নওশাদ জামিল

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা একদম সত্য ঘটনা ওর জীবনের, শৈশব-কৈশোরের।
শৈশব-কৈশোরে কেমন ছিল ছোট্ট সাকিব? সে কি ছোটবেলায় খুব দস্যিপনা করত?
পাড়ার বন্ধু কিংবা স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করত? পুকুর-নদীতে দাপাদাপি করত? মোটেও না। সে ছিল খুব শান্ত স্বভাবের। একটু চাপা স্বভাবের। দুষ্টুমি করত না, ঝগড়া-মারামারিও করত না। পাশের বাড়ির গাছ থেকে পেয়ারাও চুরি করত না।
ছোট্ট সাকিব চুপচাপ থাকলেও খেলার মাঠে পাল্টে যেত। সবুজ ঘাসে পা দিয়েই হয়ে উঠত চঞ্চল, দুরন্ত। ছিপছিপে শরীরটা নিয়ে যেন হাওয়ার বেগে দৌড়াত, ঘাসফড়িংয়ের মতো মাঠের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে উড়ত। সে প্রায় সারাক্ষণ মেতে থাকত ক্রিকেট নিয়ে। ফুটবলারের ছেলে ক্রিকেটার হবে?
বাবা-ছেলের হাঙ্গামা বাধল।
ক্রিকেট মোটেও সহ্য করতে পারতেন না মাশরুর রেজা। ফুটবলার কেন সহ্য করবেন ক্রিকেট? এ ছাড়া এখন যেমন ক্রিকেটের ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সাকিবের ছোটবেলায় ক্রিকেট তেমন দর্শকপ্রিয় ছিল না। চারদিকে ছিল ফুটবলের জোয়ার, ফলে ফুটবলার বাবা মনেপ্রাণে চাইতেন—ছেলে মস্ত বড় ফুটবলার হবে। জাতীয় দলে খেলবে। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাতাবে ফুটবল মাঠ।
বাড়ির কাছাকাছিই ছিল মাগুরা স্টেডিয়াম। সেখানে প্রায় প্রতিদিন বাবা ফুটবল খেলতে যেতেন, প্র্যাকটিস করতে যেতেন। সঙ্গে নিয়ে যেতেন ছোট্ট ফয়সালকে। বাবার সঙ্গে ফয়সালও ফুটবল প্র্যাকটিস করত। কিন্তু ওর ভালো লাগত ক্রিকেট। শুধু ভালো লাগা বললে ভুল হবে, ক্রিকেটের প্রতি ভীষণ ভালোবাসা ফয়সালের।
ছোট্ট সাকিবের ক্রিকেটপ্রীতির একটা উদাহরণ দিই। স্কুলে যাওয়ার পথে কিংবা স্কুল থেকে ফেরার পথে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাঁটত সে। হাঁটতে হাঁটতে অদৃশ্য বোলিং করত। কখনো হঠাৎ পথের ধারে দাঁড়িয়ে যেত, তারপর অদৃশ্য ব্যাট দিয়ে বল পেটাত। মানে শ্যাডো বোলিং, ব্যাটিং করত। এটা দেখে স্কুলের বন্ধুরা অবাক হতো। অদ্ভুত স্টাইল দেখে বলত, ‘তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
আরে! কী সব শ্যাডো ক্রিকেট খেলছিস?’ বন্ধুরা খ্যাপাত, পাগল বলত। সাকিব বন্ধুদের খ্যাপানোয় রাগ করত না। নিজের মতো সময় পেলেই বোলিং করত, ব্যাটিং করত।
কখনো স্কুলের মাঠে, কখনো বাড়ির উঠানে কাঠের তক্তা ব্যাট বানিয়ে ব্যাটিং করত। টেনিস বলে সজোরে বল করত। ছোটবেলায় সাকিব স্পিনার ছিল না। মিডিয়াম পেস বল করত। এটা কি তোমরা জানো?
সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দেখে বাবা রেগেমেগে আগুন। একদিন তক্তা দিয়ে বানানো ব্যাট দা দিয়ে কেটে ফেললেন। ধমক দিয়ে বললেন, ‘হয় তুমি ফুটবলার হবে, নয় তুমি পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে?’
