Ajker Patrika

দ্য ইকোনমিস্টের নিবন্ধ /এরদোয়ানের গদি টলিয়ে দিতে পারে তুরস্কের জেন-জি

অনলাইন ডেস্ক
তুরস্কে বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান প্রয়োগ করছে পুলিশ। ছবি: এএফপি
তুরস্কে বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান প্রয়োগ করছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

তিন মাস ধরে উত্তপ্ত ইউরো-এশীয় দেশ তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল দেশটি। এই বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই ‘জেন-জি’। ব্যাপক ধরপাকড়, গ্রেপ্তারের পরও দমানো যায়নি তাদের। এখনো দেশজুড়ে বিভিন্ন শহরের রাজপথ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এরদোয়ান-বিরোধী বিক্ষোভ-সমাবেশ অব্যাহত। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—তুরস্কে একটি নতুন রাজনৈতিক যুগের সূচনা কি তবে জেন-জি তথা তরুণদের হাত ধরেই শুরু হতে যাচ্ছে?

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কে ২০০৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ানের আগের শাসনামল এই জেন-জি দেখেনি। তবে সাম্প্রতিক আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে তারাই—বিশেষত ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা, যারা এখনকার প্রাপ্তবয়স্ক এবং মোট ভোটারদের এক চতুর্থাংশ। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, এদের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ এরদোয়ানের দল একে পার্টিকে ভোট দিতে আগ্রহী।

তুরস্কের জেন-জি এতটাই তরুণ যে তুরস্কের শাসনদণ্ডে এরদোয়ান ছাড়া আর কাউকে তারা দেখেনি। এরপরও গত ১৯ মার্চ যখন বিরোধী দলীয় ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করতে যায় ইস্তাম্বুল পুলিশ, তখন রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শুধু ইমামোগলুর গ্রেপ্তারই নয়, এরদোয়ানের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের পেছনে আরও অনেক কারণের কথা বলছে তারা। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়াবাড়ি রকমের। যে কারণে ভালো শিক্ষা, চাকরি এমনকি ভোটাধিকারের মতো মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে জেন-জিরা।

চলমান এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত আটক হয়েছেন দুই সহস্রাধিক আন্দোলনকারী। এই আন্দোলন দেশটিতে গত এক দশকে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রাজপথে তরুণদের এই সরব উপস্থিতি এবং সামাজিক মাধ্যমে তাদের তৎপরতা বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-কেও সাহস জোগাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভের কারণেই সরকার শেষ পর্যন্ত ইমামোগলুর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ আইনে মামলা করা থেকে সরে এসেছে এবং ইস্তাম্বুলে সরকারপন্থী কাউকে বসানোর পরিকল্পনাও বাতিল করা হয়।

তবে এই প্রতিবাদ সরকারকে দমননীতির পথ থেকে সরাতে পারেনি। সর্বশেষ ২৬ মে দুর্নীতির অভিযোগে সিএইচপির কিছু কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীসহ ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গত ১৩ মে একজন বিতর্কিত ইসলামপন্থী বক্তার সফরের প্রতিবাদ করায় ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে, মে দিবসের প্রতিবাদ কর্মসূচিতেও ৪০০ জনকে আটক করা হয়। এ ছাড়া, সামাজিক মাধ্যম এক্সে ইমামোগলুর প্রায় ১ কোটি অনুসারীর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে এরদোয়ান প্রশাসন।

এরদোয়ান দীর্ঘদিন ধরে একটি ধর্মানুরাগী প্রজন্ম গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন। তবে জেন-জি প্রজন্ম তাঁর সেই প্রত্যাশাকে এক প্রকার ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। এই প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে যতটা সচেতন ও সক্রিয়, ধর্মীয় দিক থেকে ততটাই উদাসীন। বিশ্লেষকদের মতে, বিদ্রোহী এই তরুণ প্রজন্ম এখন এরদোয়ানের দীর্ঘ শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনা যাঁকে ঢাকায় ‘হত্যা করলেন’, তিনি ময়মনসিংহে জীবিত!

চরফ্যাশন থেকে গেটিসবার্গ কলেজ

জীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলায় সাক্ষীও দুই ভাই, নেপথ্যে যা জানা গেল

নগদে স্ত্রীর চাকরি, স্বার্থের সংঘাতে জড়ালেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক মুর্শেদ

যুক্তরাষ্ট্রে সি চিন পিংয়ের মেয়েকে বহিষ্কারের দাবি, হঠাৎ কেন এই বিতর্ক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত