অনলাইন ডেস্ক
চলমান আগ্রাসনে ফিলিস্তিনিদের ‘পদ্ধতিগতভাবে’ মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী—আইডিএফ। ১৯ মাস ধরে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে এটি আইডিএফের খুবই সাধারণ কৌশল হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
গত শনিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী সাত ফিলিস্তিনির সাক্ষ্য প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুই ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তার বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে। তাঁরা এপিকে নিশ্চিত করেছেন—আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত এই কৌশল ব্যাপকভাবে চর্চা করছে আইডিএফ।
এ ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে আইডিএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে এপি। বলাবাহুল্য তারা অভিযোগ অস্বীকার করে এপিকে জানায়, অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তবে, তারা এ সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ পেয়েছে এবং সেগুলো তদন্তাধীন।
গত ১৯ মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। নিহতের মধ্যে সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার কর্মীও রয়েছেন। আবাসন, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আশ্রয়শিবিরসহ কোনো বেসামরিক স্থাপনা ইসরায়েলি হামলায় রক্ষা পায়নি। কিন্তু ইসরায়েল বারবার দাবি করছে, তাদের হামলার লক্ষ্য কেবল হামাস। বেসামরিক নাগরিক নিহতের দায় হামাসেরই। কারণ তারা গাজাবাসীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
মানব ঢাল কী এবং ইসরায়েল কীভাবে ব্যবহার করে?
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে হামলা থেকে রক্ষা করতে বেসামরিক কিংবা আন্তর্জাতিক আইনে অন্য সুরক্ষিত নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করাকেই মানব ঢাল বলে। যুদ্ধের কৌশল হিসেবে মানব ঢাল ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ। তবে, ইসরায়েল গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই নিষিদ্ধ এই যুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছর শুরুর দিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের এক প্রতিবেদনে আইডিএফের এক সেনার বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে—তার প্রত্যক্ষদর্শী ওই সেনা।
ওই সেনা হারেৎজকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা একদিনে অন্তত ছয়বার ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং এই চর্চা আইডিএফে খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। এর আগে গত বছরের আগস্টে একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ইসরায়েলি সেনারা তাদের ঘাঁটিতে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনিদের আটকে রাখত এবং ঢাল হিসেবে ব্যবহার করত। একেকজন ফিলিস্তিনি এক সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের জিম্মায় থাকত।
‘হিউম্যান শিল্ড: অ্যা হিস্ট্রি অব পিপল ইন দ্য লাইন অব ফায়ার’ বইয়ের একজন সহ-লেখক এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক নিকোলা পেরুগিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার এখন ইসরায়েলি সামরিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার কোনো নতুন বিষয় নয়। দ্বিতীয় ইন্তিফাদা অর্থাৎ ২০০০ সালের শুরু থেকেই এই চর্চা চলে আসছে। যুগের পর যুগ ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কেবল তদন্তের কথা বলে। কিন্তু তারা তদন্ত করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব যুদ্ধেই কমবেশি মানব ঢাল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কোনো পক্ষ ইসরায়েলের মতো তা প্রদর্শন করে বেড়ায় না। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যমে যেসব ভিডিও প্রকাশ করে তাতে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের স্পষ্ট প্রমাণ মেলে। কিন্তু তারা যে আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে, সেটি নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো অপরাধবোধ দেখা যায় না।’
অভিযোগের জবাবে কী বলছে ইসরায়েল?
গাজায় প্রায় ২০ মাস ধরে চলমান এই সংঘাতের পুরোটা সময় মানব ঢাল কিংবা অন্য যেকোনো যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত প্রশ্ন বা অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে ইসরায়েল। মন্তব্য করতে নানা টালবাহানা করে গেছে। খুব বেশি চাপে পড়লে তদন্ত করা হবে বা তদন্ত চলছে বলে এড়িয়েছে।
গত বছর কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সামাজিক মাধ্যমে আইডিএফের সেনাদের পোস্ট করা কয়েক হাজার ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পেয়েছে আল-জাজিরার অনুসন্ধান বিভাগ—আই ইউনিট। এসবের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টিও রয়েছে। এসব ইস্যুতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে আই ইউনিট। কিন্তু, তাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরায়েল।
আই ইউনিটের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে জামাল আবু আল-ওলার নামের এক ফিলিস্তিনি বন্দীর ঘটনা। ইসরায়েলি সেনারা জামালকে তাদের বার্তা বহনে বাধ্য করে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, জামালের পরনে বিশেষ এক ধরনের সাদা স্যুট, হাতে হাতকড়া এবং মাথায় হলুদ কাপড় বাঁধা। এ অবস্থায় খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে আশ্রিতদের সরে যেতে বলছিলেন জামাল। আর এরপর একজন স্নাইপার তাঁকে গুলি করে হত্যা করে।
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ রডনি ডিক্সন বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বার্তা ফিলিস্তিনিদের কাছে পৌঁছাতে জামালকে ব্যবহার করা তাঁকে সামরিক কাজে ব্যবহারের শামিল। এটি বেসামরিক মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের একটা উদাহরণ।
চলতি বছর আরও একটি ঘটনা ঘিরে নিন্দার ঝড় ওঠে। দ্য হটেস্ট প্লেস ইন হেল এবং আরও ৯৭২টি ম্যাগাজিনের যৌথ এক প্রতিবেদনে উঠে আসে ‘মশা পদ্ধতি’ নামে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক নৃশংস কৌশলের কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইসরায়েলি সেনার বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের গলায় বোমা বেঁধে দেন আইডিএফের এক সিনিয়র অফিসার। হুমকি দেন—কোনো ভুলভাল করলে মাথা উড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর তাঁকে স্ত্রীসহ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বলা হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় আইডিএফের অন্য একটি ব্যাটালিয়ন তাঁদের গুলি করে হত্যা করে। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযোগটি তদন্তের দাবি ওঠে। কিন্তু তদন্তের জন্য আরও তথ্য প্রয়োজন—এমন অজুহাতে দাবি খারিজ করে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী।
পরে, এ ঘটনার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সামনে এলে আর অভিযোগ অস্বীকারের সুযোগ ছিল না আইডিএফের। শুরু হয় ব্যাপক আন্দোলন।
গত বছর পশ্চিম তীরের জেনিনে এক অভিযানে আহত ফিলিস্তিনি যুবক মুজাহেদ আজমিকে সেনাবাহিনীর জিপের হুডে বেঁধে রাখার ভিডিও প্রকাশ পায়। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবেনেজ এই ঘটনাকে ‘মানব ঢাল কৌশল’ হিসেবে অভিহিত করেন। সমালোচনার মুখে ইসরায়েল জানায়, ভিডিওতে প্রদর্শিত সৈন্যদের আচরণ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত চলবে।
বেসামরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশদাতা কে?
পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকলেও, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মানব ঢাল ব্যবহারের এই ‘প্রাতিষ্ঠানিক’ ও ‘পদ্ধতিগত’ কৌশল বন্ধে কঠোর অভিযান শুরু করবে কিনা—সে প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। তবে জবাবদিহির জন্য চাপ বাড়ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক লোকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের এই পদ্ধতি বহু দশক ধরেই চলে আসছে। সাবেক ইসরায়েলি সেনাদের স্বীকারোক্তি সংগ্রহকারী হুইসেল ব্লোয়ার সংগঠন ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ বলছে, ২০০২ সালে পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে মোতায়েন করা এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিকে বলেছিলেন—‘নেইবার প্রোসিডিওর’ বা ‘পড়শি প্রক্রিয়া’।
ওই কর্মকর্তার ভাষ্য ছিল, ‘যদি কোনো ফিলিস্তিনির বাড়িতে অভিযান চালাতে চাও, তাহলে সঙ্গে করে অন্য এক ফিলিস্তিনিকে নিয়ে যাও। তাকে বলো ওই বাড়ির দরজায় কড়া নাড়তে। উদ্দেশ্য হলো নিজেকে নিরাপদ রাখা। যদি দরজার পেছনে বোমা থাকে, তাহলে ফিলিস্তিনিই উড়ে যাবে, তোমরা নয়।’ ওই কর্মকর্তা তখন সেনাবাহিনীতে ‘মেজর’ পদে ছিলেন।
২০০৫ সালে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে এই কৌশল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আদেশ দেয়। কিন্তু এরপরও গাজার তাল আল-হাওয়া এলাকায় সন্দেহজনক বিস্ফোরক খুঁজতে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুই ইসরায়েলি সেনা। ২০১০ সালে ওই দুই সেনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ধারণা করা হয়, সেটিই ছিল মানব ঢাল ব্যবহারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে প্রথম দণ্ডাদেশ।
কিন্তু এরপরও খুব একটা বদলায়নি চিত্র। বরং গাজায় গত ১৯ মাসের আগ্রাসনে এই কৌশল আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। এমনকি ধারণা করা হচ্ছে, এর নির্দেশ শীর্ষ পর্যায় থেকেই আসছে। হারেৎজ পত্রিকার গত বছরের আগস্ট সংখ্যার তদন্তে উঠে আসে, সাবেক চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভিও গাজায় ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের ব্যাপারে জানতেন।
চলতি সপ্তাহেই এপির এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, ২০০৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে গাজায় মোতায়েন করা ইসরায়েলের প্রায় সব ইনফ্যানট্রি ইউনিট বাড়ি তল্লাশির কাজে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করত। ওই কর্মকর্তা বলেন, রেডিওতে প্রায়ই বলা হতো—‘একটা মশা নিয়ে এসো’—এই ‘মশা’ শব্দটি মানব ঢালের সাংকেতিক নাম।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালে গাজায় মানব ঢাল ব্যবহার করতে আপত্তি জানিয়েছিল একটি ইউনিট। কিন্তু তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, বিকল্প নেই। ইউনিটের একজন সার্জেন্ট জানান, একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাঁদের বলেন—আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন নিয়ে এত ভাবার দরকার নেই!
এপি-র প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগের জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘জেরুজালেম পোস্ট’কে জানায়, যদি আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে অভিযোগগুলো তদন্ত করা হবে। বিভিন্ন ঘটনায় ফিলিস্তিনিদের সামরিক অভিযানে ব্যবহারের অভিযোগে ‘সামরিক পুলিশের অপরাধ তদন্ত শাখা’ তদন্ত শুরু করেছে। এসব তদন্ত এখনো চলমান, তাই এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু জানানো সম্ভব নয়।
গত মার্চে হারেৎজ আরও জানায়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ছয়টি ঘটনার তদন্ত করছে সামরিক পুলিশ। এসব ঘটনার প্রতিটিতেই মানব ঢাল ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক নিকোলা পারুজিনি বলেন, ‘যখন আপনি গণহত্যার মধ্যে আছেন, তখন মানব ঢাল আর কেবল একটি কৌশল থাকে না—এটি হয়ে ওঠে আরেক ধরনের অপরাধের হাতিয়ার।’
চলমান আগ্রাসনে ফিলিস্তিনিদের ‘পদ্ধতিগতভাবে’ মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী—আইডিএফ। ১৯ মাস ধরে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে এটি আইডিএফের খুবই সাধারণ কৌশল হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
গত শনিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী সাত ফিলিস্তিনির সাক্ষ্য প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুই ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তার বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে। তাঁরা এপিকে নিশ্চিত করেছেন—আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত এই কৌশল ব্যাপকভাবে চর্চা করছে আইডিএফ।
এ ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে আইডিএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে এপি। বলাবাহুল্য তারা অভিযোগ অস্বীকার করে এপিকে জানায়, অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তবে, তারা এ সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ পেয়েছে এবং সেগুলো তদন্তাধীন।
গত ১৯ মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। নিহতের মধ্যে সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার কর্মীও রয়েছেন। আবাসন, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আশ্রয়শিবিরসহ কোনো বেসামরিক স্থাপনা ইসরায়েলি হামলায় রক্ষা পায়নি। কিন্তু ইসরায়েল বারবার দাবি করছে, তাদের হামলার লক্ষ্য কেবল হামাস। বেসামরিক নাগরিক নিহতের দায় হামাসেরই। কারণ তারা গাজাবাসীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
মানব ঢাল কী এবং ইসরায়েল কীভাবে ব্যবহার করে?