চাপা স্বভাবের সাকিবের মনজুড়ে ক্রিকেট। সে বাবার ভয়ে কিছু বলতে পারল না। অভিমান নিয়ে আরও চুপচাপ থাকত। এ সময় এগিয়ে এলেন মা শিরিন আক্তার। ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়ে বলতেন, ‘এখন তো ছোট, খেলুক না। বড় হলে আর খেলবে না। মন দিয়ে তখন পড়াশোনাই করবে।’
মূলত মায়ের প্রশ্রয় পেয়েই সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দ্বিগুণ হয়ে যায়।
তারপর বাড়তে থাকে সাকিবের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা।
২০০১ সালের কথা। সাকিব তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে। এ পাড়ায়-ও পাড়ায় খেলে বেশ সুনাম হলো তার। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘খ্যাপ’ খেলার ডাক আসত তার কাছে। ‘খ্যাপ’ খেলা সম্পর্কে জানো তো? সামান্য টাকার বিনিময়ে এক দলের খেলোয়াড় অন্য দলে খেলা। খ্যাপ খেলতে গিয়ে বের হয়ে এল সাকিবের আসল প্রতিভা। মাগুরার আলোকদিয়ায় খ্যাপ খেলতে গেল সাকিব। সেটাই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। অদ্ভুত ব্যাপার, প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই উইকেট পেল সে। সব মিলিয়ে ওই ম্যাচে দারুণ খেলল। তার খেলা দেখে ম্যাচের আম্পায়ার সাদ্দাম হোসেন অভিভূত হলেন। ম্যাচে আম্পায়ার হলেও সাদ্দাম স্থানীয় কোচ ও ক্রিকেটপাগল মানুষ। জীবনের প্রথম পর্বে সাদ্দামই রত্নের সন্ধান দিলেন, সেই রত্ন আর কেউ নয়, আজকের সাকিব আল হাসান।
তারপর ধীরে ধীরে মাগুরা থেকে সাকিব এল বিকেএসপিতে। সেখান থেকে বয়সভিত্তিক দল হয়ে একেবারে জাতীয় দল। তারপরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। সেই ছোট্ট সাকিব ক্রিকেটে অনন্য সব রেকর্ড করেছে, বাংলাদেশের অসংখ্য জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, ক্রিকেট বিশ্বে বৃদ্ধি করেছে সুনাম।
সাকিব আল হাসানের শৈশব-কৈশোর নিয়ে একটা বই আছে—‘হালুম’। বইটিতে সাকিব লিখেছেন, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার যেভাবে আমাদের দেশকে সম্মানের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করে, আমরা সবাই যেন সেই বাঘের মতো বাংলাদেশকে প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। আমি বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডার হতে পেরেছি, তোমরাও চাইলে নিজ ক্ষেত্রে বিশ্ব জয় করতে পারবে।’
তোমরা সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে তো? সমম্বরে বলো, হ্যাঁ, অবশ্যই পারব! হালুম!

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা একদম সত্য ঘটনা ওর জীবনের, শৈশব-কৈশোরের।
শৈশব-কৈশোরে কেমন ছিল ছোট্ট সাকিব? সে কি ছোটবেলায় খুব দস্যিপনা করত?
পাড়ার বন্ধু কিংবা স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করত? পুকুর-নদীতে দাপাদাপি করত? মোটেও না। সে ছিল খুব শান্ত স্বভাবের। একটু চাপা স্বভাবের। দুষ্টুমি করত না, ঝগড়া-মারামারিও করত না। পাশের বাড়ির গাছ থেকে পেয়ারাও চুরি করত না।
ছোট্ট সাকিব চুপচাপ থাকলেও খেলার মাঠে পাল্টে যেত। সবুজ ঘাসে পা দিয়েই হয়ে উঠত চঞ্চল, দুরন্ত। ছিপছিপে শরীরটা নিয়ে যেন হাওয়ার বেগে দৌড়াত, ঘাসফড়িংয়ের মতো মাঠের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে উড়ত। সে প্রায় সারাক্ষণ মেতে থাকত ক্রিকেট নিয়ে। ফুটবলারের ছেলে ক্রিকেটার হবে?
