অনলাইন ডেস্ক
তিনি একটিও ভোট পাননি। সরাসরি জনগণের কাছ থেকে অনুমোদনও পাননি। তিনি সরকারের বেতনভুক্ত কেউ না। কিন্তু মার্কিন প্রশাসনে এখন সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিশ্বের শীর্ষ এই ধনী ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামোর বিরুদ্ধে একপ্রকার ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে তিনি প্রশাসনের আকার ও কার্যপরিধি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, একই সঙ্গে সরকারের সবচেয়ে সংবেদনশীল কিছু গোপন তথ্যের নিয়ন্ত্রণও পেয়েছেন।
নিজের মালিকানাধীন শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে জনমত গঠনে প্রভাব ফেলেছেন। যারা তাঁর বিরোধিতা করবে, তাদের নির্বাচনে জেতা কঠিন করে তুলতে নিজের বিপুল সম্পদ কাজে লাগানোর হুমকি দিয়েছেন। এই ব্যক্তিটি আর কেউই নন—বিখ্যাত ইলন মাস্ক।
মাস্কের প্রভাব–প্রতিপত্তি যেন কোনো ধরনের জবাবদিহির বাইরে। তাঁর প্রতাপ ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী মহলে স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব বিষয়ে তাঁর প্রভাব বিস্তৃত এবং অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত। তবে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস এখন পর্যন্ত মাস্ককে নিয়ন্ত্রণে আনার কোনো আগ্রহ দেখায়নি। তাঁর মতো কোনো বেসরকারি ব্যক্তিকে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরে এর আগে কখনোই এত প্রভাবশালী অবস্থানে দেখা যায়নি।
দিন কয়েক আগে ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনে আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় বাহন এয়ারফোর্স ওয়ান থেকে নেমে ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি ইলন ভালো কাজ করছেন। তিনি ব্যাপকভাবে খরচ কমানোর পক্ষপাতী। কখনো কখনো আমরা তাঁর সঙ্গে একমত হব না এবং আমরা তাঁর নির্দেশিত পথে যাব না। কিন্তু আমি মনে করি, তিনি দারুণ কাজ করছেন। তিনি বুদ্ধিমান। খুব বুদ্ধিমান। আর তিনি আমাদের ফেডারেল বাজেট কমানোর ব্যাপারে বেশ আগ্রহী।’
গত কয়েক দিনে মার্কিন সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মাস্কের খবরদারি ব্যাপক হয়েছে। কারণ, তিনি ট্রাম্প প্রতিষ্ঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান হিসেবে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর ঘোষিত লক্ষ্য, মার্কিন সরকারের বার্ষিক ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন ডলার কমানো। ডিওজিইর ক্ষমতা সীমিত। এটি কোনো প্রকৃত সরকারি সংস্থা নয়। মাস্কের এই টাস্কফোর্স মূলত প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গঠিত। আর বাজেট নির্ধারণের ক্ষমতা এখনো কংগ্রেসের হাতেই।
ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের ভূমিকা এখনো অস্পষ্ট। অবশ্য মাস্ক তাঁর এক্স বায়োতে নিজেকে হোয়াইট হাউসের প্রযুক্তি বিষয়ক ‘সহায়তাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মাস্ক ট্রাম্পের জন্য একজন বিশেষ সরকারি কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এই বিষয়টি প্রশাসনে তাঁর আনুষ্ঠানিক অবস্থান নিশ্চিত করলেও তাঁকে ফেডারেল নীতিমালা এড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে।’ ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মাস্ক কোনো বেতন পাচ্ছেন না।’
মাস্কের আইনি ক্ষমতা না থাকলেও তিনি ক্ষমতার খুব কাছাকাছি। কখনো কখনো হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে থেকেই কাজ করছেন। প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে প্রভাবশালী উপদেষ্টার ভূমিকা স্পষ্টত ভালোই উপভোগ করছেন মাস্ক। ট্রাম্প যদি মনে করেন, তাঁর কোনো সহযোগী তাঁকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে তবে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেন। তবে ট্রাম্পের ভাষায়, তিনি এখনো মাস্কের প্রতি ‘মুগ্ধ’ এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তাঁর হয়ে কাজ করছেন—এই বিষয়টি তিনি উপভোগ করেন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প মনে করেন, মাস্ক বিতর্কিত পদক্ষেপের জন্য জনগণের প্রতিক্রিয়া নিজ কাঁধে নিতে প্রস্তুত। এই বিষয়টি প্রেসিডেন্টকে জনগণের তোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
গত সপ্তাহে মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির দিকে নজর দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা একাধিক পোস্টে তিনি প্রমাণ ছাড়াই ঘোষণা করেছেন, এটি একটি ‘অশুভ ও সন্ত্রাসী সংস্থা’ এবং এটির ‘মরে যাওয়াই ভালো।’
ট্রাম্প প্রশাসন আর্থিকভাবে লাভজনক ‘আমেরিকা সবার আগে’ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে। আর এই নীতির আলোকেই ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাটিকে বন্ধ করে কর্মী প্রত্যাহার করে ব্যাপক বিভ্রান্তির মুখে ফেলে দেয় বিশ্ববাসীকে। সম্প্রতি মাস্ক সেই সংস্থাকে বিলুপ্ত করার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ‘হন্তারক’ হয়ে উঠেছেন। এক্সে এক লাইভ চ্যাটে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে আমি ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছি এবং তিনি (ট্রাম্প) একমত হয়েছেন যে, আমাদের এটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত এবং তাই আমরা এটি বন্ধ করছি।’
এর কয়েক ঘণ্টা পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা করেন, তিনি সংস্থাটির কার্যনির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, হোয়াইট হাউস এটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। সংস্থাটির সমর্থকেরা দীর্ঘদিন ধরে এটিকে আমেরিকার ‘সফট পাওয়ার’ বিস্তারের কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে দেখেন। তাদের মতে, এটি চীন-রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি ডিটারেন্ট (প্রতিরোধক) হিসেবে কাজ করে। ইউএসএআইডির সম্ভাব্য বিলুপ্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি এক্সে লিখেছেন, ইউএসএআইডির গুপ্তচর ব্যবস্থা ‘বন্ধ’ করতে মাস্ক ‘স্মার্ট পদক্ষেপ’ নিচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমেরিকার ডিপ স্টেট ইলন মাস্ককে পুরোপুরি গিলে ফেলতে পারবে না।
মাস্ক সম্ভবত ইউএসএআইডি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় সফল হবেন না। কারণ, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। কারণ, কংগ্রেস এটিকে একটি আলাদা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং সেটির নিয়ন্ত্রণ স্থানান্তর বা কার্যক্রম বন্ধ করতে হলে পরবর্তী করণীয়ও কংগ্রেসেই সারতে হবে। অবশ্য রিপাবলিকানরা খুব বেশি প্রতিক্রিয়া জানাননি। সম্ভবত তাঁরা মাস্ক এবং ট্রাম্পকে উসকে দিতে চান না।
এমনকি রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা মাস্কের টেসলা, এক্স এবং বোরিং কোম্পানি থেকে সাবেক কর্মীদের বিভিন্ন সরকারি সংস্থায়ও নিয়োগে আপত্তি জানাচ্ছেন না। যার মধ্যে অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট অন্যতম। এই বিভাগটি মূলত ফেডারেল সরকারের কর্মীদের দেখভাল করে। এ ছাড়া, জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিসেও মাস্ক তাঁর কোম্পানিগুলোর সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের নিয়োগ দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মার্কিন অর্থমন্ত্রী বা ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ডিওজিই–এর কর্মীদের মার্কিন ফেডারেল সরকারের অর্থ লেনদেন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ দেন। এর ফলে মাস্কের ফেডারেল সরকারের ব্যয় পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভাব্য সীমিতকরণের একটি শক্তিশালী টুল পেয়ে গেছেন। এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এক শীর্ষ ট্রেজারি কর্মকর্তা ডেভিড লেব্রিক পদত্যাগ করেন।
ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানোর বিষয়ে মাস্ক তাঁর সাম্প্রতিক এক এক্স পোস্টে বলেন, ‘করদাতাদের অর্থ নিয়ে দুর্নীতি এবং অপচয় রোধের একমাত্র উপায় হলো লেনদেনের গতিপথে নজর রাখা এবং সন্দেহজনক লেনদেনগুলো পর্যালোচনার জন্য স্থগিত করা। এটি স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের ক্ষুব্ধ করে তুলবে যারা দুর্নীতি এবং প্রতারণামূলক লেনদেনে সাহায্য–সহায়তা করেন এবং লাভবান হন। হতাশাজনক!’
ট্রেজারি বিভাগের এই অধিদপ্তরটি মূলত আমলা পরিচালিত। এটি নিজস্ব প্রক্রিয়ায়, ২০২৩ অর্থবছরে ৫ লাখ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ লেনদেন করেছে। পেমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশাধিকার অত্যন্ত সুরক্ষিত। কারণ, এতে এমন সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে যা থেকে লাখ লাখ মার্কিনকে সামাজিক নিরাপত্তা, কর রেয়াত এবং অন্যান্য অর্থ পরিশোধ করা হয়।
এ ছাড়া, নিকট অতীতে মাস্কের দুটি কোম্পানি—টেসলা এবং স্পেসএক্স—ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি পেয়েছে। কিছু ডেমোক্র্যাটের মতে, এখন মাস্কের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই বিষয়টি স্বার্থের সংঘাত তৈরি করতে পারে। মাস্কের বিদেশেও ব্যবসায়িক আগ্রহ রয়েছে, বিশেষ করে চীনে।
মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটদের একটি গ্রুপ ঘোষণা করেছে, তাঁরা পেমেন্ট সিস্টেমে মাস্কের প্রবেশাধিকার নিয়ে আদালতে যাবেন। মেরিল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক রিপ্রেজেনটেটিভ জেমি রাসকিন বলেছেন, ‘ইলন মাস্ক, তুমি হয়তো ট্রেজারির আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা অবৈধভাবে দখল করেছ, কিন্তু তুমি আমেরিকান জনগণের টাকা নিয়ন্ত্রণ করো না।’ আদালতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তোমার কোনো চতুর্থ শাখা (আদালত) নেই যার নাম “ইলন মাস্ক”।’
কিছুদিন আগে ওয়াশিংটন ডিসির অন্তর্বর্তী অ্যাটর্নি এড মার্টিন মাস্ককে চিঠি দিয়ে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তাঁর কার্যালয় ডিওজিইর কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে এমন যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেবে।
সপ্তাহ খানেক আগে মার্কিন সরকারের অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট থেকে কর্মীদের কাছে পাঠানো ‘ফর্ক ইন দ্য রোড’—শীর্ষক এক চিঠিতে মাস্ক দাবি করেন, সব ফেডারেল কর্মচারীকে তাঁদের কর্মস্থল পরিবর্তন মেনে নিতে হবে নইলে পদত্যাগ করতে হবে। ২০২২ সালে টুইটার কেনার পর মাস্ক তাঁর কর্মীদের একই ধরনের চিঠি দিয়েছিলেন।
টুইটার অধিগ্রহণের পর একে ‘এক্স’ হিসেবে নামকরণ করে মাস্ক কোম্পানিটির বাজারমূল্য ধসিয়ে দেন এবং ব্যবহারকারীদের ব্যাপকভাবে বের হয়ে যাওয়ার পথে ঠেলে দেন। তবে এর ফলে তিনি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হাতে পেয়েছেন। তিনি এখন ইউরোপীয় দেশগুলোর নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া, ব্যবসায়ও উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালে প্ল্যাটফর্মটি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় করেছে, যার বেশির ভাগই এসেছে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে। গত সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জেফ বেজোসের মালিকানাধীন আমাজন এক্সে বিজ্ঞাপন ব্যয় বাড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে বড় খবর ছিল পটোম্যাক নদীর ওপর এক সামরিক হেলিকপ্টারের সঙ্গে বেসামরিক যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষে ৬৭ জনের প্রাণহানি। এই ঘটনার কারণে আড়ালে চলে রাজধানীতে মাস্কের প্রভাব বিস্তারের তৎপরতা। মার্কিন ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) এই দুর্ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু সরকারি সংস্থাটি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, সংবাদ সম্মেলন বা তদন্ত–সংক্রান্ত অন্য যেকোনো আপডেট তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হবে। ই–মেইলের মাধ্যমে আর কোনো তথ্য বিতরণ করবে না তারা। কিন্তু দুর্ঘটনা ও ভুক্তভোগীদের খবরের মধ্যে এই খবরটিতে মানুষ সেভাবে নজর দেয়নি। এই বিষয়টি মূলত প্রমাণ করে, মাস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে কতটা প্রভাবশালী হয়ে উঠছেন!