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে হামলা থেকে রক্ষা করতে বেসামরিক কিংবা আন্তর্জাতিক আইনে অন্য সুরক্ষিত নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করাকেই মানব ঢাল বলে। যুদ্ধের কৌশল হিসেবে মানব ঢাল ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ। তবে, ইসরায়েল গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই নিষিদ্ধ এই যুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছর শুরুর দিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের এক প্রতিবেদনে আইডিএফের এক সেনার বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে—তার প্রত্যক্ষদর্শী ওই সেনা।
ওই সেনা হারেৎজকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা একদিনে অন্তত ছয়বার ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং এই চর্চা আইডিএফে খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। এর আগে গত বছরের আগস্টে একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ইসরায়েলি সেনারা তাদের ঘাঁটিতে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনিদের আটকে রাখত এবং ঢাল হিসেবে ব্যবহার করত। একেকজন ফিলিস্তিনি এক সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের জিম্মায় থাকত।
‘হিউম্যান শিল্ড: অ্যা হিস্ট্রি অব পিপল ইন দ্য লাইন অব ফায়ার’ বইয়ের একজন সহ-লেখক এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক নিকোলা পেরুগিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার এখন ইসরায়েলি সামরিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার কোনো নতুন বিষয় নয়। দ্বিতীয় ইন্তিফাদা অর্থাৎ ২০০০ সালের শুরু থেকেই এই চর্চা চলে আসছে। যুগের পর যুগ ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কেবল তদন্তের কথা বলে। কিন্তু তারা তদন্ত করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব যুদ্ধেই কমবেশি মানব ঢাল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কোনো পক্ষ ইসরায়েলের মতো তা প্রদর্শন করে বেড়ায় না। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যমে যেসব ভিডিও প্রকাশ করে তাতে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের স্পষ্ট প্রমাণ মেলে। কিন্তু তারা যে আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে, সেটি নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো অপরাধবোধ দেখা যায় না।’
অভিযোগের জবাবে কী বলছে ইসরায়েল?
গাজায় প্রায় ২০ মাস ধরে চলমান এই সংঘাতের পুরোটা সময় মানব ঢাল কিংবা অন্য যেকোনো যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত প্রশ্ন বা অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে ইসরায়েল। মন্তব্য করতে নানা টালবাহানা করে গেছে। খুব বেশি চাপে পড়লে তদন্ত করা হবে বা তদন্ত চলছে বলে এড়িয়েছে।
গত বছর কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সামাজিক মাধ্যমে আইডিএফের সেনাদের পোস্ট করা কয়েক হাজার ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পেয়েছে আল-জাজিরার অনুসন্ধান বিভাগ—আই ইউনিট। এসবের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টিও রয়েছে। এসব ইস্যুতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে আই ইউনিট। কিন্তু, তাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরায়েল।
আই ইউনিটের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে জামাল আবু আল-ওলার নামের এক ফিলিস্তিনি বন্দীর ঘটনা। ইসরায়েলি সেনারা জামালকে তাদের বার্তা বহনে বাধ্য করে। এক ভিডিওতে দেখা যায়, জামালের পরনে বিশেষ এক ধরনের সাদা স্যুট, হাতে হাতকড়া এবং মাথায় হলুদ কাপড় বাঁধা। এ অবস্থায় খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে আশ্রিতদের সরে যেতে বলছিলেন জামাল। আর এরপর একজন স্নাইপার তাঁকে গুলি করে হত্যা করে।