বাবা-ছেলের হাঙ্গামা বাধল।
ক্রিকেট মোটেও সহ্য করতে পারতেন না মাশরুর রেজা। ফুটবলার কেন সহ্য করবেন ক্রিকেট? এ ছাড়া এখন যেমন ক্রিকেটের ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সাকিবের ছোটবেলায় ক্রিকেট তেমন দর্শকপ্রিয় ছিল না। চারদিকে ছিল ফুটবলের জোয়ার, ফলে ফুটবলার বাবা মনেপ্রাণে চাইতেন—ছেলে মস্ত বড় ফুটবলার হবে। জাতীয় দলে খেলবে। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাতাবে ফুটবল মাঠ।
বাড়ির কাছাকাছিই ছিল মাগুরা স্টেডিয়াম। সেখানে প্রায় প্রতিদিন বাবা ফুটবল খেলতে যেতেন, প্র্যাকটিস করতে যেতেন। সঙ্গে নিয়ে যেতেন ছোট্ট ফয়সালকে। বাবার সঙ্গে ফয়সালও ফুটবল প্র্যাকটিস করত। কিন্তু ওর ভালো লাগত ক্রিকেট। শুধু ভালো লাগা বললে ভুল হবে, ক্রিকেটের প্রতি ভীষণ ভালোবাসা ফয়সালের।
ছোট্ট সাকিবের ক্রিকেটপ্রীতির একটা উদাহরণ দিই। স্কুলে যাওয়ার পথে কিংবা স্কুল থেকে ফেরার পথে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাঁটত সে। হাঁটতে হাঁটতে অদৃশ্য বোলিং করত। কখনো হঠাৎ পথের ধারে দাঁড়িয়ে যেত, তারপর অদৃশ্য ব্যাট দিয়ে বল পেটাত। মানে শ্যাডো বোলিং, ব্যাটিং করত। এটা দেখে স্কুলের বন্ধুরা অবাক হতো। অদ্ভুত স্টাইল দেখে বলত, ‘তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
আরে! কী সব শ্যাডো ক্রিকেট খেলছিস?’ বন্ধুরা খ্যাপাত, পাগল বলত। সাকিব বন্ধুদের খ্যাপানোয় রাগ করত না। নিজের মতো সময় পেলেই বোলিং করত, ব্যাটিং করত।
কখনো স্কুলের মাঠে, কখনো বাড়ির উঠানে কাঠের তক্তা ব্যাট বানিয়ে ব্যাটিং করত। টেনিস বলে সজোরে বল করত। ছোটবেলায় সাকিব স্পিনার ছিল না। মিডিয়াম পেস বল করত। এটা কি তোমরা জানো?
সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দেখে বাবা রেগেমেগে আগুন। একদিন তক্তা দিয়ে বানানো ব্যাট দা দিয়ে কেটে ফেললেন। ধমক দিয়ে বললেন, ‘হয় তুমি ফুটবলার হবে, নয় তুমি পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে?’
চাপা স্বভাবের সাকিবের মনজুড়ে ক্রিকেট। সে বাবার ভয়ে কিছু বলতে পারল না। অভিমান নিয়ে আরও চুপচাপ থাকত। এ সময় এগিয়ে এলেন মা শিরিন আক্তার। ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়ে বলতেন, ‘এখন তো ছোট, খেলুক না। বড় হলে আর খেলবে না। মন দিয়ে তখন পড়াশোনাই করবে।’
মূলত মায়ের প্রশ্রয় পেয়েই সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দ্বিগুণ হয়ে যায়।
তারপর বাড়তে থাকে সাকিবের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা।
২০০১ সালের কথা। সাকিব তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে। এ পাড়ায়-ও পাড়ায় খেলে বেশ সুনাম হলো তার। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘খ্যাপ’ খেলার ডাক আসত তার কাছে। ‘খ্যাপ’ খেলা সম্পর্কে জানো তো? সামান্য টাকার বিনিময়ে এক দলের খেলোয়াড় অন্য দলে খেলা। খ্যাপ খেলতে গিয়ে বের হয়ে এল সাকিবের আসল প্রতিভা। মাগুরার আলোকদিয়ায় খ্যাপ খেলতে গেল সাকিব। সেটাই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। অদ্ভুত ব্যাপার, প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই উইকেট পেল সে। সব মিলিয়ে ওই ম্যাচে দারুণ খেলল। তার খেলা দেখে ম্যাচের আম্পায়ার সাদ্দাম হোসেন অভিভূত হলেন। ম্যাচে আম্পায়ার হলেও সাদ্দাম স্থানীয় কোচ ও ক্রিকেটপাগল মানুষ। জীবনের প্রথম পর্বে সাদ্দামই রত্নের সন্ধান দিলেন, সেই রত্ন আর কেউ নয়, আজকের সাকিব আল হাসান।
তারপর ধীরে ধীরে মাগুরা থেকে সাকিব এল বিকেএসপিতে। সেখান থেকে বয়সভিত্তিক দল হয়ে একেবারে জাতীয় দল। তারপরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। সেই ছোট্ট সাকিব ক্রিকেটে অনন্য সব রেকর্ড করেছে, বাংলাদেশের অসংখ্য জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, ক্রিকেট বিশ্বে বৃদ্ধি করেছে সুনাম।
সাকিব আল হাসানের শৈশব-কৈশোর নিয়ে একটা বই আছে—‘হালুম’। বইটিতে সাকিব লিখেছেন, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার যেভাবে আমাদের দেশকে সম্মানের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করে, আমরা সবাই যেন সেই বাঘের মতো বাংলাদেশকে প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। আমি বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডার হতে পেরেছি, তোমরাও চাইলে নিজ ক্ষেত্রে বিশ্ব জয় করতে পারবে।’
তোমরা সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে তো? সমম্বরে বলো, হ্যাঁ, অবশ্যই পারব! হালুম!
নওশাদ জামিল

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা একদম সত্য ঘটনা ওর জীবনের, শৈশব-কৈশোরের।
শৈশব-কৈশোরে কেমন ছিল ছোট্ট সাকিব? সে কি ছোটবেলায় খুব দস্যিপনা করত?
পাড়ার বন্ধু কিংবা স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করত? পুকুর-নদীতে দাপাদাপি করত? মোটেও না। সে ছিল খুব শান্ত স্বভাবের। একটু চাপা স্বভাবের। দুষ্টুমি করত না, ঝগড়া-মারামারিও করত না। পাশের বাড়ির গাছ থেকে পেয়ারাও চুরি করত না।
ছোট্ট সাকিব চুপচাপ থাকলেও খেলার মাঠে পাল্টে যেত। সবুজ ঘাসে পা দিয়েই হয়ে উঠত চঞ্চল, দুরন্ত। ছিপছিপে শরীরটা নিয়ে যেন হাওয়ার বেগে দৌড়াত, ঘাসফড়িংয়ের মতো মাঠের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে উড়ত। সে প্রায় সারাক্ষণ মেতে থাকত ক্রিকেট নিয়ে। ফুটবলারের ছেলে ক্রিকেটার হবে?
বাবা-ছেলের হাঙ্গামা বাধল।
ক্রিকেট মোটেও সহ্য করতে পারতেন না মাশরুর রেজা। ফুটবলার কেন সহ্য করবেন ক্রিকেট? এ ছাড়া এখন যেমন ক্রিকেটের ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সাকিবের ছোটবেলায় ক্রিকেট তেমন দর্শকপ্রিয় ছিল না। চারদিকে ছিল ফুটবলের জোয়ার, ফলে ফুটবলার বাবা মনেপ্রাণে চাইতেন—ছেলে মস্ত বড় ফুটবলার হবে। জাতীয় দলে খেলবে। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাতাবে ফুটবল মাঠ।
বাড়ির কাছাকাছিই ছিল মাগুরা স্টেডিয়াম। সেখানে প্রায় প্রতিদিন বাবা ফুটবল খেলতে যেতেন, প্র্যাকটিস করতে যেতেন। সঙ্গে নিয়ে যেতেন ছোট্ট ফয়সালকে। বাবার সঙ্গে ফয়সালও ফুটবল প্র্যাকটিস করত। কিন্তু ওর ভালো লাগত ক্রিকেট। শুধু ভালো লাগা বললে ভুল হবে, ক্রিকেটের প্রতি ভীষণ ভালোবাসা ফয়সালের।
ছোট্ট সাকিবের ক্রিকেটপ্রীতির একটা উদাহরণ দিই। স্কুলে যাওয়ার পথে কিংবা স্কুল থেকে ফেরার পথে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাঁটত সে। হাঁটতে হাঁটতে অদৃশ্য বোলিং করত। কখনো হঠাৎ পথের ধারে দাঁড়িয়ে যেত, তারপর অদৃশ্য ব্যাট দিয়ে বল পেটাত। মানে শ্যাডো বোলিং, ব্যাটিং করত। এটা দেখে স্কুলের বন্ধুরা অবাক হতো। অদ্ভুত স্টাইল দেখে বলত, ‘তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
আরে! কী সব শ্যাডো ক্রিকেট খেলছিস?’ বন্ধুরা খ্যাপাত, পাগল বলত। সাকিব বন্ধুদের খ্যাপানোয় রাগ করত না। নিজের মতো সময় পেলেই বোলিং করত, ব্যাটিং করত।
কখনো স্কুলের মাঠে, কখনো বাড়ির উঠানে কাঠের তক্তা ব্যাট বানিয়ে ব্যাটিং করত। টেনিস বলে সজোরে বল করত। ছোটবেলায় সাকিব স্পিনার ছিল না। মিডিয়াম পেস বল করত। এটা কি তোমরা জানো?
সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দেখে বাবা রেগেমেগে আগুন। একদিন তক্তা দিয়ে বানানো ব্যাট দা দিয়ে কেটে ফেললেন। ধমক দিয়ে বললেন, ‘হয় তুমি ফুটবলার হবে, নয় তুমি পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে?’
চাপা স্বভাবের সাকিবের মনজুড়ে ক্রিকেট। সে বাবার ভয়ে কিছু বলতে পারল না। অভিমান নিয়ে আরও চুপচাপ থাকত। এ সময় এগিয়ে এলেন মা শিরিন আক্তার। ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়ে বলতেন, ‘এখন তো ছোট, খেলুক না। বড় হলে আর খেলবে না। মন দিয়ে তখন পড়াশোনাই করবে।’
মূলত মায়ের প্রশ্রয় পেয়েই সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দ্বিগুণ হয়ে যায়।
তারপর বাড়তে থাকে সাকিবের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা।
২০০১ সালের কথা। সাকিব তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে। এ পাড়ায়-ও পাড়ায় খেলে বেশ সুনাম হলো তার। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘খ্যাপ’ খেলার ডাক আসত তার কাছে। ‘খ্যাপ’ খেলা সম্পর্কে জানো তো? সামান্য টাকার বিনিময়ে এক দলের খেলোয়াড় অন্য দলে খেলা। খ্যাপ খেলতে গিয়ে বের হয়ে এল সাকিবের আসল প্রতিভা। মাগুরার আলোকদিয়ায় খ্যাপ খেলতে গেল সাকিব। সেটাই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। অদ্ভুত ব্যাপার, প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই উইকেট পেল সে। সব মিলিয়ে ওই ম্যাচে দারুণ খেলল। তার খেলা দেখে ম্যাচের আম্পায়ার সাদ্দাম হোসেন অভিভূত হলেন। ম্যাচে আম্পায়ার হলেও সাদ্দাম স্থানীয় কোচ ও ক্রিকেটপাগল মানুষ। জীবনের প্রথম পর্বে সাদ্দামই রত্নের সন্ধান দিলেন, সেই রত্ন আর কেউ নয়, আজকের সাকিব আল হাসান।
তারপর ধীরে ধীরে মাগুরা থেকে সাকিব এল বিকেএসপিতে। সেখান থেকে বয়সভিত্তিক দল হয়ে একেবারে জাতীয় দল। তারপরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। সেই ছোট্ট সাকিব ক্রিকেটে অনন্য সব রেকর্ড করেছে, বাংলাদেশের অসংখ্য জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, ক্রিকেট বিশ্বে বৃদ্ধি করেছে সুনাম।
সাকিব আল হাসানের শৈশব-কৈশোর নিয়ে একটা বই আছে—‘হালুম’। বইটিতে সাকিব লিখেছেন, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার যেভাবে আমাদের দেশকে সম্মানের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করে, আমরা সবাই যেন সেই বাঘের মতো বাংলাদেশকে প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। আমি বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডার হতে পেরেছি, তোমরাও চাইলে নিজ ক্ষেত্রে বিশ্ব জয় করতে পারবে।’
তোমরা সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে তো? সমম্বরে বলো, হ্যাঁ, অবশ্যই পারব! হালুম!

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা একদম সত্য ঘটনা ওর জীবনের, শৈশব-কৈশোরের।
শৈশব-কৈশোরে কেমন ছিল ছোট্ট সাকিব? সে কি ছোটবেলায় খুব দস্যিপনা করত?
পাড়ার বন্ধু কিংবা স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করত? পুকুর-নদীতে দাপাদাপি করত? মোটেও না। সে ছিল খুব শান্ত স্বভাবের। একটু চাপা স্বভাবের। দুষ্টুমি করত না, ঝগড়া-মারামারিও করত না। পাশের বাড়ির গাছ থেকে পেয়ারাও চুরি করত না।
ছোট্ট সাকিব চুপচাপ থাকলেও খেলার মাঠে পাল্টে যেত। সবুজ ঘাসে পা দিয়েই হয়ে উঠত চঞ্চল, দুরন্ত। ছিপছিপে শরীরটা নিয়ে যেন হাওয়ার বেগে দৌড়াত, ঘাসফড়িংয়ের মতো মাঠের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে উড়ত। সে প্রায় সারাক্ষণ মেতে থাকত ক্রিকেট নিয়ে। ফুটবলারের ছেলে ক্রিকেটার হবে?
বাবা-ছেলের হাঙ্গামা বাধল।
ক্রিকেট মোটেও সহ্য করতে পারতেন না মাশরুর রেজা। ফুটবলার কেন সহ্য করবেন ক্রিকেট? এ ছাড়া এখন যেমন ক্রিকেটের ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সাকিবের ছোটবেলায় ক্রিকেট তেমন দর্শকপ্রিয় ছিল না। চারদিকে ছিল ফুটবলের জোয়ার, ফলে ফুটবলার বাবা মনেপ্রাণে চাইতেন—ছেলে মস্ত বড় ফুটবলার হবে। জাতীয় দলে খেলবে। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাতাবে ফুটবল মাঠ।
বাড়ির কাছাকাছিই ছিল মাগুরা স্টেডিয়াম। সেখানে প্রায় প্রতিদিন বাবা ফুটবল খেলতে যেতেন, প্র্যাকটিস করতে যেতেন। সঙ্গে নিয়ে যেতেন ছোট্ট ফয়সালকে। বাবার সঙ্গে ফয়সালও ফুটবল প্র্যাকটিস করত। কিন্তু ওর ভালো লাগত ক্রিকেট। শুধু ভালো লাগা বললে ভুল হবে, ক্রিকেটের প্রতি ভীষণ ভালোবাসা ফয়সালের।
ছোট্ট সাকিবের ক্রিকেটপ্রীতির একটা উদাহরণ দিই। স্কুলে যাওয়ার পথে কিংবা স্কুল থেকে ফেরার পথে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাঁটত সে। হাঁটতে হাঁটতে অদৃশ্য বোলিং করত। কখনো হঠাৎ পথের ধারে দাঁড়িয়ে যেত, তারপর অদৃশ্য ব্যাট দিয়ে বল পেটাত। মানে শ্যাডো বোলিং, ব্যাটিং করত। এটা দেখে স্কুলের বন্ধুরা অবাক হতো। অদ্ভুত স্টাইল দেখে বলত, ‘তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
আরে! কী সব শ্যাডো ক্রিকেট খেলছিস?’ বন্ধুরা খ্যাপাত, পাগল বলত। সাকিব বন্ধুদের খ্যাপানোয় রাগ করত না। নিজের মতো সময় পেলেই বোলিং করত, ব্যাটিং করত।
কখনো স্কুলের মাঠে, কখনো বাড়ির উঠানে কাঠের তক্তা ব্যাট বানিয়ে ব্যাটিং করত। টেনিস বলে সজোরে বল করত। ছোটবেলায় সাকিব স্পিনার ছিল না। মিডিয়াম পেস বল করত। এটা কি তোমরা জানো?
সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দেখে বাবা রেগেমেগে আগুন। একদিন তক্তা দিয়ে বানানো ব্যাট দা দিয়ে কেটে ফেললেন। ধমক দিয়ে বললেন, ‘হয় তুমি ফুটবলার হবে, নয় তুমি পড়াশোনা করে বড় চাকরি করবে?’
চাপা স্বভাবের সাকিবের মনজুড়ে ক্রিকেট। সে বাবার ভয়ে কিছু বলতে পারল না। অভিমান নিয়ে আরও চুপচাপ থাকত। এ সময় এগিয়ে এলেন মা শিরিন আক্তার। ছেলেকে প্রশ্রয় দিয়ে বলতেন, ‘এখন তো ছোট, খেলুক না। বড় হলে আর খেলবে না। মন দিয়ে তখন পড়াশোনাই করবে।’
মূলত মায়ের প্রশ্রয় পেয়েই সাকিবের ক্রিকেটপ্রেম দ্বিগুণ হয়ে যায়।
তারপর বাড়তে থাকে সাকিবের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা।
২০০১ সালের কথা। সাকিব তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে। এ পাড়ায়-ও পাড়ায় খেলে বেশ সুনাম হলো তার। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘খ্যাপ’ খেলার ডাক আসত তার কাছে। ‘খ্যাপ’ খেলা সম্পর্কে জানো তো? সামান্য টাকার বিনিময়ে এক দলের খেলোয়াড় অন্য দলে খেলা। খ্যাপ খেলতে গিয়ে বের হয়ে এল সাকিবের আসল প্রতিভা। মাগুরার আলোকদিয়ায় খ্যাপ খেলতে গেল সাকিব। সেটাই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। অদ্ভুত ব্যাপার, প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই উইকেট পেল সে। সব মিলিয়ে ওই ম্যাচে দারুণ খেলল। তার খেলা দেখে ম্যাচের আম্পায়ার সাদ্দাম হোসেন অভিভূত হলেন। ম্যাচে আম্পায়ার হলেও সাদ্দাম স্থানীয় কোচ ও ক্রিকেটপাগল মানুষ। জীবনের প্রথম পর্বে সাদ্দামই রত্নের সন্ধান দিলেন, সেই রত্ন আর কেউ নয়, আজকের সাকিব আল হাসান।
তারপর ধীরে ধীরে মাগুরা থেকে সাকিব এল বিকেএসপিতে। সেখান থেকে বয়সভিত্তিক দল হয়ে একেবারে জাতীয় দল। তারপরের ইতিহাস আমরা সবাই জানি। সেই ছোট্ট সাকিব ক্রিকেটে অনন্য সব রেকর্ড করেছে, বাংলাদেশের অসংখ্য জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, ক্রিকেট বিশ্বে বৃদ্ধি করেছে সুনাম।
সাকিব আল হাসানের শৈশব-কৈশোর নিয়ে একটা বই আছে—‘হালুম’। বইটিতে সাকিব লিখেছেন, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার যেভাবে আমাদের দেশকে সম্মানের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করে, আমরা সবাই যেন সেই বাঘের মতো বাংলাদেশকে প্রতিটা ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। আমি বিশ্বের ১ নম্বর অলরাউন্ডার হতে পেরেছি, তোমরাও চাইলে নিজ ক্ষেত্রে বিশ্ব জয় করতে পারবে।’
তোমরা সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে তো? সমম্বরে বলো, হ্যাঁ, অবশ্যই পারব! হালুম!

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা এ
০৫ নভেম্বর ২০২২
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা এ
০৫ নভেম্বর ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা এ
০৫ নভেম্বর ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিল ফয়সাল। এ নামেই এখনো তাকে ডাকেন মা-বাবা। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলার, রীতিমতো ফুটবলপাগল মানুষ। বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাজমুল হাসান। বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে বাবা ফয়সালের নাম রাখলেন। কী নাম জানো? সাকিব আল হাসান। হ্যাঁ, তোমাদের প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আজ তার গল্প বলব। গল্প না, এটা এ
০৫ নভেম্বর ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৬ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১১ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৭ দিন আগে