দ্য আটলান্টিক থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
তিনি একটিও ভোট পাননি। সরাসরি জনগণের কাছ থেকে অনুমোদনও পাননি। তিনি সরকারের বেতনভুক্ত কেউ না। কিন্তু মার্কিন প্রশাসনে এখন সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিশ্বের শীর্ষ এই ধনী ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামোর বিরুদ্ধে একপ্রকার ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে তিনি প্রশাসনের আকার ও কার্যপরিধি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, একই সঙ্গে সরকারের সবচেয়ে সংবেদনশীল কিছু গোপন তথ্যের নিয়ন্ত্রণও পেয়েছেন।
নিজের মালিকানাধীন শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে জনমত গঠনে প্রভাব ফেলেছেন। যারা তাঁর বিরোধিতা করবে, তাদের নির্বাচনে জেতা কঠিন করে তুলতে নিজের বিপুল সম্পদ কাজে লাগানোর হুমকি দিয়েছেন। এই ব্যক্তিটি আর কেউই নন—বিখ্যাত ইলন মাস্ক।
মাস্কের প্রভাব–প্রতিপত্তি যেন কোনো ধরনের জবাবদিহির বাইরে। তাঁর প্রতাপ ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী মহলে স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব বিষয়ে তাঁর প্রভাব বিস্তৃত এবং অস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত। তবে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস এখন পর্যন্ত মাস্ককে নিয়ন্ত্রণে আনার কোনো আগ্রহ দেখায়নি। তাঁর মতো কোনো বেসরকারি ব্যক্তিকে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরে এর আগে কখনোই এত প্রভাবশালী অবস্থানে দেখা যায়নি।
দিন কয়েক আগে ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনে আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় বাহন এয়ারফোর্স ওয়ান থেকে নেমে ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি ইলন ভালো কাজ করছেন। তিনি ব্যাপকভাবে খরচ কমানোর পক্ষপাতী। কখনো কখনো আমরা তাঁর সঙ্গে একমত হব না এবং আমরা তাঁর নির্দেশিত পথে যাব না। কিন্তু আমি মনে করি, তিনি দারুণ কাজ করছেন। তিনি বুদ্ধিমান। খুব বুদ্ধিমান। আর তিনি আমাদের ফেডারেল বাজেট কমানোর ব্যাপারে বেশ আগ্রহী।’
গত কয়েক দিনে মার্কিন সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর মাস্কের খবরদারি ব্যাপক হয়েছে। কারণ, তিনি ট্রাম্প প্রতিষ্ঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান হিসেবে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁর ঘোষিত লক্ষ্য, মার্কিন সরকারের বার্ষিক ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন ডলার কমানো। ডিওজিইর ক্ষমতা সীমিত। এটি কোনো প্রকৃত সরকারি সংস্থা নয়। মাস্কের এই টাস্কফোর্স মূলত প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গঠিত। আর বাজেট নির্ধারণের ক্ষমতা এখনো কংগ্রেসের হাতেই।
ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের ভূমিকা এখনো অস্পষ্ট। অবশ্য মাস্ক তাঁর এক্স বায়োতে নিজেকে হোয়াইট হাউসের প্রযুক্তি বিষয়ক ‘সহায়তাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মাস্ক ট্রাম্পের জন্য একজন বিশেষ সরকারি কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এই বিষয়টি প্রশাসনে তাঁর আনুষ্ঠানিক অবস্থান নিশ্চিত করলেও তাঁকে ফেডারেল নীতিমালা এড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে।’ ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মাস্ক কোনো বেতন পাচ্ছেন না।’
মাস্কের আইনি ক্ষমতা না থাকলেও তিনি ক্ষমতার খুব কাছাকাছি। কখনো কখনো হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে থেকেই কাজ করছেন। প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে প্রভাবশালী উপদেষ্টার ভূমিকা স্পষ্টত ভালোই উপভোগ করছেন মাস্ক। ট্রাম্প যদি মনে করেন, তাঁর কোনো সহযোগী তাঁকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে তবে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেন। তবে ট্রাম্পের ভাষায়, তিনি এখনো মাস্কের প্রতি ‘মুগ্ধ’ এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তাঁর হয়ে কাজ করছেন—এই বিষয়টি তিনি উপভোগ করেন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প মনে করেন, মাস্ক বিতর্কিত পদক্ষেপের জন্য জনগণের প্রতিক্রিয়া নিজ কাঁধে নিতে প্রস্তুত। এই বিষয়টি প্রেসিডেন্টকে জনগণের তোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