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ রডনি ডিক্সন বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বার্তা ফিলিস্তিনিদের কাছে পৌঁছাতে জামালকে ব্যবহার করা তাঁকে সামরিক কাজে ব্যবহারের শামিল। এটি বেসামরিক মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের একটা উদাহরণ।
চলতি বছর আরও একটি ঘটনা ঘিরে নিন্দার ঝড় ওঠে। দ্য হটেস্ট প্লেস ইন হেল এবং আরও ৯৭২টি ম্যাগাজিনের যৌথ এক প্রতিবেদনে উঠে আসে ‘মশা পদ্ধতি’ নামে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক নৃশংস কৌশলের কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইসরায়েলি সেনার বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের গলায় বোমা বেঁধে দেন আইডিএফের এক সিনিয়র অফিসার। হুমকি দেন—কোনো ভুলভাল করলে মাথা উড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর তাঁকে স্ত্রীসহ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বলা হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় আইডিএফের অন্য একটি ব্যাটালিয়ন তাঁদের গুলি করে হত্যা করে। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযোগটি তদন্তের দাবি ওঠে। কিন্তু তদন্তের জন্য আরও তথ্য প্রয়োজন—এমন অজুহাতে দাবি খারিজ করে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী।
পরে, এ ঘটনার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সামনে এলে আর অভিযোগ অস্বীকারের সুযোগ ছিল না আইডিএফের। শুরু হয় ব্যাপক আন্দোলন।
গত বছর পশ্চিম তীরের জেনিনে এক অভিযানে আহত ফিলিস্তিনি যুবক মুজাহেদ আজমিকে সেনাবাহিনীর জিপের হুডে বেঁধে রাখার ভিডিও প্রকাশ পায়। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবেনেজ এই ঘটনাকে ‘মানব ঢাল কৌশল’ হিসেবে অভিহিত করেন। সমালোচনার মুখে ইসরায়েল জানায়, ভিডিওতে প্রদর্শিত সৈন্যদের আচরণ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত চলবে।
বেসামরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশদাতা কে?
পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকলেও, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মানব ঢাল ব্যবহারের এই ‘প্রাতিষ্ঠানিক’ ও ‘পদ্ধতিগত’ কৌশল বন্ধে কঠোর অভিযান শুরু করবে কিনা—সে প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। তবে জবাবদিহির জন্য চাপ বাড়ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক লোকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের এই পদ্ধতি বহু দশক ধরেই চলে আসছে। সাবেক ইসরায়েলি সেনাদের স্বীকারোক্তি সংগ্রহকারী হুইসেল ব্লোয়ার সংগঠন ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ বলছে, ২০০২ সালে পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে মোতায়েন করা এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই পদ্ধতিকে বলেছিলেন—‘নেইবার প্রোসিডিওর’ বা ‘পড়শি প্রক্রিয়া’।
ওই কর্মকর্তার ভাষ্য ছিল, ‘যদি কোনো ফিলিস্তিনির বাড়িতে অভিযান চালাতে চাও, তাহলে সঙ্গে করে অন্য এক ফিলিস্তিনিকে নিয়ে যাও। তাকে বলো ওই বাড়ির দরজায় কড়া নাড়তে। উদ্দেশ্য হলো নিজেকে নিরাপদ রাখা। যদি দরজার পেছনে বোমা থাকে, তাহলে ফিলিস্তিনিই উড়ে যাবে, তোমরা নয়।’ ওই কর্মকর্তা তখন সেনাবাহিনীতে ‘মেজর’ পদে ছিলেন।
২০০৫ সালে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে এই কৌশল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আদেশ দেয়। কিন্তু এরপরও গাজার তাল আল-হাওয়া এলাকায় সন্দেহজনক বিস্ফোরক খুঁজতে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুই ইসরায়েলি সেনা। ২০১০ সালে ওই দুই সেনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ধারণা করা হয়, সেটিই ছিল মানব ঢাল ব্যবহারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে প্রথম দণ্ডাদেশ।
কিন্তু এরপরও খুব একটা বদলায়নি চিত্র। বরং গাজায় গত ১৯ মাসের আগ্রাসনে এই কৌশল আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। এমনকি ধারণা করা হচ্ছে, এর নির্দেশ শীর্ষ পর্যায় থেকেই আসছে। হারেৎজ পত্রিকার গত বছরের আগস্ট সংখ্যার তদন্তে উঠে আসে, সাবেক চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভিও গাজায় ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের ব্যাপারে জানতেন।
চলতি সপ্তাহেই এপির এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, ২০০৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে গাজায় মোতায়েন করা ইসরায়েলের প্রায় সব ইনফ্যানট্রি ইউনিট বাড়ি তল্লাশির কাজে ফিলিস্তিনিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করত। ওই কর্মকর্তা বলেন, রেডিওতে প্রায়ই বলা হতো—‘একটা মশা নিয়ে এসো’—এই ‘মশা’ শব্দটি মানব ঢালের সাংকেতিক নাম।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালে গাজায় মানব ঢাল ব্যবহার করতে আপত্তি জানিয়েছিল একটি ইউনিট। কিন্তু তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, বিকল্প নেই। ইউনিটের একজন সার্জেন্ট জানান, একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাঁদের বলেন—আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন নিয়ে এত ভাবার দরকার নেই!
এপি-র প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগের জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘জেরুজালেম পোস্ট’কে জানায়, যদি আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে অভিযোগগুলো তদন্ত করা হবে। বিভিন্ন ঘটনায় ফিলিস্তিনিদের সামরিক অভিযানে ব্যবহারের অভিযোগে ‘সামরিক পুলিশের অপরাধ তদন্ত শাখা’ তদন্ত শুরু করেছে। এসব তদন্ত এখনো চলমান, তাই এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু জানানো সম্ভব নয়।
গত মার্চে হারেৎজ আরও জানায়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ছয়টি ঘটনার তদন্ত করছে সামরিক পুলিশ। এসব ঘটনার প্রতিটিতেই মানব ঢাল ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক নিকোলা পারুজিনি বলেন, ‘যখন আপনি গণহত্যার মধ্যে আছেন, তখন মানব ঢাল আর কেবল একটি কৌশল থাকে না—এটি হয়ে ওঠে আরেক ধরনের অপরাধের হাতিয়ার।’
তুরস্কে ২০০৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ানের আগের শাসনামল এই জেন-জি দেখেনি। তবে সাম্প্রতিক আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে তারাই—বিশেষত ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা, যারা এখনকার প্রাপ্তবয়স্ক এবং মোট ভোটারদের এক চতুর্থাংশ। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, এদের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ এরদোয়ানের দল একে পার্টিকে ভোট...
৩ ঘণ্টা আগেভারতের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদার রাশিয়া। সম্প্রতি দেশটি পাকিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। এই চুক্তির আওতায় সোভিয়েত আমলে নির্মিত একটি বন্ধ ইস্পাত কারখানা পুনরুজ্জীবিত করা হবে। এই পদক্ষেপ নয়াদিল্লিতে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে...
৩ ঘণ্টা আগেপশ্চিমা দেশগুলোর কাছে জ্বালানি তেল রপ্তানির অর্থই ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখলেও এখনো দেশটির কাছ থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করেনি। তথ্য বলছে, পশ্চিমা...
৪ ঘণ্টা আগেতবে এসব পদক্ষেপের প্রতীকী গুরুত্ব অনেক। ব্রিটিশ আইনি সংস্থা পিটার্স অ্যান্ড পিটার্সের সিনিয়র পার্টনার মাইকেল ও’কেইন বলেন, ‘এটিকে আমরা বলি সিগন্যালিং। সরকার জানিয়ে দেয়, আপনার আচরণ অগ্রহণযোগ্য।’ বিশেষ করে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ও অর্থমন্ত্রী স্মতরিচের ওপর কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্
১ দিন আগে