Ajker Patrika

ইরান সংকটে পর্দায় ট্রাম্পের ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ চেহারা

বিবিসি
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ২২: ২৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত যখন বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। আর এই অনিশ্চয়তা নতুন কিছু নয়—বরং নিজের রাজনৈতিক দর্শনের অংশ হিসেবেই ‘অপ্রত্যাশিত’ বা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ থেকে যেতে পছন্দ করেন তিনি।

২০১৬ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমাদের জাতি হিসেবে আরও বেশি অপ্রত্যাশিত হওয়া প্রয়োজন। আমরা খুবই পূর্বানুমানযোগ্য—আমরা সবকিছু বলে দিই।’ সেই বক্তব্যে তিনি ওবামা প্রশাসনের কৌশলগত স্বচ্ছতার সমালোচনা করেছিলেন।

সেই দর্শনই তিনি ধরে রেখেছেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদে এবং দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেও। এখন যখন ইরানকে কেন্দ্র করে যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখনো ট্রাম্পের অভিমুখ স্পষ্ট নয়।

যুদ্ধ না শান্তি—টানাপোড়েন ট্রাম্পের ভেতরেও

মাঠে-ময়দানে ও দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুর দিকে ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি ব্যয়বহুল বিদেশি সংঘাতে জড়াতে চান না। নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে চিহ্নিত করতে চান তিনি।

কিন্তু একই সঙ্গে ট্রাম্প দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ইরান যেন কোনো অবস্থাতেই পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে। এটি এমন একটি অবস্থান, যা ভবিষ্যতে তাঁকে সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারে—যদি তিনি মনে করেন ইসরায়েল একা তা ঠেকাতে পারবে না।

রিপাবলিকানদের ভেতরে দ্বিধা

ট্রাম্পের এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব রিপাবলিকান পার্টির ভেতরেও প্রতিফলিত হচ্ছে। একদিকে তাঁর ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (মাগা) সমর্থকদের বড় একটি অংশ বিদেশি যুদ্ধে যুক্ত হওয়ার বিপক্ষে। অন্যদিকে রিপাবলিকান পার্টির একাংশ—যাঁদের ‘ইরান-হক’ বলা হয়—তাঁরা ইরানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান চাইছে।

এই দ্বৈত চাপের মুখে ট্রাম্প হয়তো শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তই স্পষ্ট করে জানাবেন না—যতক্ষণ পর্যন্ত না মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হানে কিংবা পরিস্থিতি আপাতভাবে শেষ হয়।

‘করতেও পারি, নাও পারি’

ইরানে হস্তক্ষেপের বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি এটা করতেও পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে চাই।’

এই বক্তব্য একদিকে যেমন তাঁর পুরোনো রাজনৈতিক কৌশলের ধারাবাহিকতা, অন্যদিকে বিশ্বমঞ্চে মার্কিন ভূমিকাকে ঘিরে বাড়িয়ে তুলছে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ।

বর্তমান উত্তেজনা যতই বাড়ছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে—এই সংকটের সমাধানে ট্রাম্পের ভূমিকা হবে কেন্দ্রীয়। তবে তিনি কী করবেন—তা এখনো রহস্যই রয়ে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত