতি ও পরিচিতি এনে দেয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবিতাটি আবৃত্তি হতে থাকে। এ কথাটা বোধ হয় জোর দিয়েই বলা যায়, বাংলাদেশে যাঁরা আবৃত্তি চর্চা করেন, তাঁরা সবাই কোনো না কোনো দিন নিজের তাগিদে এ কবিতাটি কোনো অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছেন। রুদ্র নিজেও এ কবিতাটি অনেক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছে। বাংলাদেশের খ্যাতিমান সব আবৃত্তিকারের কণ্ঠে আমি এ কবিতাটির আবৃত্তি শুনেছি। এমনকি আমি নিজেও এ কবিতাটি দু-একটি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছি। কিন্তু রুদ্র যখন পড়ত, তখন যেন কবিতাটি অন্য মাত্রা পেত। ওর আবৃত্তি আমাকে বেশি টানত।
ওর সঙ্গে পরিচয়ের পর্বটা নাটকীয়। যদিও আমরা একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত ছিলাম। কিন্তু আমাদের পরিচয় হয়েছে পরে। আমি কিছুটা অন্তর্মুখী স্বভাবের। সোজা বাংলায় যাকে বলে পলায়নমুখী। তবে আমি ওকে চিনতাম। বাবরি চুল উড়িয়ে সে দল বেঁধে ক্যাম্পাসে আড্ডা দিয়ে বেড়াত। আমারও ইচ্ছা করত ওদের আড্ডায় অংশ নিই। কিন্তু আমি আমার স্বভাবের ঊর্ধ্বে উঠতে পারতাম না। আড়ালে থাকতেই আমার বেশি ভালো লাগত। একদিন হাকিম চত্বরে আমাদের আরেক বন্ধু কবি তুষার দাস আমার সঙ্গে রুদ্রর পরিচয় করায়। রুদ্র বিস্ময়ে বলে, ‘আপনি ইসহাক খান! আমি তো মনে করেছিলাম আপনার অনেক বয়স।’
‘আপনার এ রকম মনে হওয়ার কারণ?’
‘আপনার লেখা পড়ে। যাক বাদ দেন। আপনি তো প্রচুর লেখেন।’
কথার ফাঁকে কখন আমরা আপনি থেকে তুই হয়ে গেছি, তা নিজেরাও জানি না। কী পেল সে আমার মধ্যে—আমি জানি না। আমি নিজেও ওর মধ্যে এমন কী পেয়ে গেলাম—যা আজও আমার কাছে ব্যাখ্যাতীত। ক্রমে আমাদের ‘তুই’-এর ঘনত্ব বাড়তে লাগল। আমার নাকি বন্ধুভাগ্য ভালো। আমি স্বীকার করি। রুদ্রর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব কিংবা রুদ্র আমাকে বন্ধু বলে গ্রহণ করেছিল কিংবা একসময় আমার হলের ঠিকানা হয়ে উঠেছিল রুদ্রর স্থায়ী ঠিকানা। আমরা একসঙ্গে থাকি। একসঙ্গে চলি। একসঙ্গে খাই। একসঙ্গে ঘুমাই। মজার ব্যাপার হলো, রুদ্র আবাসিক ছাত্র ছিল না। বাসা ভাড়া করে থাকত। বাসাভাড়া ঠিকই দিত, থাকত আমার সঙ্গে হলে ডাবলিং করে। আমার হলের ঠিকানা হয়ে গেল ওর যোগাযোগের একমাত্র ঠিকানা। ওর চিঠি আসত আমার হলের ঠিকানায়। পত্রিকা আসত। চেক আসত। আর আসত ওর একসময়ের ভালোবাসার সঙ্গী তসলিমা নাসরিনের চিঠি। অসম্ভব সুন্দর তার হাতের লেখা। তসলিমা চিঠি লিখত নিয়মিত। প্রতি সপ্তাহে তার চিঠি আসত।
রুদ্র আমাকে অন্তর্মুখী স্বভাব থেকে টেনে বহির্মুখী করে। সাহিত্যের আড্ডায় ও-ই আমাকে ধরে ধরে নিয়ে যেত। ওর পরিচয়ের ব্যাপ্তি ছিল বিশাল। কোনো নতুন জায়গায় গিয়েও ঠিকই ওর চেনা মানুষের কমতি হয়নি। রুদ্র চেনার আগে তারাই চিৎকার করে জড়িয়ে ধরত রুদ্রকে।
১৯৯১ সালের ১৯ জুন। হাসপাতালে গিয়ে ওকে দেখে আমার মনটা ভালো হয়ে গেল। বেশ পরিপাটি লাগছিল ওকে। বেডে শুয়ে আছে। আমাকে দেখে উঠে বসল। ‘কেমন আছিস?’
বলল, ‘অনেকটা ভালো।’
আমি বললাম, ‘তোকে দেখেও তাই মনে হচ্ছে। দেখে ভালো লাগছে। নাকে-মুখে নল নেই।’ সেদিন আমরা অনেকক্ষণ কথা বললাম।
ফেরার সময় বললাম, ‘কাল আসতে পারব না। তারপর দিন আসব।’
পরদিন মানে ২১ জুন আসব। কিন্তু আমি তখনো জানি না ২১ জুন হবে আমার বন্ধুর
জীবনের শেষ দিন।
২০ জুন হাসপাতালে আসতে হলো বন্ধু মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে। রুদ্র আমাকে দেখে বলে, ‘তোর তো আজ আসার কথা না।’
বললাম, ‘মানস ধরে এনেছে। বলল, “রুদ্র অসুস্থ, আমি এখনো দেখতে যাইনি। এইটা কোনো কথা হলো?”’
রুদ্র বলল, ‘এসে ভালোই করেছিস। আজ আমাকে রিলিজ করে দিচ্ছে।’
সেদিন আমরা অনেক মজা করেছিলাম। হাসিঠাট্টা হয়েছিল বেশ। তারপর ট্রলি করে ওকে নিচে নামালাম। ওর হাতে অনেকগুলো রজনিগন্ধার ডাঁটি। গাড়িতে ওঠার পর রজনিগন্ধার একটি ডাঁটা আমার হাতে দিয়ে বলল, ‘শ্যামলীকে দিস। আর বলিস, এবার সত্যি-সত্যি বদলে যাব।’ শ্যামলীকে কথাটা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। পরদিনই তাকে ভয়াবহ দুঃসংবাদটি দিতে হলো। বললাম, ‘আমি একা হয়ে গেছি শ্যামলী। আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র আর নেই!’