গত সপ্তাহে মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির দিকে নজর দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা একাধিক পোস্টে তিনি প্রমাণ ছাড়াই ঘোষণা করেছেন, এটি একটি ‘অশুভ ও সন্ত্রাসী সংস্থা’ এবং এটির ‘মরে যাওয়াই ভালো।’
ট্রাম্প প্রশাসন আর্থিকভাবে লাভজনক ‘আমেরিকা সবার আগে’ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে। আর এই নীতির আলোকেই ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাটিকে বন্ধ করে কর্মী প্রত্যাহার করে ব্যাপক বিভ্রান্তির মুখে ফেলে দেয় বিশ্ববাসীকে। সম্প্রতি মাস্ক সেই সংস্থাকে বিলুপ্ত করার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ‘হন্তারক’ হয়ে উঠেছেন। এক্সে এক লাইভ চ্যাটে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে আমি ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছি এবং তিনি (ট্রাম্প) একমত হয়েছেন যে, আমাদের এটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত এবং তাই আমরা এটি বন্ধ করছি।’
এর কয়েক ঘণ্টা পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা করেন, তিনি সংস্থাটির কার্যনির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, হোয়াইট হাউস এটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। সংস্থাটির সমর্থকেরা দীর্ঘদিন ধরে এটিকে আমেরিকার ‘সফট পাওয়ার’ বিস্তারের কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে দেখেন। তাদের মতে, এটি চীন-রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি ডিটারেন্ট (প্রতিরোধক) হিসেবে কাজ করে। ইউএসএআইডির সম্ভাব্য বিলুপ্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি এক্সে লিখেছেন, ইউএসএআইডির গুপ্তচর ব্যবস্থা ‘বন্ধ’ করতে মাস্ক ‘স্মার্ট পদক্ষেপ’ নিচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমেরিকার ডিপ স্টেট ইলন মাস্ককে পুরোপুরি গিলে ফেলতে পারবে না।
মাস্ক সম্ভবত ইউএসএআইডি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় সফল হবেন না। কারণ, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। কারণ, কংগ্রেস এটিকে একটি আলাদা সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং সেটির নিয়ন্ত্রণ স্থানান্তর বা কার্যক্রম বন্ধ করতে হলে পরবর্তী করণীয়ও কংগ্রেসেই সারতে হবে। অবশ্য রিপাবলিকানরা খুব বেশি প্রতিক্রিয়া জানাননি। সম্ভবত তাঁরা মাস্ক এবং ট্রাম্পকে উসকে দিতে চান না।
এমনকি রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা মাস্কের টেসলা, এক্স এবং বোরিং কোম্পানি থেকে সাবেক কর্মীদের বিভিন্ন সরকারি সংস্থায়ও নিয়োগে আপত্তি জানাচ্ছেন না। যার মধ্যে অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট অন্যতম। এই বিভাগটি মূলত ফেডারেল সরকারের কর্মীদের দেখভাল করে। এ ছাড়া, জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিসেও মাস্ক তাঁর কোম্পানিগুলোর সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের নিয়োগ দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মার্কিন অর্থমন্ত্রী বা ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ডিওজিই–এর কর্মীদের মার্কিন ফেডারেল সরকারের অর্থ লেনদেন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ দেন। এর ফলে মাস্কের ফেডারেল সরকারের ব্যয় পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভাব্য সীমিতকরণের একটি শক্তিশালী টুল পেয়ে গেছেন। এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এক শীর্ষ ট্রেজারি কর্মকর্তা ডেভিড লেব্রিক পদত্যাগ করেন।
ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানোর বিষয়ে মাস্ক তাঁর সাম্প্রতিক এক এক্স পোস্টে বলেন, ‘করদাতাদের অর্থ নিয়ে দুর্নীতি এবং অপচয় রোধের একমাত্র উপায় হলো লেনদেনের গতিপথে নজর রাখা এবং সন্দেহজনক লেনদেনগুলো পর্যালোচনার জন্য স্থগিত করা। এটি স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের ক্ষুব্ধ করে তুলবে যারা দুর্নীতি এবং প্রতারণামূলক লেনদেনে সাহায্য–সহায়তা করেন এবং লাভবান হন। হতাশাজনক!’
ট্রেজারি বিভাগের এই অধিদপ্তরটি মূলত আমলা পরিচালিত। এটি নিজস্ব প্রক্রিয়ায়, ২০২৩ অর্থবছরে ৫ লাখ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ লেনদেন করেছে। পেমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশাধিকার অত্যন্ত সুরক্ষিত। কারণ, এতে এমন সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে যা থেকে লাখ লাখ মার্কিনকে সামাজিক নিরাপত্তা, কর রেয়াত এবং অন্যান্য অর্থ পরিশোধ করা হয়।
এ ছাড়া, নিকট অতীতে মাস্কের দুটি কোম্পানি—টেসলা এবং স্পেসএক্স—ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি পেয়েছে। কিছু ডেমোক্র্যাটের মতে, এখন মাস্কের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই বিষয়টি স্বার্থের সংঘাত তৈরি করতে পারে। মাস্কের বিদেশেও ব্যবসায়িক আগ্রহ রয়েছে, বিশেষ করে চীনে।
মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটদের একটি গ্রুপ ঘোষণা করেছে, তাঁরা পেমেন্ট সিস্টেমে মাস্কের প্রবেশাধিকার নিয়ে আদালতে যাবেন। মেরিল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক রিপ্রেজেনটেটিভ জেমি রাসকিন বলেছেন, ‘ইলন মাস্ক, তুমি হয়তো ট্রেজারির আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা অবৈধভাবে দখল করেছ, কিন্তু তুমি আমেরিকান জনগণের টাকা নিয়ন্ত্রণ করো না।’ আদালতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তোমার কোনো চতুর্থ শাখা (আদালত) নেই যার নাম “ইলন মাস্ক”।’
কিছুদিন আগে ওয়াশিংটন ডিসির অন্তর্বর্তী অ্যাটর্নি এড মার্টিন মাস্ককে চিঠি দিয়ে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তাঁর কার্যালয় ডিওজিইর কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে এমন যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেবে।
সপ্তাহ খানেক আগে মার্কিন সরকারের অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট থেকে কর্মীদের কাছে পাঠানো ‘ফর্ক ইন দ্য রোড’—শীর্ষক এক চিঠিতে মাস্ক দাবি করেন, সব ফেডারেল কর্মচারীকে তাঁদের কর্মস্থল পরিবর্তন মেনে নিতে হবে নইলে পদত্যাগ করতে হবে। ২০২২ সালে টুইটার কেনার পর মাস্ক তাঁর কর্মীদের একই ধরনের চিঠি দিয়েছিলেন।
টুইটার অধিগ্রহণের পর একে ‘এক্স’ হিসেবে নামকরণ করে মাস্ক কোম্পানিটির বাজারমূল্য ধসিয়ে দেন এবং ব্যবহারকারীদের ব্যাপকভাবে বের হয়ে যাওয়ার পথে ঠেলে দেন। তবে এর ফলে তিনি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হাতে পেয়েছেন। তিনি এখন ইউরোপীয় দেশগুলোর নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া, ব্যবসায়ও উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ২০২৪ সালে প্ল্যাটফর্মটি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় করেছে, যার বেশির ভাগই এসেছে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে। গত সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জেফ বেজোসের মালিকানাধীন আমাজন এক্সে বিজ্ঞাপন ব্যয় বাড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে বড় খবর ছিল পটোম্যাক নদীর ওপর এক সামরিক হেলিকপ্টারের সঙ্গে বেসামরিক যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষে ৬৭ জনের প্রাণহানি। এই ঘটনার কারণে আড়ালে চলে রাজধানীতে মাস্কের প্রভাব বিস্তারের তৎপরতা। মার্কিন ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) এই দুর্ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু সরকারি সংস্থাটি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, সংবাদ সম্মেলন বা তদন্ত–সংক্রান্ত অন্য যেকোনো আপডেট তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হবে। ই–মেইলের মাধ্যমে আর কোনো তথ্য বিতরণ করবে না তারা। কিন্তু দুর্ঘটনা ও ভুক্তভোগীদের খবরের মধ্যে এই খবরটিতে মানুষ সেভাবে নজর দেয়নি। এই বিষয়টি মূলত প্রমাণ করে, মাস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে কতটা প্রভাবশালী হয়ে উঠছেন!
দ্য আটলান্টিক থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বাজেট পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। ২০২৫ সালের এই বাজেটে দিসানায়েকের সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে চলা এবং দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করেছে।
৪ ঘণ্টা আগেভারতের বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির পরিকল্পনায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন টেক মোগল ইলন মাস্ক। রাজধানী নয়াদিল্লি ও মুম্বাইয়ে শোরুম স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে টেসলা। পাশাপাশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াও জোরদার করছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মাস্কের
১ দিন আগেবাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি এবং উচ্চ বৈদেশিক ঋণের চাপে রয়েছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি এসব দেশের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার সক্ষমতাকে সীমিত করছে।
১ দিন আগেবাংলাদেশের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বেইজিং সফর শুরু করেছেন। এই দলে রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজের সদস্য, শিক্ষাবিদ এবং সাংবাদিকেরা রয়েছেন। এই দলটি গতকাল সোমবার ১০ দিনের সফরে চীন গেছে। প্রতিনিধি দলের এক নেতা বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা চীন সরকার ও ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদ
৪ দিন আগে