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

আগামীকাল ১৬ অক্টোবর, আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মদিন। জন্মদিনে বন্ধু তোকে আকাশের ঠিকানায় শুভেচ্ছা পাঠালাম। তোর মৃত্যুর এত বছর পরও তোর চলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। আমি যখন তোকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম, তখন বিকেল। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দেয়ালজুড়ে পড়ন্ত বিকেলের রোদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

আগামীকাল ১৬ অক্টোবর, আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মদিন। জন্মদিনে বন্ধু তোকে আকাশের ঠিকানায় শুভেচ্ছা পাঠালাম। তোর মৃত্যুর এত বছর পরও তোর চলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। আমি যখন তোকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম, তখন বিকেল। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দেয়ালজুড়ে পড়ন্ত বিকেলের রোদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

আগামীকাল ১৬ অক্টোবর, আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মদিন। জন্মদিনে বন্ধু তোকে আকাশের ঠিকানায় শুভেচ্ছা পাঠালাম। তোর মৃত্যুর এত বছর পরও তোর চলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। আমি যখন তোকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম, তখন বিকেল। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দেয়ালজুড়ে পড়ন্ত বিকেলের রোদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

আগামীকাল ১৬ অক্টোবর, আমার প্রিয়তম বন্ধু রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মদিন। জন্মদিনে বন্ধু তোকে আকাশের ঠিকানায় শুভেচ্ছা পাঠালাম। তোর মৃত্যুর এত বছর পরও তোর চলে যাওয়ার মুহূর্তগুলো এখনো জীবন্ত হয়ে আছে। আমি যখন তোকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম, তখন বিকেল। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দেয়ালজুড়ে পড়ন্ত বিকেলের রোদ
১৫ অক্টোবর ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে